জয়দুল হাসান॥ লালবাগের পোস্তার চাঁদনীঘাট এলাকায় প্লাস্টিক কারখানায় আগুন লাগার ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর গত বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সকালে এই কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির প্রধান করা হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক (অপারেশন) দীলিপ কুমার ঘোষকে। অন্য দুই সদস্য সহকারী পরিচালক (এডি) আব্দুল হালিম এবং উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) নিউটন দাস। আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে কমিটিকে।
গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুরনো ঢাকার লালবাগের পোস্তার চাঁদনীঘাট এলাকায় অবস্থিত প্লাস্টিক কারখানায় আগুন লাগে। মুহূর্তেই আশপাশে ছড়িয়ে থাকা টায়ার ও পলিথিনে আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ১৬টি ইউনিট কাজ শুরু করে। তবে সরু রাস্তার কারণে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঘটনাস্থলের কাছে যেতে পারেনি। তা ছাড়া আশপাশে পানির উৎস না থাকায় বেশ বেগ পেতে হয় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের। একপর্যায়ে রাত দেড়টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন তাঁরা।
স্থানীয়রা জানায়, প্লাস্টিক কারখানার শ্রমিকরা ঈদের ছুটিতে ছিল। এ কারণে ওই কারখানা বা এর আশপাশে মানুষের তেমন উপস্থিতি ছিল না।
এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে অন্তত ৬৯ জন নিহত হয়। পাঁচটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয় ওই অগ্নিকান্ডে। এরপর পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক গুদাম সরানোর জন্য সরকারের নানামুখী উদ্যোগ দেখা গেলেও কার্যত কাজের কিছুই হয়নি। উল্টো রাসায়নিক ব্যবসায়ীদের বাধার মুখে পড়তে হয়েছে অভিযান পরিচালনা করতে যাওয়া কর্তাব্যক্তিদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লালবাগের পোস্তার চাঁদনীঘাট এলাকায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে টিনের ঘরের ওই কারখানায় আগুন দেখতে পাওয়া যায়। এ সময় আশপাশের আরো কয়েকটি কারখানায় আগুন ধরে যায়। আগুনের লেলিহান শিখা দেখে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে পুরো এলাকা।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানায়, খবর পাওয়ার পর প্রথমে ছয়টি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়। এরপর আরো একটি গিয়ে সাতটি ইউনিট আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়। তবে আগুন ছড়িয়ে যাওয়ায় যোগ দেয় আরো আটটি ইউনিট। এর সঙ্গে যোগ দেয় স্থানীয় লোকজন। রাত ১২টার দিকে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিসের আরো একটি ইউনিট। রাত দেড়টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
চকবাজার থানার ওসি মো. সোহরাব হোসেন ঘটনাস্থল থেকে কালের কণ্ঠকে জানান, ঘটনাস্থলের আশপাশে বেশ কয়েকটি প্লাস্টিকের কারখানা রয়েছে। পুরনো প্লাস্টিক থেকে এসব কারখানায় নতুন প্লাস্টিক তৈরি করা হয়।
এর আগে ২০১০ সালের ৩ জুন রাতে পুরান ঢাকার নিমতলীতে ভয়াবহ আগুনে ১২৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল মূলত রাসায়নিক দ্রব্যের অপরিকল্পিত গুদাম ও প্লাস্টিক কারখানার কারণে।