প্রশান্তি ছাত্রী হোষ্টেলের উদ্দেশ্য :
প্রশান্তি ছাত্রী হোষ্টেলটি সম্পূর্ণ অলাভজনক ও অরাজনৈতিক একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। এখানে ভদ্র পরিবারের সন্তানদের মনোরম ও উত্তম পড়ার উপযোগী পরিবেশে রুটিনমাফিক পরিচ্ছন্ন জীবনের; উন্নত খাবার এর সু ব্যবস্থাসহ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা পরিবেষ্টিত একটি ঘরোয়া পারিবারিক পরিমন্ডলে বিদেশী আসবাবপত্রে সুসজ্জিত আবাসস্থল। এই হোষ্টেল প্রতিষ্ঠা এবং পরিচালনার মূল কারণ হলো ঘীঞ্জি পরিবেশ মুক্ত ও ভাল খাবার এর নিশ্চয়তা সম্বলিত নিয়মতান্ত্রিক জীবনের প্রতিনিয়ত চর্চার প্রয়োজনে: যেন ভবিষ্যতে ইতিবাচক সংসার গঠনে ভুমিকা রাখতে পারে এমনকি কর্মক্ষেত্রে সুশৃঙ্খল ও নিয়মতান্ত্রিক জীবনের ও উন্নত পরিবেশের নিশ্চয়তা নির্ভর পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে পারে সেই লক্ষ্যে। ঢাকা শহরের বিভিন্ন হোষ্টেল থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতা এবং হোষ্টেল জীবনের দু:খ দুর্দশা ও প্রয়োজন মাফিক রুচিসম্মত খাবার বঞ্চিত এমনকি পড়ালেখার উপযুক্ত পরিবেশ বঞ্চিত হওয়ার যন্ত্রনা থেকেই এই হোষ্টেল পরিচালনায় আগ্রহী হয়ে বাস্তব রূপ দেয়া হয়।
আমার বিশ্বাস এই প্রশান্তি হোষ্টেলের মাধ্যমে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে আগামী দিনে অন্য হোষ্টেলেও এর ইতিবাচক মূল্যবোধগুলি প্রয়োগ করে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনয়ন করা সম্ভব। সকলেই ব্যবসা করবে কিন্তু নূন্যতম মৌলিক চাহিদাগুলি পূরন করেই ব্যবসা করতে হবে নতুবা নতুন করে আরো অনেক আধুনিক ও যুগোপযোগী হোষ্টেল প্রতিষ্ঠীত হবে। আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা হলো পরিবর্তনের অঙ্গিকার নিয়ে আগামীর তরে একটি দৃষ্টান্ত নির্ভর বাস্তব ভিত্তি।
আশা করি আমার ক্ষুদ্র প্রচেষ্টার অংশীদার হবেন আপনারা সকলে। যারা এই প্রশান্তি ছাত্রী হোষ্টেলে বসবাস করবেন তাদেরকে অবশ্যই কর্তৃপক্ষের দেয়া নিয়মকানুনগুলি ১০০ভাগ মনোযোগ ও আন্তরিকতার সহিত বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি আপনাদের জন্যই এই নতুন প্রশান্তি নামক ঠিকানা। এই প্রশান্তিতে থাকবে শুধু শান্তি, শৃঙ্খলা, নিয়মানুবর্তিতা, আন্তরিকতা এবং পারিবারিক পরিবেশ। হিংসা, বিদ্দেশ, ঝগড়া এবং স্বার্থপরতা মুক্ত পরিবেশে জীবন যাপনই হবে এই হোষ্টেলের মূলমন্ত্র। সকলে মিলে একটি পরিবার আর পরিবারের নাম হবে প্রশান্তি। এই প্রশান্তি ছড়িয়ে যাবে নিজের জীবন থেকে অন্যের জীবনে।
এই হোষ্টেলের মূলমন্ত্র হবে “যা সত্য যা উপযুক্ত যা সৎ যা খাঁটি যা সুন্দর যা সম্মান পাবার যোগ্য, মোট কথা যা ভাল এবং প্রশংসার যোগ্য সেই দিকে তোমরা মন দাও।”
