আর কাদিব না…

Vector-Smart-Object-1-300x127[1]আগষ্ট মাস শোকের মাস এবং অনুশোচনার মাস। বাঙ্গালী জাতি সেদিন কিছুই করতে পারেনি এবং করার জন্য কোনপ্রকার সাহসও দেখায়নি। তবে ঘরে বসে বা বিভিন্ন স্থানে লোকায়িত থেকে বিভিন্ন কিছু করার চেষ্টা চালিয়েছেন। কেউ কেউ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষাভাবে নির্যাতনের স্বিকার হয়েছেন। কিন্তু যারা এখন ক্ষমতার স্বাধ আস্বাধন করেছেন (প্রধানমন্ত্রীর পরিবার ব্যতিত) তারা কিন্তু সেদিন এবং তৎপরবর্তী সময়ে কোন পদক্ষেপ নেননি এমনকি নেতিবাচক কোন মনোভাবও প্রকাশ করেননি। কিন্তু সেই মানুষগুলিই আজ বড় বড় কথা বলে এবং ইতিহাসের পাতায় নাম লিখায় বা লিখাতে চেষ্টা করে। যাই হোক বাংলার সাধারণ মানুষ এমনকি অতি সাধারণ মানুষজন কিন্তু থেমে থাকেনি; সেই ১৫ই আগষ্টের শোককে শক্তিতে পরিণত করেছে এবং বাংলার ভাগ্যাকাশে নতুন স্বপ্ন দেখার এবং স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার আকাঙ্খাকে জাগিয়ে রেখেছে। নিরবে কেদেছে এবং নিভৃত্তে শোক সহ্য করেছে আর আশায় বসে আছে কিভাবে আগামীর সম্ভাবনাকে জাগিয়ে রাখা যায় এবং বঙ্গবন্ধুর পরিবারের মাধ্যমে এই বাংলাকে স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করা যায়।
মানুষ চোখের জলে ফরিয়াদ করেছে ঐ নরপশুদের শাস্তি এমনকি বিচারের রায় কার্যকরের আশায়। আজ সেই সব পূর্ণ হয়েছে এবং আজো যারা ধরাছোয়ার বাইরে রয়েছে তাদেরকে দেশে এনে বিচার সম্পন্ন করার তাগিদ জিয়ে রেখেছে। এখন আমরা আমাদের সকল আশা আকাঙ্খা পূরণের স্বপ্নে বিভোর। শোকে বিহবল হওয়ার দিন শেষ; এখন স্বপ্ন পূরণের সময় এবং বঙ্গবন্ধুর দেখানো ও শিখানো পথে এগিয়ে যাওয়ার সময়। কান্নার দিন শেষ এবং শুকরিয়া এবং সৃষ্টিকর্তার কাছে মোনাজাতের সময় এখন। পিতার নির্দেশিত পথে এগিয়ে যেতে কন্যার পিছনে শরীক হওয়ার সময় এখন। সেই আগষ্টের শোকই আজ শক্তিতে পরিণত হয়েছে এনং আজকের দিনে বাংলাদেশকে উন্নততর পর্যায়ে পৌঁছার দিশা দেখিয়েছে। আগষ্ট আমাদেরকে চেতনা দেয়, শক্তি যোগায়, শত্রু চিনার দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে, পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে, আগামীর ভাবনা বাস্তবায়নার্থে উদ্ধিপনা এবং গতি সঞ্চার করে। আগামীর ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় গতি সঞ্চারিত হয় এবং নতুন নতুন উদ্ভাবনীর যুগৎপদ চর্চা সাধিত হয় এমনকি সেই চর্চার ধারাবাহিকতা এগিয়ে যায়। আগষ্টকে নিয়ে নানান ভাবনা এবং নানান কথা চলিত এবং চালিত হচ্ছে কিন্তু সেই ধারাবাহিকতায় আর নয়। এখন সময় এসেছে নতুন করে আগষ্টকে নিয়ে ভাবার এবং সেই ফিরে পাওয়া মনোবলকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যাওয়ার।
একটি কথা না বললেই নয় যে, এই আগষ্ট কিন্তু বন্ধু এবং শত্রু এই দুইয়ের পার্থক্য স্পষ্ট করে। ৭৫ পরবর্তী সময়ের স্বাক্ষী হলো ইতিহাস। আর এই ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়েই আজ সব হারিয়ে বাংলাদেশকে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে মুজিবীয় দাপটে তাঁরই কণ্যা শেখ হাসিনা। তিনি কিন্তু যোগ্য পিতার যোগ্য কণ্যা হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত এবং শুধু তাই নয় বরং পিতাকেও ছাড়িয়ে আজ বিশ্ব নেতৃত্বের শীর্ষে। সেইদিন