গুজব এবং বাস্তবতা দুটিই বড় নির্মম। এই দুইয়ের চাপে পিষ্ট এখন মানব জীবন। এই দুইকে সমন্বয় করে যারা কাজ করছে বা করাচ্ছে তারা হয়তবা এর স্বীকারে পরিণত হতে আর দেরী নেই। কারণ ঐ নির্মম ও নির্দয় শব্দ দুটির কবলে কেউ আজ অব্দি অপন হতে পারে নি এবং ভবিষ্যতেও পারবে বলে ইতিহাসের স্বাক্ষী থেকে বলা যায় না; বরং এদের নির্মমতা ও নির্দয়তা ঘ্রাস করে ধংসের শেষপ্রান্তে পৌঁছাই হবে একমাত্র কাম্য। আমাদের সমাজে এবং দেশে এখন এই গুজব বেশী বেশী প্রচলিত এবং প্রকাশিত রূপ লাভ করেছে। যদিও বিষয়টি ছোট এবং হাস্যকর ও জ্ঞান ব্যবহার করলে কিছুই না তারপরও এর প্রকোপ এখন বিকট ও ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে আমাদের অহংকার ও গর্বের ধন পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে বিশেষ মহল এই গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে এক নড়কের ভিবিষীকাময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছেন। হয়ত ঐ নড়কের ভিভিষিকাময় পরিস্থিতির মাধ্যমেই তারা লাভবান হতে চয়া। তাদের সুখ ও শান্তির প্রয়োজন নেই বরং নড়ক যন্ত্রণা এবং ভিবিষিকাময় পরিস্থিতিই মৃত্যু যন্ত্রনা থেকে মুক্তি মিলবে বলে তারা মনে করেন। যেহেতু তারা মৃতপ্রায় এবং মুত্যুই তাদের একমাত্র অবলম্বল আর ঐ মৃত্যু যন্ত্রণা কমানোর তাড়নায় তারা কি না করে যাচ্ছে যা এখন দৃশ্যমান।
ঐ ভ’য়া খবরে আমাদের সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরণের আতংক বিরাজ করছে বা কিছু কিছু মানুষ ঐ আতংকে জয় করার জন্য নিরিহ মানুষের উপর প্রতিশোধ নিয়ে বিরত্ব প্রকাশ করে প্রতিহতের নিজস্ব ব্যবস্থা চালূ করছে। কিন্তু এই নিজস্ব ব্যবস্থা চালুতে যে, নিজেরা অন্যায়ে জড়িয়ে পড়েছেন এবং বাছ বিচার না করে অন্যায়কারী নয় বরং নিরীহ মানুষকেই জীবনে মেরে ফেলেছেন তা ভেবে দেখার বা চিন্তা করার অবকাশটুকু শেষ করে দিয়েছে ঐ মৃতপ্রায় মানুষগুলো। যারা গুজব রটিয়ে আত্কং সৃষ্টি করেছে তারা কিন্তু এখন নিরাপদে রয়েছে আর সাধারণ নিরীহ জনগণকে ঐ গুজবের বলিতে পরিণত করে যাচ্ছে। আমরা এখন বিভিন্নভাবে সাবধানতা অবলম্বল করে এগিয়ে যাচ্ছি এবং যাব। জ্ঞান ও বিচার বুদ্ধি এবং বিবেচনা খাটিয়ে সকল কাজে মনোনিবেশ করব; চিলে কান নিয়েছে শুনে কানে হাত না দিয়ে চিলের পিছনে আর ছুটব না। আমাদের আশা ও আকাঙ্খাকে জলাঞ্জলি না দিয়ে বরং এর বিশালত্ব ও বিকাশ লাভের শেষ পর্যন্ত এগিয়ে যাব এই প্রত্যয়ে প্রত্যেকে প্রত্যেকের তরে কাজ করব। ঘটনা প্রত্যক্ষ করার চেয়ে মোকাবেলা করে ঘটনার মূলে গিয়ে কাজ করা জরুরী। ঘটনার স্বীকারে পরিণত হওয়াদের একেবারে মেরে না ফেলে বা আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে বরং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার স্মরণাপন্ন হয়ে ফয়সালা করাই শ্রেয়। অথবা সমাজের মুরুব্বী শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে বসে সমস্যার সমাধান করা আরো ফলপ্রসু। আশা করি এই কাজে সকলেরই শুভবুদ্ধির উদয় হবে। কান কথা, গুজব এবং মিথ্যার বাহাদুরী ছিল এবং আছে ও থাকবে। কিন্তু সত্যের চিরঞ্জীব শান্তি ও প্রকাশিত হওয়ার ধর্ম অব্যাহত থাকবে। তাকে কেউ লোকিয়ে রাখতে পারবে না বরং প্রজ্জ্বলিত হবেই হবে।
