আন্তর্জাতিক ডেক্স॥ কাতারে যেসব প্রবাসী শ্রমিক কাজ করেন তাদের অর্ধেকেরও বেশি উচ্চ অথবা চরম মাত্রায় হৃদরোগের ঝুঁকিতে রয়েছেন। বিশেষ করে গ্রীস্মকালের চার মাসে তা অনেক বেশি। জাতিসংঘের সদ্য প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সম্প্রতি ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল, গ্রীষ্মকালে তীব্র গরমে বাড়ির বাইরে কাজ বিশেষ করে অবকাঠামো নির্মাণের কারণে শত শত প্রবাসী প্রমিক স্ট্রোক কিংবা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছেন। তারপরই জাতিসংঘ তাদের এই প্রতিবেদন প্রকাশ করলো। গত সপ্তাহে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ কাতারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছে, প্রবাসী শ্রমিকরা এভাবে প্রতিনিয়ত কেন মারা যাচ্ছে দ্রুত তার কারণ অনুসন্ধান করে জসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে। প্রসঙ্গত, দেশটিতে আসন্ন বিশ্বকাপ ফুটবলের জন্য স্টেডিয়াম নির্মাণে হাজার হাজার প্রবাসী শ্রমিক কাজ করছেন।কাতার সরকার ও জাতিসংঘের শ্রম সংস্থা (আইএলও) যৌথভাবে বিষয়টির কারণ অনুসন্ধান করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বিশ্বকাপের স্টেডিয়াম নির্মাণ ও একটি কারখানায় নিয়োজিত ১২৫ জন প্রবাসী শ্রমিকের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদনে তৈরি করেছে তারা।কাতারের সঙ্গে জাতিসংঘের যৌথ ওই গবেষণায় দেখা গেছে, জরিপে যেসব প্রবাসী শ্রমিক অংশ নিয়েছেন তাদের এক-তৃতীয়ায়ংশ হাইপারথার্মিয়া রোগে ভুগছেন। এটা হলো মারাত্মক এক শারীরিক বিপর্যয়। যাতে করে একজন মানুষের শরীরের তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা ১০০ ফারেনহাইটে পর্যন্ত উঠতে পারে।গত আগস্টে কাতার সরকার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বাড়ির বাইরে কাজ করার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। কিন্তু জাতিসংঘের ওই গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সকাল দশটা থেকেও কাজ শুরু করেন তারাও অতিরিক্ত গরমের কারণে নানা রোগের ঝুঁকিতে রয়েছেন।উপসাগরের প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংগঠন ফেয়ার/স্কয়ার প্রকল্পের পরিচালক ম্যাকগিয়ান গার্ডিয়ানকে বলেছেন, ‘বাড়ির বাইরে যেসব শ্রমিক কাজ করেন তারা চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছেন। কাতার যে তাদের জীবনের নিরাপত্তা বিধানে ব্যর্থ জাতিসংঘের এই প্রতিবেদন তাই প্রমাণ করে।তিনি আরও বলেন, ‘জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনে যে বিষয়গুলো উঠে এসেছে কাতার কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। যদি সরকার আবারও খেয়ালি করে এসব প্রতিবেদনে প্রাপ্ত ফলকে অস্বীকার করে তাহলে হাজার হাজার প্রবাসী শ্রমিকের জীবন সীমাহীন এক ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।’জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গড়ে ৪০ শতাংশের বেশি প্রবাসী শ্রমিক তাদের কাজের শেষে ডিহাইড্রেশনে ভোগেন। আর ফার্মে কাজ করা শ্রমিকদের ক্ষেত্রে তা ৭৪ শতাংশ। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাবের কারণেই এটা হয়ে থাকে।
Share on Facebook
Follow on Facebook
Add to Google+
Connect on Linked in
Subscribe by Email
Print This Post