মাঝারি গরুর ক্রেতা বেশি, দামও চড়া

জয়দুল হাসান॥ এক দিন পরই পবিত্র ঈদুল আজহা। তাই কোরবানির পশুর হাট এখন জমজমাট। গত বুধবার বিকেলে বগুড়ার মহাস্থান হাটে। হাটবাজারে মাঝারি গরুর ক্রেতা বেশি, দামও চড়া। আর বড় গরুর ক্রেতা কম, দামেও সস্তা। কয়েক দিন ধরে এ চিত্র বগুড়ার সুলতানগঞ্জ, মহাস্থানগড়, সাবগ্রাম, বড়িগঞ্জ ও ঘোড়াধাপ হাটে।  সসুলতানগঞ্জ হাটে গতকাল শুক্রবার রেকর্ডসংখ্যক পশুর আমদানি হয়। High price cowশেষ মুহূর্তে পশু কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন ক্রেতারা। বেশির ভাগ ক্রেতার লক্ষ্য ছিল ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকার মধ্যে মাঝারি আকারের গরু। তবে এই আকারের গরুর দাম ছিল তুলনামূলক বেশি। ফলে যাঁরা ৬০ হাজার টাকার মধ্যে কোরবানির গরু কিনবেন আশা করে হাটে গিয়েছিলেন, তাঁদের পছন্দের গরু কিনতে অতিরিক্ত ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বেশি দাম গুনতে হয়েছে। সুলতানগঞ্জ হাটে গতকাল আনুমানিক ৪ মণ ওজনের একটি গরু পছন্দ করেছিলেন বগুড়া শহরের কলোনি এলাকার সুলতান মাহমুদ। বিক্রেতা শাজাহানপুরের সুজাবাদ গ্রামের মছির উদ্দিন বাড়িতে পোষা ওই গরুটির দাম চান ১ লাখ টাকা। দর-কষাকষির পর গরুটি ৮৬ হাজার টাকায় বিক্রি করতে রাজি হন বিক্রেতা মছির। গরুটি কেনার পর সুলতান বলেন, গত বছর কোরবানির হাটে ৪ মণ ওজনের গরু মিলেছে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকায়। অথচ এবার একই আকারের গরুতে ২৬ হাজার টাকা বেশি গুনতে হলো। হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাঝারি গরুর ক্রেতা বেশি। তাই দামও বেশি। সেই তুলনায় দাম কম বড় গরুর। গতকাল বেলা পড়তে না পড়তেই সুলতানগঞ্জ হাটে কোরবানির পশুর ঢল নামে। ২ থেকে ১২ মণ ওজনের গরুর প্রচুর আমদানি ছিল হাটে। তবে শেষ মুহূর্তে মাঝারি গরুর কেনাবেচা হয় জমজমাট। তবে বড় গরুর তেমন ক্রেতা ছিল না। এতে বিপাকে পড়েন খামারিরা। কোরবানির গরু কিনতে সুলতানগঞ্জ হাটে এসেছিলেন বগুড়া শহরের ফুলতলা এলাকার সেলিম হোসেন। তিনি বলেন, ‘৪ মণ ওজনের একটি গরু পছন্দ করেছি। বিক্রেতা দাম চাচ্ছে ৯০ হাজার টাকা। গতবার এই মাপের গরুর দাম ছিল সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা। এবার মাঝারি গরুর আমদানি প্রচুর, দামও বেশি।’ হাটে আটটি গরু বিক্রি করতে এসেছিলেন শাজাহানপুর উপজেলার আড়িয়া বাজার এলাকার খামারি রেজাউল করিম। তিনি বলেন, হাটে ৩ থেকে ৪ মণ ওজনের গরুর ক্রেতা বেশি। ক্রেতা কম ৬ থেকে ১০ মণ ওজনের বড় গরুর। হাটে বড় ও মাঝারি মিলে আটটি ষাঁড় বিক্রির জন্য তুললেও মাঝারি চারটি ৮৫-৯০ হাজার টাকায় ইতিমধ্যেই বিক্রি করেছেন তিনি। এখন ৬ মণ-৭ মণ ওজনের চারটি ষাঁড়ের প্রতিটির দাম ১ লাখ ২০ হাজার টাকা চাইলেও ৯০ হাজার টাকার ওপরে কেউ দাম করছেন না। একই চিত্র দেখা গেল দেশের অন্যতম বৃহৎ মহাস্থান হাটে। এই হাটে ৩ থেকে ৫ মণ ওজনের মাঝারি গরুর আমদানি প্রচুর। কিন্তু ক্রেতা আরও বেশি থাকায় দামও চড়া। আবার ৬ থেকে ২২ মণ ওজনের বড় আকারের গরুর ক্রেতা কম। তাই দামও কম। মহাস্থান হাটে গরু কিনতে আসা বগুড়া সদর উপজেলার পীরগাছা এলাকার আবুল কালাম আজাদ বলেন, গতবার ৪ মণ ওজনের গরু ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকায় কেনাবেচা হলেও সেই গরু এবার ৯০ হাজার টাকার কমে মিলছে না।    মহাস্থান হাটে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের অভিযোগ, হাটে ইজারাদারের লোকজন ইচ্ছেমতো হাসিল আদায় করছেন।শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর কবির বলেন, এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ইজারাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.