এক বিষয় স্পষ্ট যে, সত্য বললেও বিপদ আসন্ন হয় এবং মিথ্যা বললে বিপদ কম হয় কিন্তু যারা মিথ্যা বলেছে তাদের বিপদ হয়ইনা বলে দৃশ্যমান কিন্তু মিথ্যার স্বীকারে যে পরিণত হয়ে বা না বলেও যে ঐ বলা মিথ্যার স্বীকারে পড়েছে তার বিপদ ঘনীভ’ত হয় সমাজের সকল স্তর থেকে। এই কারণে মানুষ এখন সত্য বলতে ভয় পায় এবং মিথ্যা স্বীকার থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরে ফিরে। কিন্তু কেউ ঐ সহজ সরল মানুষগুলিকে কোন প্রকার ক্ষমা বা রক্ষা করার প্রয়োজন অনুভব করে না বরং আরো কঠোর মনোভাবে ঝাপিয়ে পড়ে বিপদের কাঠগঢ়ায় দ্বার করানোর জন্য। আমাদের সমাজের এই চিত্র পাল্টাতে হবে এবং স্বাধীনতা প্রকাশের মাত্রাবৃদ্ধিতে কাজ করতে হবে। মুখ বন্ধ করে রাখলে সম্মুখে আরো বিপদের আশংকা বৃদ্ধি পাবে। প্রিয়া সাহা মিথ্যার গুজব ছড়িয়ে বাংলাদেশকে উত্তেজিত করেছে এবং বিশ্বসম্প্রদায় ঐ উত্তেজনার তাপদাহ উপলব্ধি করে যাচ্ছে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো চক্রান্ত করে বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে অন্ধকারের ভ’তুরে উদ্দেশ্য হাছিলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে সরকারের কিছু কিছু দুর্বলতা প্রকাশিত হয়েছে তাদের কঠোর মনোভাবের উপর এবং আইনি মোকাবেলার জবাবদীহিতায় অস্বচ্ছতা এবং অতিকথনের কারনে। আমি মনে করি অতিকথন বন্ধ করা আশু প্রয়োজন। অতিকথনও একসময় গুজবে পরিণত হতে পারে। কারণ ঘাপটি মেরে বসে থাকা মানুষগুলো কিন্তু সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে এবং সুযোগ পেলেই তারা শতভাগ কাজে লাগাতে চেষ্টা করবে। বিভিন্ন অতিকথনে এবং গুজবে অনেক সত্য আড়াল হয়ে যাচ্ছে এমনকি চাপা পড়ে যাচ্ছে দলীয় সমৃদ্ধির দোয়ার। দলীয় সমর্থক এবং কর্মীরা যারা দলীয় ক্ষমতাধরদের মামলায় আক্রান্ত তাদের মুক্ত করে দিন এবং দলীয় সমৃদ্ধি সুসংগঠিত করুন। দলের প্রয়োজনে এবং ন্যায্যতা ও ক্ষমতার স্থায়ীত্বের প্রয়োজনে সরকার এবং সরকারের ক্ষমতাধর অতি উন্নত অসাধারন মানুগুলি ক্ষমা করে দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের মামলা থেকে রেহাই দিয়ে আগামী দিনের বাংলাদেশ বিনির্মানে পাকাপোক্ত বন্দোবস্ত চিরস্থায়ী করুন। নতুবা দেশ এবং দেশের জনগণের সমুহ বিপদ ঠেকানোর আর কোন অবশিষ্ট হাতিয়ার জমা থাকবে না। তাই এখনই সকলে মিলে দলীয় কর্মী এবং সমর্থকদের রেহাই দিন। দলীয় কল্যাণে দেশের তরে সকলে মিলে অগ্রসর হওয়ার সুযোগ অবারিত রাখুন।
গুজবের পর আরেকটি মরণঘাতি গুজব হলো ডেঙ্গু সংক্রমন। আমি জোর দাবি করি এই ডেঙ্গু প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক নিয়ম ই দায়ী নাকি চক্রান্ত কারীদের কোন নতুন ফন্দি এই ডেঙ্গু প্রবাহ তা খতিয়ে দেখতে হবে। প্রতিদিনই এই প্রবাহে ঘ্যা ভাসিয়ে দিচ্ছে আমাদের সকল শ্রেণী পেশার মানুষগুলি। ডাক্তার, কৃষক, ছাত্র সহ সকল গোত্র ও বর্ণের মানুষরাই আজ ভিতবিহবল এবং অসহায়। কিন্তু এর প্রতিকারে যারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন তা অপ্রতুল বা ফলপ্রসু রূপ লাভ করেনি। তাই মানুষ এখন একটু বিরক্ত এবং হতাশ। আমাদের মেয়রদ্বয় এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় উভয়েই যার যার অবস্থান থেকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে; পাশাপাশি সাধারণ জনগণও ঐ ডেঙ্গু মোকাবেলায় একযোগে কাজ করে যাচ্ছে। আশা করি অচিরেই এর রেশ টেনে