প্রশান্তি ডেক্স॥ কখনো তার পরিচয় সাংবাদিক, আবার কখনো তিনিই হয়ে যেতেন পুলিশ সদস্য। চলাফেরা তার দামী বাইক হাঁকিয়ে, কোমরে আবার ওয়াকিটকি। এমন বেশভূষার আড়ালে রেহেনা ওরফে লিপি (২৫) নামের যশোরের এই তরুণী করতেন নানা প্রতারণা, চালাতেন মাদকের ব্যবসা।
অবশেষে চার সহযোগীসহ লিপিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ১৬ অক্টোবর, বুধবার যশোর জিলা স্কুলের সামনে থেকে কোতোয়ালি থানা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। এসময় জব্দ করা হয় পুলিশের পোশাক, হ্যান্ডকাফ, ওয়াকিটকি ও রেহেনার বেশ কিছু ছবি।
জানা গেছে, গ্রেপ্তার হওয়া রেহেনা চৌগাছা উপজেলার মাশিলা নারায়ণপুর গ্রামের মিঠুর স্ত্রী। রেহেনার বাবার নাম মোহাম্মদ হানিফ। বর্তমানে যশোর শহরের রেলগেট এলাকার বাসিন্দা রেহেনা নিজের পরিচয় দিতেন ‘সাপ্তাহিক স্মৃতি’ পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে।
তার সঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়া অপর চারজন হলেন, যশোর শহরের চাঁচড়া রায়পাড়া বিল্লা মসজিদ রোডের পিয়া (২০), শংকরপুর সরকারি মুরগির খামার এলাকার সোহেল (১৯), রেলরোডের রেলবাজার এলাকার বিসমিল্লাহ সেলুনের পেছনের বাসিন্দা বাবু ও আশ্রম রোডের সাহেব বাবুর বাড়ির সামনের বাসিন্দা তুহিন।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সমীর কুমার সরকার বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, মোটরসাইকেলের সামনে ‘প্রেস’ লিখে শহরময় ঘুরে বেড়ান এক নারী। সাংবাদিক পরিচয়ে তিনি শহরের বিভিন্ন এলাকায় ইয়াবা বিক্রি করে আসছিলেন।’
তাকে গ্রেপ্তারের জন্য কয়েকদিন ধরেই নজরে রাখা হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ‘বুধবার বিকেলে যশোর জিলা স্কুলের সামনে ওই নারীর সঙ্গীরা অবস্থান করছে জানতে পেরে তার চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।’
এ সময় সোহেলের কাছে একটি ওয়াকিটকি পাওয়া যায়। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, ওয়াকিটকিটি সে ‘সাংবাদিক’ পরিচয়ধারী রেহেনা ওরফে লিপির কাছ থেকে পেয়েছে। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী রেহেনাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে রেহেনা জানান, তিনি একটি অনলাইন শপ থেকে ওয়াকিটকি সেটটি কিনেছেন। ওয়াকিটকি দেখিয়ে পুলিশ পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছিলেন তিনি স্বীকার করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
এসময় রেহেনার কাছে পাওয়া যায় ‘সাপ্তাহিক স্মৃতি’ নামের একটি পত্রিকার পরিচয়পত্র। এই পরিচয় ব্যবহার করে শহরের বিভিন্ন এলাকায় মাদক বিক্রি করেন তিনি।
পুলিশ জানায়, চৌগাছার সীমান্ত থেকে ফেনসিডিল ও কক্সবাজার থেকে ইয়াবার চালান নিয়ে এসে মোটরসাইকেল চালিয়ে যশোরে বিক্রি করে থাকেন রেহেনা। কলগার্ল হিসাবেও তার পরিচিতি আছে। বছর খানেক আগে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার একজন ভাইস চেয়ারম্যানের সাথে আরেকবার আটক হন রেহেনা ওরফে লিপি।