প্রশান্তি ডেক্স॥ সাড়ে ৮ লাখ টাকা দিয়েও চাকরি হয়নি, হাউমাউ করে কাঁদলেন প্রার্থী। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি চাকরি পাইয়ে দেয়ার কথা বলে নূর ইসলাম নামে এক বেকার যুবকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন সাড়ে আট লাখ টাকা। শেষ পর্যন্ত চাকরিটা হয়নি, টাকাও ফেরত পাননি তিনি। সব হারিয়ে এখন পথে বসার উপক্রম হয়েছে তার। গত মঙ্গলবার যশোর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে হাউমাউ করে কেঁদে এ অভিযোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে সদর উপজেলার বলরামপুর গ্রামের বাসিন্দা নূর ইসলাম আরও বলেন, নিজের সহায়-সম্বল সব বিক্রি করে চাকরির জন্য টাকা দিয়েছিলেন। তাদের প্রতারণার শিকার হয়ে সব হারিয়েছেন। সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে চাকরিটাও হয়নি। এখন টাকাও ফেরত দিচ্ছে না তারা।
তিনি বলেন, যশোরের রূপদিয়া ওয়েলফেয়ার একাডেমির প্রধান শিক্ষক বিএম জহিরুল পারভেজ ও কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন তার সাড়ে আট লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ছেলের এ অবস্থা দেখে দুইবার স্ট্রোকে আক্রান্ত বাবা আব্দুল গণির অবস্থা এখন ভালো না। সংবাদ সম্মেলনে নূর ইসলামের বাবা আব্দুল গণি, মা ফরিদা বেগম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এমএ আকরাম, প্রতিবেশী গোলাম কুদ্দুস, হাসেম আলী মোল্যা, আজিম বিশ্বাস, ছোট ভাই সাইফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
নূর ইসলাম বলেন, স্কুলের সহকারী গ্রন্থগারিক পদে নিয়োগের জন্য ২০১৫ সালে ৬ মার্চ পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। এরপর ওই পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক ৭ লাখ টাকা নেন। কিন্তু নিয়োগ না দিয়ে একই বছর ১০ অক্টোবর ও ২০১৬ সালের ২০ জুন একই পদের জন্য আবারও বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। এরপর নিয়োগ বোর্ড গঠন করে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা হয়। পরীক্ষায় আমি প্রথম হই। তখন আমাকে বলা হয়, রেজুলেশন করতে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা লাগবে। টাকা ছাড়া শিক্ষা অফিসার ও নিয়োগ বোর্ডের কর্মকর্তারা স্বাক্ষর করবেন না। এর আগে, আমার কাছ থেকে সাত লাখ টাকা নিয়েছেন তারা। পরীক্ষার পর আরও এক লাখ ৫০ হাজার টাকা দেয়ার কয়েকদিন পর আমি জানতে পারি সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে চিন্তা সেন নামে একজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এদিকে বিদ্যালয়ের সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন দাবি করেছেন, চাকরি দেওয়ার কথা বলে তিনি কারো কাছ থেকে টাকা নেননি। তার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব অভিযোগ করা হচ্ছে। সভাপতির এ দাবির ব্যাপারে নূর ইসলাম বলেন, টাকা দেয়ার সময় সভাপতি ছোট ভাই ফেরদৌস, সাবেক মেম্বর মোমিন উদ্দিন, নজরুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন সাক্ষী ছিলেন।