বাঙ্গালী যা করতে পারেনি তা করে দেখিয়েছে বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা। তিনি বুকে সাহস নিয়ে শত বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে ফিরে এসেছেন এবং দেশ রক্ষায় স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের এমনকি স্বপ্নের সোনার বাংলার বাস্তব রূপ দৃশ্যমান রাখতে ও দেখতে দায়িত্ব নিয়েছেন। আর করেছেনও তাই; শুধু স্বপ্নের সোনার বাংলাই নয় বরং তারও একধাপ উপরে এখন এই ডিজিটাল বাংলাদেশ। এই ধারাবাহিকতাকে রক্ষায় এগিয়ে যেতে হবে কেদে নয় বরং আনন্দাশ্রু বিসর্জনের মাধ্যমে। একটি কথা বলা যায় কান্নার যদিও কোন রং নেই তাই বোঝা যায় না কোনটা সুখের আর কোনটা দু:খের কান্না। তবে কান্না অনেক সময় বিপদও ডেকে আনে। তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত ছিল খুনী মোস্তাক; এই বেঈমান মোস্তাক কিন্তু বঙ্গবন্ধুর পিতৃবিয়োগে বঙ্গবন্ধুর চেয়েও বেশী কান্না করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর প্রিয় হওয়ার আশায় করেননি এমন কাজ তিনি বাকি রাখেননি। সর্বশেষ তিনি যা করেছিলেন তা হলো বঙ্গবন্ধুর খুনের মিশন সফলভাবে সম্পন্ন করে জাতির সামনে বেঈমানের নতুন এক মাপকাঠি দাঁড় করিয়েছেন যা আজও অম্লান এবং আগামীর শত্রু মোকাবেলায় একটি শিক্ষনীয় উদাহরণও বটে। তাই নব্য মোস্তাকদের কবল এবং ছোবল থেকে রক্ষাই এখন মুখ্য বিষয়। তাই আর কান্না নয় বরং কান্নার পরিবেশ রহিতকরণে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যাওয়া হওক আমাদের আগামীর প্রত্যয়। আমরা মেস্তাক উত্তরসূরী হতে চায় না বরং শেখ হাসিনার উত্তরসূরী হিসেবে বঙ্গবন্ধুর সম্পদ হতে চাই।
এই সময়ে যেন আর কোন কান্নার বোঝা এই জাতির কাঁধে না আসে সেইজন আমরা এই দেশকে ভালবেসে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করে এগিয়ে যাব। শোকের মাস আগষ্টে আসছে ঈদ এবং ডেঙ্গু ও গুজবে ভরপুর এই মৌসুমে সজাগ ও সতেজ থাকার লক্ষে এগিয়ে যেতে হবে শেখ হাসিনার দেখানো ও শেখানো পথে এমনকি তার আদর্শকে সামনে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে তাঁরই দেয়া সাহসে এবং অশ্রয়ে – প্রশ্রয়ে। কোনরকম ব্যতিক্রম ঘটানো চলবে না এমনকি অনৈতিকতাকে প্রশ্রয় দেয়া যাবে না। যারা দায়িত্বে অবহেলা করেন এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করেন তাদের লাগাম টেনে ধরার জন্য নিজেরা শুদ্ধ জীবন যাপন এবং অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে দৃঢ় ও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে হবে। কোন কিছুর কাছে মাথা নত করা যাবে না। বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনা একসূত্রেই গাঁথা জীবন; তাঁরা দুজনেই অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়নি এবং কোন অন্যায়ের কাছে মাথা নত করেনি। তাই তাদের আদর্শকে আঁকড়ে ধরে এগিয়ে যেতে হবে আমাদের। এই আগষ্টই হউক আমাদের শপথ নেয়ার; স্বীয় শপথে বলিয়ান থেকে সামনে এগিয়ে যাওয়ার। আজ সময় এসেছে কথা বলার, নির্ভয়ে পথ চলার, মৌলিক অধিকার ভোগ করার। তাই আমরা সকলেই এগিয়ে যাবো বঙ্গবন্ধুর দেখানো এবং শেখ হাসিনার শেখানো পথে। এই হউক আমাদের দিপ্ত অঙ্গিকার এবং আগামীর এগিয়ে যাওয়ার পাথেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.