প্রশান্তি ডেক্স॥ ডলার ছিনতাইয়ের ঘটনায় রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানার এএসআই আলমগীর হোসেন (সাময়িক বরখাস্ত) ও মাসুম বিল্লাহ নামে একজনকে দুই বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। গত বৃহস্পতিবার ঢাকার দ্রুত বিচার আদালত-৩ এর বিচারক দেবদাস চন্দ্র অধিকারী এ রায় ঘোষণা করেন। কারাদন্ডের পাশপাশি ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের কারাদন্ডের আদেশও দেয়া হয়েছে।
দন্ড্রপাপ্ত আসামিরা হলেন- যশোরের ঝিকরগাছা থানাধীন কীর্তিপুর গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে আলমগীর হোসেন ও ঢাকার দোহার থানাধীন উত্তর শিমুলিয়া গ্রামের মাসুম বিল্লাহ। রায় প্রস্তুত না হওয়ায় এর আগে দুই দফা রায়ের তারিখ পেছানো হয়। গত ১৯ আগস্ট রায়ের দিন ধার্য থাকলেও পরে তা পিছিয়ে ১৯ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হয়। গত ৩ জুলাই একই কারণে রায় ঘোষণার তারিখ পেছানো হয়।
২০১৭ সালের ১৯ জুন তাদের দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। অপরদিকে এ ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত হাবিব ডলার, রাশেদ, মো. সুমন ও সজলকে অব্যাহতি প্রদান করেন আদালত। মামলায় ১৬ সাক্ষীর মধ্যে ১০ জন বিভিন্ন সময়ে আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।
১৫ লাখ টাকার সমপরিমাণ মার্কিন ডলার ছিনতাইয়ের অভিযোগ নড়াইল জেলার নড়াগাতি থানার খাসিয়াল মধ্যপাড়ার বাসিন্দা ইলিয়াস ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেছিলেন।
মামলার অভিযোগে ইলিয়াস বলেন, তিনি লতিফ ইম্পেরিয়াল মার্কেটের এইচএস মানি এক্সচেঞ্জের মালিক। ২০১৭ সালের ৪ এপ্রিল বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানাধীন রাজলক্ষ্মী মার্কেটের সামনে গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। হঠাৎ ঢাকা মেট্টো-গ-১৯-০৯৭০ নম্বরের সাদা একটি প্রাইভেটকার তার সামনে থামে। গাড়ি থেকে কয়েকজন লোক নেমে ডিবি পরিচয়ে তাকে গাড়িতে তুলে নেন।
একপর্যায়ে কালো কাপড় দিয়ে তার চোখ বাঁধা হয়। এরপর তার কাছে থাকা মানি এক্সচেঞ্জের ১৮ হাজার ৮০০ মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৫ লাখ ৪ হাজার টাকা, তা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। ওই সময় ইলিয়াসের চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হলে আসামিরা তাদের ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু উপস্থিত জনতা গাড়ি আটকে মাসুম বিল্লাহকে আটক করেন। অপর চারজন পালিয়ে যান।
পরে পুলিশ মাসুম বিল্লাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি ওই ঘটনায় জড়িত এএসআই আলমগীর হোসেন, হাবিব ডলার, রাশেদ ও সুমনের নাম জানান। পুলিশ মাসুম বিল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরে এএসআই আলমগীর হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে রিমান্ডে নেয়া হয়। মাসুম বিল্লাহ আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।
ডিবি পুলিশের উপ পরিদর্শক নূরে আলম সিদ্দিক মামলাটি তদন্ত করে আলমগীর হোসেন ও মাসুম বিল্লাহর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। অপরদিকে হাবিব ডলার, রাশেদ, মো. সুমন ও সজলকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন করেন।