প্রশান্তি ডেক্স॥ শিশু শ্রম অপরাধ হলেও এর থেকে পরিত্রাণের কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ চোখে পড়ে না। তাই অহরহ সমাজের বিভিন্ন কর্মস্থলে চোখে পড়ে শিশু শ্রমিকদের। সংসারের অভাব-অনটন আর দরিদ্র পিতা-মাতার হাতে অর্থের যোগান দিতে বাধ্য হয়েই অনেক শিশুকে খুব অল্প বয়স থেকে কাজ করতে হয় বিভিন্ন পেশায়। যে বয়সে শিশুদের বই খাতা নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা সেই বয়সে শিশুরা তাদের কচি কচি হাতে ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় কাজ করছে। এমন যখন অবস্থা তখনই চোখ পড়ল যশোরের শার্শা উপজেলার নাভারণ বাজারের একটি হার্ডওয়ারের দোকানে। সংসারের অর্থ যোগান দিতে সেখানে কাজে নেমেছে ইকরামুল (১১) নামের এক শিশু। মাত্র এক হাজার টাকা মাসিক বেতনে চাকরি করছে। লেখাপড়া করার অধিক আগ্রহ থাকলেও পিতা মাতার সংসারে অভাবের কারণে লেখাপড়া থমকে দাঁড়িয়েছে। ইকরামুলের সংসারের বর্তমান অবস্থা ও তার অনিশ্চিত লেখাপড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জানায়, সংসারের চার ভাই বোনের মধ্যে সে ছোট। দুই বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। হতদরিদ্র পিতা সংসারে দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোগাড় করতে করতে হঠাৎই অসুস্থ হয়ে বর্তমানে প্যারালাইস রোগে আক্রান্ত। অর্থাভাবে থেমে গেছে চিকিৎসা। মেজো ভাই দুই হাজার টাকা বেতনে একটি ওয়ার্কশপে কাজ করছে। ইকরামুলের থেকে মাত্র দুই বছরের বড়। দুই ভাইয়ের তিন হাজার টাকায় না খেয়ে না পরে কোনো রকমে দিন কাঠছে তাদের। একদিকে লেখাপড়া শেখার অদম্য ইচ্ছা অন্যদিকে সংসারের বর্তমান চিত্র ও দৈন্যদশার কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে ইকরামুল।ইকরামুল বলে, আমি লেখাপড়া শিখে ডাক্তার হতে চাই যেন কেউ অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় ধুঁকে ধুঁকে না মরে। কিন্তু আমি কিভাবে লেখাপড়া চালাবো বুঝতে পারছি না। ইকরামুলের লেখাপড়া তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত। এরপর থেকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে তাকে। অস্বচ্ছল আর দারির্দের জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বেড়েই চলেছে এমন শিশুশ্রমের সংখ্যা। জীবিকার তাগিদে জীবনের শুরুতেই কোমলমতি শিশুরা মুখোমুখি হচ্ছে এমন কঠিন বাস্তবতার। পরিবারকে দু’মুঠো অন্ন আর অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তনের জন্য এভাবে বদলে যাচ্ছে আগামীর ভবিষ্যত প্রজন্ম। ভবিষ্যতের বড় মানুষ হওয়ার সংখ্যাও। ইকরামুল জানায়, সমাজের বিত্তবান ও স্বহৃদয়বান ব্যক্তিরা যদি তাদের সাহায্য করতো তাহলে আমার সংসার ও লেখাপড়া চালাতে পারতাম। ইকরামুল যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার নাভারণ বেলের মাঠ দেউলি গ্রামের কামরুলের ছেলে। তাকে সাহায্য করতে যোগাযোগের করেতে পারেন স্থানীয় বাসিন্দা মিজানুর রহমান সঙ্গে।
Share on Facebook
Follow on Facebook
Add to Google+
Connect on Linked in
Subscribe by Email
Print This Post