সময় এসেছে দেখার এবং বুঝার ও সমন্বয় সাধনকে উপলব্দি করার। এই সময়ে সময়ের আগে বা পরে যাওয়া কোনটিই কাম্য নয়। তবে সময়ের ¯্রােতে আবার নিজেকে ভাসিয়ে দেওয়াও সমুচিন নয়। তাই সময়কে গুরুত্ব দিয়ে চলমান কার্যক্রমকে সহযোগীতা করে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই আমাদের কাজ। কিন্তু ইদানিং দেখা যাচ্ছে একটি বিষয় যখন মিডিয়ার কল্যানে অথবা সরকারের সাহসিকতা, দুরদর্সীতা এমনকি স্বচ্ছতার নির্ভেজাল আলিঙ্গনে দৃশ্যমান হয় তখনই আমরা মিডিয়ায় মত প্রকাশে উলঙ্গ হয়ে বেফাস এবং অতিরঞ্জিত কথাবার্তা বলতে থাকি; যা কোনভাবেই কাম্য নয়। কথা বলার ধরন এবং প্রকাশ ভঙ্গিতে কেউ কেউ নিজেই সমাধানকারী আবার কেউ কেউ এর বিপরীতমূখী ভাব প্রকাশে তৎপর থাকেন। আসলে এই উভয়মুখীজনই কিন্ত চলমান কাজ এবং এর ধারাবাহিকতার জন্য প্রতিবন্ধক এমনকি আগামী প্রজন্মের জন্য ভয়ঙ্কর। এখানে সকলেই সুযোগ নিতে চান কিন্তু সুযোগ দিতে চান না। আর যে সুযোগ সকলের জন্য উন্মুক্ত তাকে করায়ত্ব করার জন্য মরীয়া থাকেন ঐ দুই প্রকারের মানুষগুলি। তবে এদের মুখরোচক বা সময়োপযোগী অথবা সময়ের বিপরীতার্থক বানী বা বুলি থেকে নিজেদেরকে সাবধান (দুরে) রাখুন।
এইতো সদ্য খুন হওয়া আবরারকে নিয়ে কতই না ইতিবাচক ও নেতিবাচক কথা শুনেছি কিন্তু তাকি কোন কাজে আসছে বা আসবে। না ঐ কথায় কিছুই হয়নি এবং হবেও না বরং সময়কে উত্তপ্ত করে কিছু ফায়দা হাছিল হয়েছে বা হবে; তবে তার কিন্তু স্থায়ীত্ব থাকবে না এবং জনবান্ধব হিসেবে স্বীকৃতিও মিলবে না। এই বিষয়ে আমাদের ধৈয্যধরে অপেক্ষা করে দায়িত্বপ্রাপ্তদের কথা ও কাজকে মূল্যায়নের সুযোগ নেয়া বা দেয়া উচিত ছিল। যারা এই বিচার সংশ্লিষ্ট ছিল তারা যা বলেছে এবং করার চেষ্টা চলমান রেখেছে সেখানে আমাদের অবস্থান হওয়া উচিত ছিল; এর বেশী বা কম কোনটিই আমার ও আপনার কাম্য ছিল না। একটি ঘটনা ঘটলে আমরা সবাই ঐ ঘটনার সঙ্গে পাল্লাদিয়ে পাগলামীতে মত্ত হই। বলতে পারেন কেন? ঘটনা ঘটার পূর্বে কেন আমরা সরব হইনা এমনকি এইসকল ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন আর না ঘটে সেইজন্য স্ব স্ব অবস্থান থেকে কাজ করি না। তবে শেষ কথা হলো বিচার এবং বিচারের বানী পুর্নতা পাক এই কামনা করি এবং মাননীয় আইন মন্ত্রী ও আমাদের শেষ আশ্রয় এবং ভরসারস্থল মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় পুর্ণতায় পরিপূর্ণ হউক।
