প্রশান্তি ডেক্স॥দুধের শিশুকে নিয়ে ঘরের বাইরে বের হলেই বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় মায়েদের। অফিস, শপিংমল কিংবা হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার না থাকার কারণে সন্তানকে বুকের খাওয়াতে গিয়ে ‘অবাঞ্ছিত দৃষ্টির’ শিকার হতে হয় মায়েদের। এভাবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মায়েদের সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে হাসপাতালে গিয়ে। জেলার বেশিরভাগ হাসপাতালেই ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার নেই। ফলে সেখানে সন্তানকে দুধ খাওয়াতে গিয়ে অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে মায়েদের। শিশুর জন্মের প্রথম ৬ মাস ব্রেস্ট ফিডিংয়ের সময়। এই সময়টাতে শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ ছাড়া অন্য কিছু খাওয়ানো শিশুর জন্য ক্ষতিকর। মূলত শিশুর জন্মের পর অনেক সময় মা ও শিশুর শরীরে নানা ধরনের জটিলতা দেখা দেয়। আর সেজন্য ছুটতে হয় চিকিৎসকের কাছে। তাই প্রতিটি হাসপাতালেই ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার থাকা প্রয়োজন।খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নয়টি উপজেলায় দেড় শতাধিক হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এর সিংহভাগই বেসরকারি। প্রতিটি হাসপাতাল/ক্লিনিকে শিশু ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চেম্বারে ভিড় লেগেই থাকে। সেখানে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতে হয় মা ও শিশুকে। এ সময় সন্তান দুধের জন্য কান্না করলে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হয় মায়েদের। সবার সামনেই দুধ খাওয়াতে গিয়ে ‘অবাঞ্ছিত দৃষ্টির’ শিকার হতে হয় তাদের। শুধুমাত্র জেলা সদর হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে একটি করে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার রয়েছে। সেগুলোতে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য মায়েদের দীর্ঘ লাইন থাকে।চিকিৎসকরা বলছেন, বুকের দুধ খাওয়ালে বা ব্রেস্ট ফিডিংয়ে শিশুদের যেমন উপকার হয়, তেমনি মায়েদের জন্যও এটি বেশ উপকারী। ব্রেস্ট ফিডিংয়ের ফলে মায়েদের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কমে।এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের গাইনি বিশেষজ্ঞ ফৌজিয়া আক্তার জানান, শিশু জন্মের পর ৬ মাস পর্যন্ত আমরা এক্সক্লুসিভ ব্রেস্ট ফিডিং করতে বলি। এক্সক্লুসিভ ব্রেস্ট ফিডিং বলতে শিশুর যখন দরকার তখন তার মায়ের বুকের দুধ খাবে, বাইরের কিছুই খাবে না। এই ৬ মাসে মা ও শিশুর যে কোনো শারীরিক সমস্যা হতে পারে। আর সেজন্য চিকিৎসকের কাছে আসতে হবেই।তিনি আরও বলেন, চিকিৎসকের কাছে আসলে লম্বা সময় নিয়ে আসতে হয়। এই সময়টাতে শিশুকে কয়েকবার ব্রেস্ট ফিডিং করাতে হয়। সেজন্য হাসপাতালগুলোতে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার থাকা দরকার। যাতে করে সেখানে একজন মা তার শিশুকে নিরাপদে বুকের দুধ খাওয়াতে পারেন। ব্রেস্ট ফিডিংয়ের ফলে মায়ের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কমে।ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার নিয়ে লজ্জাবোধ করায় মিডিয়ায় খোলাখুলিভাবে কথা বলতে না চাইলেও হাসপাতালগুলোতে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার স্থাপনের ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী মায়েরা।এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন মো. শাহ আলম জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ব্রেস্ট ফিডিং কর্ণার রয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতেও যেন মায়েদের জন্য ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার করা হয় সেজন্য আমরা মালিকদের সংগঠনগুলোকে চিঠি দেব।
Share on Facebook
Follow on Facebook
Add to Google+
Connect on Linked in
Subscribe by Email
Print This Post