কিছু মানুষ দুর্নীতি করে পালিয়ে থাকে : গুম প্রসঙ্গে মন্ত্রী

প্রশান্তি ডেক্স। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আগের বক্তব্যের রেশ ধরে দেশে গুজব ছড়ানোর সূত্র বোঝা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।keso manos dornete kore paleya thake
গত মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে আইনশৃঙ্খলা, রোহিঙ্গা এবং আগামী ঈদে যাতে মানুষ নিরাপত্তার সঙ্গে যাতায়াত করতে পারে, সেসব বিষয় নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। গুজব ও ডেঙ্গুর বিষয়ে কীভাবে তৎপরতা আরও বৃদ্ধি করা যায়, সেটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। গুজবের ব্যাপারে আমরা জাতির সচেতনতা কামনা করছি।’
গুজবের বিষয়ে পুলিশ কী বলেছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চেষ্টা করছে। গুজব একজন উঠিয়ে দেয়। কে করে, এটা তো আগে থেকে জানা থাকে না। আমরা মোকাবিলা করে যাচ্ছি, আরও ভালোভাবে করব।’
বলা হচ্ছে, লন্ডন থেকে গুজব সৃষ্টি হয়ে দেশে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে- এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলতেন নৌকায় ভোট দিলে মসজিদে আজান হবে না, উলুধ্বনি হবে, এগুলো আপনারা জানেন, রেকর্ডেড। নৌকায় ভোট দিলে এ দেশ ভারত হয়ে যাবে। তিনি এ কথাও বলেছেন যে, পদ্মা সেতু দিয়ে মানুষ হেঁটে গেলে এটা ভেঙে পড়বে। তিনি সেদিন বিএনপি নেতাদের পরামর্শ দিয়েছিলেন এ সেতু দিয়ে চলাচল না করার জন্য।’
‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী যখন এ কথা বলতেন, তাদের দ্বারাই সম্ভব এ ধরনের মিথ্যাচার করা, গুজব সৃষ্টি করা। সূত্র তো বোঝাই যায়। এগুলোর দিকে তাকালে বুঝা যায়, তাদের পক্ষে এসব গুজব সৃষ্টি সম্ভব।’
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেমন- এ বিষয়ে মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি বলেন,‘ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ইনশাআল্লাহ ভালো, তবে ক্রাইসিস যেটা আছে, তা হলো ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবটা অনেক বেশি, মাত্রাতিরিক্ত। সেটার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি, যাতে এটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।’
গুমের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে কি না- এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘মানুষ নিখোঁজ হয়ে যাচ্ছে, আবার কিছুদিন পর পাওয়াও যাচ্ছে। কিছু মানুষ দুর্নীতি করে পালিয়ে থাকে, অনেক সময় পারিবারিক ও সামাজিক চাপে উধাও হয়ে থাকে। আবার অনেকে মস্তিষ্ক বিবৃতির কারণেও উধাও হয়। এমন নানা করণে অনেক সময় মানুষ উধাও হচ্ছে।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে, সেসব বিষয়ে আপনারা আলোচনা করেছেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেগুলোর ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যাতে কোনোরকম হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত না হয়। আর যদি সুনির্দিষ্ট প্রমাণ থাকে, ইতোমধ্যে আপনারা দেখেছেন, পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। কাজেই কেউ যদি করে থাকে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইন আছে, আদালত আছে। আমরা পরামর্শ দেব, তার দারস্থ হওয়ার জন্য।’
এর আগের সভায় জানিয়েছিলেন অনেক এনজিও খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করছে। এদের চিহ্নিত করার জন্য গোয়েন্দা সংস্থাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন ওই সময়- এ বিষয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, ‘রিপোর্ট আমরা পেয়েছি, তবে সেটা পূর্ণাঙ্গ নয়। সেজন্য পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দেয়ার জন্য আজকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’
সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীসহ কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.