স্পোর্টস ডেস্ক । চাওয়া ছিল একটু বৃষ্টি। একটু বৃষ্টিই বটে। বেশি বৃষ্টি চাইলে ম্যাচই ভেসে যাওয়ার শঙ্কা থাকে। বাংলাদেশ দলের ফুটবলার, ভক্ত থেকে কর্তারা চেয়েছিলেন কাতারের বিপক্ষে ম্যাচটা হোক। অহরহ তাদের সঙ্গে যে খেলা হয়না। এ নিয়ে মাত্র পাঁচবার এশিয়ার দলটির মুখোমুখি হলো বাংলাদেশ। কিন্তু চাওয়া মতো সামান্য বৃষ্টি, এক-আধটু সুযোগ পেয়েও কাতারকে আটকাতে পারল না লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। হেরে গেলে ২-০ ব্যবধানে।
এই কাতার ২০২২ সালে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ খেলবে। সেই লক্ষ্যে প্রস্ততি নিচ্ছে তারা। ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ২০২২ বিশ্বকাপ বাছাই ও ২০২৩ এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে ম্যাচটা তাই আলাদা রঙ পেয়েছিল। দর্শকরাও সাড়া দিয়ে মাঠে এসেছিলেন। তাদের বিপক্ষে খেলার এবং ভালো খেলার লক্ষ্যা ছিল দলের সবার মধ্যেই। তাদের আটকানো ছিল প্রধান লক্ষ্য। এর আগে ঢাকায় একবার আটকানো গেছে তাদের। সর্বশেষ অনূর্ধ্ব-২৩ এশিয়ান কাপের আসরে কাতারকে জামাল ভূঁইয়ার গোলে হারায় বাংলাদেশ। ড্র কিংবা জয়ের যে সামান্য আশা ছিল তা এই অতীত থেকেই পাওয়া। তবে শেষ পর্যন্ত হতাশায় মাঠ ছাড়তে হলো জেমি ডের শিষ্যদের।
এখান থেকে চল্লিশ বছর আগে ১৯৭৯ সালে এই ঢাকায় কাতারকে ১-১ গোলে আটকে দেয় বাংলাদেশ। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে ফুটবলের জোয়ার ছিল। কাতারকে সেবার রুখে দেওয়া। ভারতের বিপক্ষে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীতা করা তারই প্রমাণ দেয়। ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশের র্যাংকিং ছিল রেকর্ড ১১০। কিন্তু এখন যেন তা ইতিহাসে পাঠ্যের বিষয়। তবে এগুলো শক্তি হিসেবে নিয়েছিলেন জামাল ভূঁইয়ারা।
কিন্তু ম্যাচের প্রথমার্ধেই গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ম্যাচের ২৯ মিনিটের মাথায় ইউসুফ আব্দুরিজ্জাক গোল করে দলকে এগিয়ে নেন। এরপর প্রথমার্ধে আরও কিছু সুযোগ কাতার পেলেও তাদের আটকে দেয় বাংলাদেশ। জেডি ডের শিষ্যদের এ ম্যাচে পরিকল্পনা ছিল পাল্টা অ্যাটাক করে খেলা। ম্যাচের শেষ দশ মিনিটে বাংলাদেশ তেমনই এক আক্রমণে গোলেরও সুযোগ পায়। শট লক্ষ্যে রাখতে পারলে গোল হতে পারতো। গোল না হলেও গোলরক্ষককে দিতে হতো শক্ত পরীক্ষা। কিন্তু বাংলাদেশ সুযোগটা নিতে পারেনি।
শেষ পর্যন্ত মনে হচ্ছিল র্যাংকিংয়ে ৬২তম কাতারের বিপক্ষে ১৮৭ অবস্থানে থাকা বাংলাদেশের ১-০ গোলের হারটাও খারাপ না। সম্মানজনক হার বলে একটা কথা আছে। ছোট হারের আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়া বাংলাদেশের জন্য সময়ের ব্যাপার বলেই মনে হচ্ছিল। হারলেও ভালো খেলেছে বলে একটা বাহবা পাওয়ার পথেই ছিল বাংলাদেশ ফুটবল দল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত স্বান্তনার হার কিংবা সম্মানজনক হার আর থাকল না! ম্যাচের ৯২ মিনিটে করিম বউদিয়াফ গোল করে দলকে ২-০ গোলে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।