চাঁদা না দেয়ায় হত্যা করা হয় হোটেল মালিক জুনায়েতকে

প্রশান্তি ডেক্স॥ শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদাত গ্রুপের সেকেন্ড ইন কমান্ড শুটার সবুজ ওরফে সজীবকে (২২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
রাজধানীর দারুস সালামে শাহজালাল আবাসিক হোটেলের মালিক রফিকুল ইসলাম জুনায়েত (৪০) হত্যা মামলার প্রধান আসামি শুটার সবুজ। গত সোমবার (২৯ জুলাই) রাত ১০টার দিকে যমুনা ফিউচার পার্ক এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পিবিআই।chada na deya hotta
পিবিআই বলছে, জুনায়েতের কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা চেয়েছিল শাহাদাত বাহিনী। কিন্তু সেই টাকা না দেয়ায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয় তাকে।
পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) বিশেষ পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, শাহজালাল নামে আবাসিক একটি হোটেলের মালিক ছিলেন জুনায়েত। ২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি রাত সোয়া ১২টার দিকে হোটেল থেকে বাসায় ফিরছিলেন। কিন্তু রাতে আর বাসায় ফেরা হয়নি তার। পরদিন সকালে অপরিচিত ব্যক্তির মাধ্যম পরিবার জানতে পারে, পাইকপাড়া সরকারি স্টাফ কোয়াটার জামে মসজিদের সামনে জুনায়েতের মরদেহ পড়ে আছে।
ছোট ভাই ডা. সাঈদ হোসেন সোহাগ (৩২) দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন। জুনায়েতের বুকের বাম পাশে গুলির চিহ্ন দেখা যায়। পাশে গুলির খোসাও দেখা যায়। একটি রক্ত মাখা ইউসিবি ব্যাংকের ৩ লাখ ৬ হাজার টাকার চেকের তিন টুকরা অংশ পাওয়া যায়। পুলিশ মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
ছোট ভাই সোহাগ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে দারুস সালাম থানায় একটি হত্যা মামলা করেন (মামলা নং-৬)।
দারুস সালাম থানা পুলিশ কর্তৃক মামলাটি তদন্তকালে হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত আসামি সোহেল ওরফে শুটার সোহেল (৩৫) ও শেখ মৃদুল ওরফে বাবু ওরফে মির্জাকে (৩৪) গ্রেফতার করেন।
এরই মধ্যে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে এবং ঘটনায় জড়িত আব্দুর রহিম ও আনোয়ার হোসেন পলাশকে গ্রেফতারপূর্বক মামলাটি তদন্ত শেষে আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
ডিবি পুলিশ প্রধান দুই আসামিকে গ্রেফতার না করেই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করায় বাদী আদালতে নারাজি আবেদন করেন। আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন। দায়িত্ব পাওয়ার পর পিবিআই ঢাকা মেট্রোর একটি দল গত রাতে মূল আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে শুটার সবুজ পিবিআইকে জানায়, জুনায়েতকে হত্যা করার কয়েক বছর আগে থেকেই শাহাদাত গ্রুপের শুটার সবুজসহ তার সহযোগী সোহেল, শেখ মৃদুল ওরফে বাবু ওরফে মির্জা, আব্দুর রহিম ও আনোয়ার হোসেন পলাশ হোটেল থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করে আসছিল।
শাহাদাত গ্রুপের রফিকুল ইসলাম জুনায়েতের কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে ইন্ডিয়ান মোবাইলফোন নম্বর দিয়ে আসে। চাঁদা দেয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় জুনায়েতের মোবাইলফোনে বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দেয়া হয়। চাঁদার টাকা না পাওয়ায় জুনায়েতের ওপর ক্ষুব্ধ হয় শাহাদাত বাহিনী। সে কারণেই পরিকল্পিতভাবে জুনায়েতকে হত্যা করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.