প্রশান্তি ডেক্স॥ ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত সুনামগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষক সংকটে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ কারণে চলতি বছরের পরীক্ষায় ফলাফল বিপর্যয় ঘটেছে।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৪.৯১ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত এই কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এসএসসি, এইচএসসি ও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চালু রয়েছে। কিন্তু নেই প্রয়োজনীয় শিক্ষক। পাশাপাশি রয়েছে কর্মচারী সংকট। প্রতিষ্ঠানটিতে সব মিলিয়ে ৪৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ থাকলেও আছেন মাত্র ১৪ জন। যার মধ্যে ৯ জন শিক্ষক ও ৫ জন কর্মচারী। প্রতিষ্ঠানটিতে নেই পদার্থ, রসায়ন, গণিত, ইংরেজি ও বাংলা বিষয়ের কোনো শিক্ষক। তাছাড়া পরিদর্শকের ৪টি পদের বিপরীতে একজনও নেই। যার মধ্যে ইলেকট্রিক , আরএসসি, ফার্ম, ও মৎস্য এই ৪ বিভাগে কোনো শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীদের নানা বিড়াম্বনা পোহাতে হচ্ছে ।এদিকে শিক্ষক সংকটের পাশাপাশি কর্মচারীর পদও শূন্য থাকায় প্রতিষ্ঠানের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে অফিস সহায়ক, ল্যাব পিয়ন, লাইব্রেরিয়ান, স্টোরকিপার, ক্যাশিয়ার, প্রধান সহকারি, উচ্চমান সহকারি এবং হিসাব রক্ষকের পদে কেউ কর্মরত নেই।জানা গেছে প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে নবম শ্রেণিতে শিক্ষার্থী আছে ৩২০ জন, দশম শ্রেণিতে ২১৬ জন, একাদশে ১৩০ জন ও দ্বাদশে ৯৭ জন। এছাড়া ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং প্রথম পর্বে রয়েছেন ৩৭ জন, তৃতীয় পর্বে ৩৮ জন, পঞ্চমে ৩২ জন এবং সপ্তমে ৪২ জন।একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী রায়হান আহমেদ বলেন, এটি জেলার একমাত্র টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। শিক্ষক সংকটের কারণে আমাদের লেখাপড়ার ক্ষতি হচ্ছে। পদার্থ, রসায়নের মতো কঠিন বিষয়গুলো বুঝিয়ে দেয়ার মতো কোনো শিক্ষক নেই। খুব কষ্ট করে পড়াশুনা করতে হচ্ছে।ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী ফাহিম রহমান বলেন, আমাদের শুধু নিজ থেকেই পড়তে হচ্ছে। হাতে কলমে শিক্ষা দেয়ার মতো শিক্ষক নেই। বিভিন্ন বিষয়ে কোর্স চালু থাকলেও শিক্ষক না থাকায় সঠিক জ্ঞান পাওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে সরকারের আশু পদক্ষেপ কামনা করেন তিনি।প্রতিষ্ঠানের মৎস্য কালচারের জুনিয়র পরিদর্শক আব্দুল্লাহ আল হাদি বলেন, শিক্ষক সংকট থাকার কারণে আমাকে একাই অনেক কাজ করতে হচ্ছে। স্কুল, কলেজ ও ডিপ্লোমা সবগুলোতেই ক্লাস নিতে হয়। যা একজন শিক্ষকের জন্য অসম্ভব। তাছাড়া ক্লাস নেয়ার পাশাপাশি লাইব্রেরি, একাডেমি ভবন ও জিনিসপত্র দেখভাল করতে হচ্ছে। সরকারের কাছে আমাদের একটাই আবেদন অবিলম্বে শিক্ষক সংকট দূর করা হোক। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আজিজুর শিকদার বলেন, সরকার প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে সব রকম কাজ করে যাচ্ছে। আগামী বছর নতুন ভবনের কাজ শুরু হবে। তবে শিক্ষক সংকটের কারণে আমরা শিক্ষার্থীদের ক্লাস করাতে পারছি না। শিক্ষক নিয়োগের জন্য নিয়মত মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়ে যাচ্ছি। আশাকরি সরকার এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।
Share on Facebook
Follow on Facebook
Add to Google+
Connect on Linked in
Subscribe by Email
Print This Post