আন্তর্জাতিক ডেক্স॥ রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলার শুনানি শেষ হতে চলেছে। গত বুধবার বিকেল পাঁচটার মধ্যে দৈনিক শুনানি শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। অযোধ্যা মামলায় দৈনিক শুনানির ৪০ তম দিন আজ।
আগামী ১৭ নভেম্বর শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর নেবেন রঞ্জন গগৈ। তার আগেই সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যা মামলার রায় ঘোষণা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত মঙ্গলবার প্রবীণ আইনজীবী কে পরাসরণ রাম মন্দিরের পক্ষ নিয়ে বলেন, হিন্দুরা শতাব্দীর প্রাচীন এই জায়গাটিকে রামের জন্মস্থান বলে বিশ্বাস করে লড়াই করে আসছে। প্রয়োজনে মুসলিমরা যে কোনও মসজিদে গিয়েই নমাজ পড়তে পারেন।
তিনি বলেন, শুধু অযোধ্যাতেই ৫৫ থেকে ৬০ টি মসজিদ রয়েছে। কিন্তু হিন্দুদের কাছে এটি ভগবান রামের জন্মস্থান। আমরা জন্মস্থান পরিবর্তন করতে পারি না।
কিন্তু বাবরি মসজিদের পক্ষে থাকা মুসলিম সম্প্রদায় বলছে, ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত অযোধ্যাতে এই জমির অধিকার নিয়ে হিন্দুদের পক্ষ থেকে কোনও দাবি তোলা হয়নি। তাই মুসলমানরা ১৯৯২ সালের ডিসেম্বর মাসে বাবরি মসজিদ ভেঙে দেওয়ার পর তা পুনরায় স্থাপনের দাবি তোলেন।
তবে এই অযোধ্যা মামলা নিয়ে বেশ জটিল পরিস্থিতি হতে পারে এই আশঙ্কা করে উত্তরপ্রদেশ সরকার আগে থেকেই অযোধ্যায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে।
অযোধ্যার জমি সমস্যা নিয়ে মধ্যস্থতা কমিটি কোনও সিদ্ধান্তে আসতে সক্ষম না হওয়ায় গত ৬ আগস্ট থেকে ভারতের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ বিচারকের সংবিধান বেঞ্চ এই মামলার দৈনিক শুনানি শুরু করে।
২০১০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের চারটি দেওয়ানি মামলার রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে ১৪টি আবেদন জমা পড়ে। এলাহাবাদ আদালত রায় দিয়েছিল যে, অযোধ্যার ২.৭৭ একর জমি সুন্নি ওয়াক্ফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া এবং রাম লল্লা এই তিন দলের মধ্যে সমানভাবে বিভক্ত করা উচিত।
অনেক হিন্দুই বিশ্বাস করেন যে এই স্থানটি ভগবান রামের জন্মস্থান ছিল এবং সেখানে একটি প্রাচীন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের উপর একটি মসজিদ নির্মিত হয়েছিল। ঘটনাস্থলে থাকা ষোড়শ শতাব্দীতে নির্মিত বাবরি মসজিদটি ১৯৯২ সালের ডিসেম্বর মাসে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন কিছু ডানপন্থী। মসজিদ ধ্বংস হওয়ার ওই ঘটনায় সেই সময় দেশে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।