কংগ্রেসের সভাপতি পদে আলোচনায় যারা

আন্তর্জাতিক ডেক্স॥ ভারতের সবচেয়ে প্রাচীন দল কংগ্রেসের সভাপতি কে হচ্ছেন তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে দলের পরাজয়ের পর কংগ্রেসের সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী। কিন্তু দল তার সিদ্ধান্তে অমত করে। তবে গতকাল চিঠি লিখে রাহুল জানিয়ে দেন তিনি আর সভাপতি নন। তারপর থেকেই কংগ্রেসের ভাবি নেতার তালিকায় এসেছে কয়েকজনের নাম।kongresh
দলীয় বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, সভাপতি পদে দুজন আছেন সবার উপরে। দুজনই কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা। একজন হলেন মল্লিকার্জুন খড়গে আর অপরজন সুশীল কুমার শিন্ডে। এই দুজনের কেউ সভাপতি নির্বাচিত হলে তৃতীয়বারের মতো নেহেরু-গান্ধী পরিবারের বাইরের কেউ দলের প্রধান হবেন।
নেহেরু-গান্ধী পরিবারের বাইরে এর আগে কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন মাত্র দুজন। তারা হলেন কংগ্রেসের সীতারাম কেশরী এবং নরসিংহ রাও। রাহুল পদত্যাগের সিদ্ধান্তের সঙ্গে এও জানিয়েছেন এবার দলের নেতা নির্বাচন করতে হবে গান্ধী পরিবারের বাইরের কাউকে। বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর নাম সভাপতি পদে আলোচনায় আসায় এমন কথা বলেন তিনি।
এবারের আলোচনা প্রধান দুজনের একজন সুশীল কুমার সিন্ডে ২০০২ সালে কংগ্রেসের সহ সভাপতি পদে লড়েছেন। ছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এ ছাড়া গান্ধী পারিবারের ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত তিনি। মল্লিকার্জুন খাড়গে গত লোকসভায় বিজেপির আক্রমণের মুখে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন বেশ কয়েকবার। তবে কয়েক দশক পর এবার লোকসভা নির্বাচনে হেরেছেন তিনি।
ভারতে এবারের লোকসভা নির্বাচনে দলের পরাজয়ের দায় নিজের কাঁধে নিয়ে ভোটের ফল প্রকাশের দুদিন পর পদত্যাগপত্র জমা দেন রাহুল গান্ধী। কিন্তু দলীয় নেতারা সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও পদত্যাগে অনড় থাকেন তিনি। অবশেষে গত বুধবার পদত্যাগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসে।
গত বুধবার এক টুইট বার্তায় পদত্যাগের কারণ হিসেবে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘কংগ্রেসের মতো একটি দলের দায়িত্ব পালন করতে পারাটা আমার জন্য অনেক সম্মান ও গর্বের। এই দলের আদর্শ ও মূল্যবোধ দেশ রক্ষার কাজে শক্তি জোগায়। এবারের নির্বাচনে দলের সর্বোচ্চ পদে ছিলাম আমি, তাই পরাজয়ের দায় আমি এড়াতে পারিনা। তাই সরে দাঁড়ালাম।’
রাহুল আরও বলেন, ‘বিজেপির প্রতি আমার কোন ক্ষোভ নেই। তবে আমার শরীরের প্রতিটি সেল তাদের মতাদর্শের বিরোধিতা করে। ক্ষমতার জন্য আমি রাজনীতি করি না। আমি কংগ্রেসের একজন যোদ্ধা এবং ভারতের সন্তান। আমার শেষ নিঃশ্বাস থাকা পর্যন্ত আমি তার জন্য লড়ে যাবো।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে মাত্র ৫২টি আসনে জয় পায় কংগ্রেস। অন্যদিকে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ভারতের ক্ষমতায় আসে নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ। লোকসভার ৫৪৩ আসনের ৩০৩টি এবার বিজেপির দখলে।
কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতাদের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে দলটির নতুন নেতা নির্বাচন করা হবে। প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে রাহুল গান্ধী কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.