হোষ্টেলটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন: মিসেস ইসরাত জাহান লাকী। প্রয়োজনে একজন হোষ্টেল সুপার এবং একজন ম্যানেজার নিয়োগ দিয়ে এর যাবতীয় কাজ তদারকি করা হবে। তবে পরিচালক হিসেবে মিসেস ইসরাত জাহান লাকী এই প্রশান্তি হোষ্টেলের যাবতীয় দায়ীত্বে প্রধান হিসেবে ভূমিকা পালন করবে। প্রয়োজনে কোন নিয়ম এর সংযোযন ও বিয়োজন করার ক্ষমতা সম্পূর্ণরূপে পরিচালকের হাতে সংরক্ষিত থাকবে।
বিস্তারিত নিয়ম-কানুন জেনে এবং মেনে চলার অঙ্গিকার এমনকি ভর্তি ফরম পুরন করে জমা দেয়ার ভিত্তিতে প্রশান্তি (ছাত্রি) মহিলা হোষ্টেলের সদস্য হিসেবে গণ্য করা হবে। প্রত্যেককে একটি আইডি কার্ড দেয়া হবে যাতে করে এই হোষ্টেলের বাসিন্দা হিসেবে চিহ্নিত করতে কারো অসুবিধা না হয়া।
কোন কারণে হোষ্টেলের নিয়ম শৃঙ্খলা ভঙ্গ বা লংগন করলে তাৎক্ষণিকভাবে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তারপরও যদি একই রকম সমস্যা সৃষ্টি হয় তাহলে ঐ সদস্যকে বিনা জামানতে হোষ্টেল থেকে বের করে দেয়া হবে। হোষ্টেল সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য কতিপয় নিয়ম পরবর্তী পৃষ্টায় ক্রমিকাকারে দেয়া হলো। যা প্রত্যেকেই পালন করতে হবে। এই নিয়মের বাইরে কাউকে গ্রহণ করা হবে না।
হোষ্টেল সুপারের দৃষ্টিতে যদি কেউ পর পর তিনবার একই ভুল করে তাহলে তাকে ঐ ভুলের জন্য জরিমানার বিধান রাখা হবে। যা পরিচালক তাঁর স্বীয় ক্ষমতাবলে কার্যকর করবেন।
পরিচালক
ইসরাত জাহান লাকী।
https://www.facebook.com/shaptahik.proshanti.75/videos/491441341685526/
নিয়মাবলী:
১। প্রত্যেক সদস্যকে প্রশান্তি ছাত্রী হোষ্টেলের নিজস্ব ফরমে ভর্তি হতে হবে।
২। ভর্তি হওয়ার সময় এক কপি ছবি এবং ভোটার আইডি ও যে প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত সেই প্রতিষ্ঠানের আইডি কার্ড ভর্তি ফরমের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
৩। ভর্তি হওয়ার সময় এক মাসের জামানত অগ্রীম জমা রাখতে হবে। চলতি মাসের হোষ্টেল ফি ১ থেকে ৫ তারিখের মধ্যে জমা দিতে হবে।
৪। হোষ্টেলে বসবাসরত প্রত্যেকের সঙ্গে প্রত্যেকে মিলেমিশে চলতে হবে। কোন রকম বিভাদে জড়ানো যাবে না।
৫। হোষ্টেলের বারান্দা এবং বাথরুম ও কমন স্পেস ব্যবহার সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে বা কেউ এতে বাধা প্রদান করিতে পারিবে না।
৬। বিনা প্রয়োজনে ইলেট্টিক লাইট, ফ্যান, গ্যাস ও পানি অপচয় করা যাবে না।
৭। আইরন, হেয়ার ষ্ট্রিট বা বিদ্যুৎ বিল বেশী আসবে এমন সামগ্রী ব্যবহার করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