ধরা যাবে এবং দ্রুত ডেঙ্গু বিদায়ের চেষ্টা ফলপ্রসু হবে। তবে এই ডেঙ্গুকে নিয়ে বিভিন্নজন বিভিন্ন মতামতা প্রকাশ করেছেন এমনকি অতি কথনও একটি প্রচারণার বিরুপ ফল হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। তবে সত্য স্বিকার করে মেয়রদ্বয় এবং দায়িত্বশীল মানুষগুলো যে বক্তব্য দিয়েছেন তাকে সাধুবাদ জানানো উচিত। ঐ সত্য বক্তব্যকে নিয়ে কোন গুজবাকৃত্রির লিখন বা পরিস্থিতি ঘোলাটে করণের প্রচেষ্টা চালানো বন্ধ করা বাঞ্চনীয়। যে বা যারা এই কাজে লিপ্ত তাদেরকে বলছি আপনারা এই ভয়াভহ মহামারি আকার ধারণের আগে আকার ধরিয়ে দিবেন না। হাইকোর্ট, এবং মন্ত্রনালয় ও সিটি কর্পোরেশন এই তিনের সমন্বয় সাধিত হউক এবং একযোগে তারা কাজ করুক। কিন্তু এর মাঝে ফাটল ধরানোর কাজ থেকে বিরত থাকাই হবে সকলের একমাত্র কাজ। এই তিনের মধ্যে বিবেধ সৃষ্টি হউক বা যোগসূত্রে ফাটল দেখুক তা কাম্য নয়। তাই এই তিনের কথন যেন অতিকথনে পরিণত না হয় এমনকি মিথ্যা গুজবের কোন উপাদানে পরিণত না হয় তার দিকে খেলার রাখতে হবে।
সরকার এবং জনগণ সকলের গুজবে এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে একযোগে কাজ করুক এবং সকল প্রতিবন্ধকতা দূরীভ’ত করে সাফল্যের চূড়াই পৌঁছে যাক। বিভিন্ন দুর্ঘটনার ক্ষয়ক্ষতিও যেন লাঘব হয় তার দিকে দৃষ্টি দিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে নতুবা গুজবের মাত্রা আরো বৃদ্ধি পাবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন যেন শেষ হয় এবং ঐ আন্দোলনে যেন গুজবের ছোবলে উত্তাল না হয় সেদিকে কড়া নজর রাখা আমাদের সকলেরই উচিত। কারন এটা সরকারের একার দায়িত্ব নয় বরং সকলেরই দায়িত্ব তবে সরকার একটু বেশী ভ’মিকা রাখবে এবং জনগণ ঐ ভুমিকায় শরীক থাকতে চাই। এই প্রত্যয়ে একত্রে কার্য়ক্রম চালিয়ে যচ্ছি এবং যাব। আমি বিশ্বাস করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর দিকনির্দেশনা আমাদের সকলের উপরই দিয়েছেন যাতে সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে একযোগে কাজ হয় এবং দেশের কল্যানে আরো মনোনিবেশ করা যায়। আমরা বিশ্বা করি খুব অল্প সময়েই এই সকল সমস্যার অবসান হবে এবং আগামীর জন্য নতুন প্রত্যয়ে নব উদ্যোমে সকল জাগতিকতাকে পরিহার করে আখেরাতের পুজি সঞ্চিত করে শেষের দিকে এগিয়ে যাব। তবে বর্তমান অবস্থাদৃষ্টে মনে হয় আমাদের আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে এই জঞ্জালগুলি দূরীভ’ত হওয়ার জন্য। কিছুটা সময় পর আর এই অবস্থা থাকবে না। সরকারের সর্বোচ্চ মহল এবং সকলকে নিয়ে কাজ করতে প্রস্তুত কিন্তু বিরোধী পক্ষ এখন আসতে চায় সমস্যা সংকুল পরিস্থিতি নিয়ে এবং সেই পরিস্থিতি ঘিতে আগুন ঢালার মত। তবে এই সকল বিষয় মোকাবেলা করতে সরকারকেও ঐ মিথ্যার বিপরীতে যে সত্য লুকায়িত তা প্রকাশ করতে হবে এবং জনতার কাতারে পৌঁছাতে হবে।
বাস্তবতা আজ বিলুপ্ত প্রায় কিন্তু এই বাস্তবতাকে আবার ঘুমথেকে উঠিয়ে সঠিক কাজে মনোনিবেশ করানো আমাদের সকলের প্রতিশ্রুতি এবং চ্যালেঞ্জ। কথা ও কাজের মিল রাখার ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে হবে। কোন কারপন্য করা যাবে না এমনকি ব্যতিক্রমি সকল সফল উদ্যোগেকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আমাদের সকলের প্রচেষ্টাই হউক গুজব এবং বাস্তবতা কে একসঙ্গে কাজ করানো।