প্রশান্তি ডেক্স॥ বেতন বৃদ্ধি কতটা সহজ? চাকরি-দাতার সাথে দরকষাকষির মাধ্যমে বেশি টাকা আয় করতে পারেন। কিন্তু বাস্তবে অন্য বিষয়গুলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিছু বিষয় আমাদের নিয়ন্ত্রণে আছে, কিন্তু প্রায়শই বিষয়গুলো আমাদের ভাগ্যের সাথে জড়িত। আপনার বয়স যখন ২০ এর ঘরে তখন বেতন সবচেয়ে দ্রুত বারবে। কারণ, এসময় আপনি কম বেতনে চাকরি শুরু করেন এবং দ্রুত দক্ষতা, অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। কিন্তু বয়স যখন ৩০ এবং ৪০ এর ঘরে যায়, তখন বেতন বৃদ্ধির গতি কমে যায়। তখন হয়তো বছরে ২% এবং ১% বেতন বারে। মানুষ যখন অবসরের দিকে অগ্রসর হয়, তখন বেতন সেটি কমতে থাকে। এখনো পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, প্রতিটি প্রজন্ম তাদের পূর্বসূরিদের তুলনায় বেশি বেতন পাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৭০ এর দশকে যাদের জন্ম হয়েছে তারা ১৯৫০ এর দশকে জন্মগ্রহণকারীদের তুলনায় ১৬% বেশি আয় করছেন। কিন্তু যারা একবিংশ শতাব্দীর তরুণদের ক্ষেত্রে বিষয়টি একটু অন্য রকম। ১৯৮০’র দশকের শেষের দিকে যাদের জন্ম তারা তাদের ১০ বছর আগের প্রজন্মের চেয়ে কম উপার্জন করছেন। কারণ, তারা যে সময়ে চাকরীতে প্রবেশ করেছেন সেটি ছিল অর্থনৈতিক মন্দার সময়। অর্থাৎ ২০০৮ সালের পরে। কিন্তু তারপরেও বেতন বারানোর উপায় আছে। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরাশুনা করছেন তারা কিছুটা দেরিতে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তাদের বেতন বৃদ্ধি দ্রুততর হয়। যেসব গ্র্যাজুয়েট ১৯৮০ সালে জন্মগ্রহণ করেছেন, তাদের বয়স যখন ২২ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, তখন গড়ে তাদের বেতন বেড়েছে ৮ শতাংশ। যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা শুধু এ-লেভেল, তাদের বেতন বেড়েছে ৬ শতাংশ। অন্যদিকে যাদের যোগ্যতা শুধু ভোকেশনাল সমমানের তাদের বেতন বেড়েছে ৩ শতাংশ। শহরে বেতন বৃদ্ধি পেলেও জীবন-যাত্রার ব্যয় বাড়ে সমান তালে। চাকরি পরিবর্তন বেতন বৃদ্ধির জন্য অফিসের বস-এর সাথে দরকষাকষির চেয়ে সে চাকরি পুরোপুরি ছেড়ে দেবার চেষ্টা করতে পারেন। যেসব কর্মী একই প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন, ২০১৮ সালে তাদের বেতন বেড়েছে ০.৬ শতাংশ। কিন্তু একই সময়ে যারা চাকরি পরিবর্তন করেছেন তাদের বেতন বেড়েছে সাতগুণ বেশি, অর্থাৎ ৪.৫ শতাংশ। একজন কর্মী যখন নতুন একটি চাকরীতে যোগদান করেন, তখন সে তার দক্ষতার সবটুকু দেয়। অন্যদিকে চাকরি পরিবর্তন করলে বেতন বাড়ানোর জন্য দরকষাকষির সুযোগ তৈরি হয়। থাকার জায়গা পরিবর্তন আপনি যদি সত্যিই বড় ধরণের বেতন বৃদ্ধি চান তাহলে আপনার বাসা পরিবর্তন করে অন্য জায়গায় যেতে হবে। ২০১৬ সালে দেখা গেছে, চাকরি পরিবর্তন এবং একই সাথে বাসস্থানের এলাকা পরিবর্তনের মাধ্যমে বেতন বেড়েছে ৯ শতাংশ। এক্ষেত্রে ব্রিটেনের উদাহরণ দেয়া যায়। চাকরিজীবীরা লন্ডন, এডিনবার্গ এবং ম্যানচেস্টার এই তিনটি শহরের মধ্যে আসা যাওয়া করেছেন। কারণ এসব শহরে চাকরীর সুযোগ বেশি। কিন্তু তারপরেও তরুণরা এখন আগের মতো খুব বেশি জায়গা বদল করছে না। কারণ, বড় ধরণের বেতন বৃদ্ধি হলেও বাড়তি ভাড়া দিতেই অনেক অর্থ চলে যাচ্ছে। নারীরা বেতন বৈষম্যের শিকার হয়। পুরুষদের বেতন বেশি ব্রিটেনের বেতন সমতা আইন হওয়ার ৫০ বছর পরে এক্ষেত্রে বড় অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও নারীদের তুলনায় পুরুষরা গড়তে ১৮ শতাংশ বেশি বেতন পায়। তরুণ কর্মীদের মধ্যে এই ব্যবধান কম। কিন্তু তাদের বয়স যখন ৩০’র ঘরে পৌঁছে, তখন বেতনের ব্যবধান ১১ শতাংশ পর্যন্ত হয়। এই ব্যবধান আরো বাড়তে থাকে যখন নারীরা মা হয়। সেজন্য তাদের বেতন অনেক ক্ষেত্রে পুরুষদের সম হারে বৃদ্ধি পায়না। সবচেয়ে নীচে থাকা- অথবা সবচেয়ে উপরে থাকা আপনার বেতন কত দ্রুত বাড়বে সেটি নির্ভর করছে আপনি কোন অবস্থানে রয়েছেন। ব্রিটেনের বেতন স্কেল অনুযায়ী যারা সবচেয়ে নিচের অবস্থানে আছে, তাদের বেতন বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। যারা সবচেয়ে কম বেতন পায়, তাদের মধ্যে এক পঞ্চমাংশের বেতন গত দুই দশকে ৪০ শতাংশ বেড়েছে। যারা মধ্যম আয়ের তাদের তুলনায় এই বৃদ্ধি দ্বিগুণ। বড় ধরণের বেতন বৃদ্ধি শুধু যে নিচের পর্যায়ে হয়েছে তা নয়। যারা সর্বোচ্চ পর্যায়ে আছেন তাদের বেতনও বেশ ভালোভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সর্বোচ্চ পর্যায়ে যারা আছেন তাদের মধ্যে ৫ শতাংশের বেতন বেড়েছে ৫০ শতাংশ। অধিক উৎপাদনশীল হওয়া আমাদের বেতন কেন বৃদ্ধি পাবে কিংবা কেন কমে যাবে? এর অনেক কারণ রয়েছে। এর সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদী কারণ হচ্ছে , আমরা কতটা উৎপাদনশীল। অর্থনৈতিক মন্দা শুরুর আগে ব্রিটেনের উৎপাদনশীলতা ২ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছিল কিন্তু দশ বছর আগে সেটি যে অবস্থানে ছিল, এখনও একই অবস্থানে আছে। উৎপাদনশীলতা এবং বেতন বৃদ্ধির বিষয়টি চাকরি-দাতা এবং সরকারের উপর নির্ভরশীল। তারা যন্ত্রপাতি, প্রযুক্তি এবং প্রশিক্ষণে বিনিয়োগ করতে পারে। এর মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বর্তমান সময়ের চেয়ে অধিকতর উন্নত জীবন-যাপন করতে পারবে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞানের ছাত্রী নিশাত তাসনিম প্রায় ছয়মাস ধরে গবেষণা করেছেন টাকা ও কয়েন নিয়ে। আর খুলনা শহরের বিভিন্ন পর্যায়ের দোকান ও বিভিন্ন পেশার মানুষের কাছ থেকে সংগ্রহ করা টাকা ও কয়েনে তিনি এমন ব্যাকটেরিয়া পেয়েছেন যা মানুষের মলমূত্র থেকে আসে। “ইকোলাই জাতীয় ব্যাকটেরিয়াা মানুষের মলে পাওয়াা যায়। এই ব্যাকটেরিযাই ক্ষতিকর মাত্রায় নমুনা হিসেবে সংগ্রহ করা টাকা ও কয়েনে পেয়েছি”। তিনি জানান এক হাজার মাত্রা পর্যন্ত ব্যাকটেরিয়াকে সহনশীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য মনে করা হলেও ১২টি উৎস থেকে নেয়া কাগজের টাকার নোট ও কয়েনের আরও অনেক বেশি মাত্রায় ব্যাকটেরিয়া পেয়েছেন তারা। নিশাত তাসনিম বলছেন, “সবচেয়ে বেশি পরিমাণ ইকোলাই ব্যাকটেরিয়া পেয়েছি মাছ, মাংস আর মুরগীর দোকান থেকে সংগ্রহ করা টাকার নোট আর কয়েনে”। তিনি বলেন এসব জায়গায় বিক্রেতারা যেই হাতে মাছ, মাংস,মুরগী ধরছেন এবং পরিষ্কার করছেন আবার সেই হাতেই টাকা ধরছেন। আবার ক্রেতারাও তাদের সাথেই হাত দিয়ে ধরে নোট বা কয়েন বিনিময় করছেন। “আমরা দেখার চেষ্টা করছি যে প্রতিদিন যে এতো টাকা আমরা একে অন্যের সাথে শেয়ার করছি তা কতটা নিরাপদ। কিন্তু এটি করতে গিয়ে পুরনো সব নোট ও কয়েনেই ক্ষতিকর মাত্রায় ইকোলাই ও ফেকাল কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়ার অস্তিত্ব পেযয়েছি আমরা”।