৮। সকাল ৬টা থেকে রাত্র ৯.৩০ পর্যন্ত প্রবেশাধিকার উন্মুক্ত থাকবে। ৯.৩০ এর পর কাউকে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া গ্রহন করা হবে না। এর জন্য পরিচালকের অনুমতি প্রয়োজন হবে।
৯। প্রত্যেকে প্রত্যেকের সিটে অবস্থান করতে হবে এবং পড়ার টেবিলে পড়তে হবে। বিছানাপত্র ঘুছিয়ে পরিপটি রাখতে হবে।
১০। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অবশ্যই স্ব স্ব রুমের বাসিন্দাদের জন্য বাধ্যতামূলক। আসবাব পত্রের সৌন্দয্য রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
১১। বাথরুমের কমডে এমনকি পানির লাইনে, স্যানিটারী প্যাড, কাপর, চুল, চুড়ি এমনকি শক্ত কোন বস্তু ফেলা যাবে না। প্রত্যেকে নির্দ্দিষ্ট করে পলিথিনে মুড়িয়ে ময়লার ঝুড়িতে রাখতে হবে। এর ব্যাত্যয় ঘটলে জরিমানাসহ ক্ষতিপূরন বহন করতে হবে।
১২। গ্রুপিং ও লবিং এবং রাজনীতি এই হোষ্টেলে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। সকলে মিলেমিশে একটি পরিবার হয়ে বসবাসের নিমিত্তেই এই প্রশান্তি ছাত্রী হোষ্টেলের প্রয়াস।
১৩। অনুমতি ছাড়া কারো ব্যবহারের জিনিস ধরা ও ছোয়া এমনকি ব্যবহার করা যাবে না।
১৪। শালিনতা বজায় রেখে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে রুমে ও রুমের বাইরে চলতে হবে।
১৫। বিশেষ প্রয়োজনে এমনকি অসুস্থতা জনিত কারণে পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
১৬। কোন গার্ডিয়ান’র হোষ্টেলে অবস্থান কোন ক্রমেই গ্রহণযোগ্য না। যদি কারো গার্ডিয়ান দেখা করতে আসে তাহলে পরিচালকের ড্রয়ীং রুমে সাক্ষাৎ করতে পারবে। কোন ভাবেই হোষ্টেলে নেয়া যাবে না। তবে মায়ের ক্ষেত্রে হোষ্টেলে যাওয়ার অনুমতি আছে তবে মা অথবা আত্মিয়স্বজন হোষ্টেলে অবস্থানের অনুমতি নেই। বান্ধবীদেরও হোষ্টেলে থাকা অথবা দীর্ঘক্ষণ আড্ডা দেয়ার অনুমতি নেই।
১৭। হোষ্টেলে ভর্তি হওয়ার তিনমাসের মধ্যে কেউ চলে গেলে সে তার অগ্রীম জমা রাখা টাকা ফেরত পাবে না। তিনমাস পর চলে যাওয়ার সুনিদ্দিষ্ট কারণ দর্শীয়ে অগ্রীম দুই মাসের নোটিশ দিয়ে যেতে হবে এবং সেই ক্ষেত্রে অগ্রিম জামানত ফেরত পাবে। চলে যাওয়ার পূর্বে হোষ্টেলের দায়-দেনা পরিশোধ করে হোষ্টেলের চাবি এবং যাবতীয় কিছু বুঝিয়ে দিতে হবে।
১৮। ইন্টারনেট ব্যবহারেও সবাইকে সচেতন থাকতে হবে, কোনরকম অপব্যবহারের অভিযোগ আসলে কর্তৃপক্ষ তার সিট বাতিল করতে বাধ্য থাকিবে।
১৯। একসঙ্গে একই মাসে দুই জনের বেশী হোষ্টেল ত্যাগ করিতে পারিবে না।
২০। হোষ্টেলের সুপারভাইজার কাম কুক এর সঙ্গে সৌহাদ্য এবং শ্রদ্ধার সহিত আচরন করতে হবে।
২১। প্রয়োজনে নতুন কোন আইন সংযোজন ও বিয়োজনের সর্বময় ক্ষমতা কর্তৃপক্ষ সংরক্ষণ করেন।
পরিচালক
ইসরাত জাহান লাকী।