আন্দোলন এবং ছাত্র রাজনীতি উভয়েই কিন্তু এক সূত্রে গাঁথা। ছাত্র রাজনীতি না থাকলে কি আন্দোলন হয় বা হবে এমনকি হয়েছেও কোনদিন? যারা আজ বলে সাধারণ ছাত্র/ছাত্রীদের ব্যানারে আন্দোলন করছি; এটাঁ কি আহাম্মকী নয়? ছাত্র রাজনীতি ছিল এবং আছে বলেইতো এই প্রতিবাদ বা সাধারণ ব্যানারে আন্দোলন করার সাহস ও সুযোগ বিরাজমান রয়েছে। যদি ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হয়ে যায় তাহলেতো ঐ সুযোগটুকুও চিরতরে হারাবে। আর এই সুযোগটুকুর জন্যইতো ছাত্র রাজনীতির আর্ভিভাব ঘটেছিল। হ্যাঁ রাজনীতি যেমন থাকবে ঠিক তেমনি ছাত্র রাজনীতিও থাকবে। এটাঁকে আইন করে মুছে ফেলা বা বন্ধ করা যাবে না। কারণ এটাঁ মানুষের মৌলিক প্রয়োজনের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। এটাঁ অধিকার আদায়ের প্রসস্থ পথ এবং সমস্যা চিহ্নিতকরণের দৃশ্যমান বা অদৃশ্যমান এক দর্পন। এঁটা অন্যায়কে অন্যায় হিসেবে চিহ্নিত করার এক দৃশ্যমান প্রতিচ্ছবি। এটাঁ একটি সার্বজনিন অধিকার। যা ন্যায় ও নীতিকে সুচারুরূপে পালনের ক্ষেত্রে মানদন্ডও বটে। ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে এর একটি বিশালত্ব এবং আমরত্ম খুজে পাওয়া যায়। সুতরাং একে মৃত বা ধামা-চাপা দেয়ার কোন সুযোগ আর অবশিষ্ট নেই। যেমনি করে আগুন কে ঢাকনা দিয়ে লুকিয়ে রাখা যায় না তেমনি রাজনীতিকে রাখা যাবে না।
কথা হলো এই রাজনীতি যদি তাঁর স্বকীয়তা হারায় ফেলে তাহলে সেই স্বকীয়তা পুনরুদ্ধারে কাজ করা এখন আমাদের সকলের দায়িত্ব। কিভাবে হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাওয়া যায়; কিভাবে ঐ ইতিবাচক মূল্যবোধকে জাগ্রত রাখা যায়; কিভাবে সাম্যের কল্যাণের তরে ঐ রাজনীতিকে ব্যাবহার করা যায়। কোথায় এবং কিসের কারণে ও কাদের প্রয়োজনে এই রাজনীতির এমন লড়াদশা যা দেখে শুনে এমনকি বুঝে লজ্জায় মাথানত করা ছাড়া আর উপায় নেই সেই ব্যাবস্থার দিকে অগ্রসর হতে হবে। আমাদের এখন সর্বাঙ্গে ব্যার্থ ঔষধ দিব কোথা এই ভেবে বসে থাকার উপায় নেই। তাই সুনিদ্দিষ্টভাবে ছাত্র রাজনীতির পাশাপাশি রাজনীতির নেতিবাচক দিকগুলোকে খুজে বের করতে হবে এমনকি যাদের জন্য এই রাজনীতি আজ কলঙ্কিত সেই তাদেরকেও এই অভিযোগের দায়ভারে অভিযুক্ত করে বিচারের আওতায় এনে রাজনীতিকে কলঙ্কমুক্ত করে রাজনীতির মূলে গিয়ে এর হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে এনে দৃশ্যমান করে আগামীর কল্যাণের তরে বিরাজমান রাখতে হবে। দশে মিলে করি কাজ হারি যেতে নাহি লাজ এই কথার মর্মার্থকে যথার্থরূপে রূপদান করার প্রয়াসে সকলে মিলে একযোগে এগিয়ে যেতে হবে। চলমান রাজনীতি এবং এর নেতিবাচক দৃশ্যায়ন বন্ধের কল্পে স্ব স্ব অবস্থান থেকে এগিয়ে এসে ইতিবাচক রূপদানে দৃশ্যায়ন করে বিরাজমান রাখার প্রত্যয়ে কাজ করে যেতে হবে।
গুজবে কান দেয়া এখন আমাদের স্বভাবে পরিণত হয়েছে তাই সকলে মিলে ঐ গুজব নামক শব্দের ব্যবহারে পরিণত হওয়া থেকে জাতিকে মুক্ত রাখতে হবে। গুজবকারী এবং গুজব ছড়ানোর মাধ্যমগুলোকে আরো সচেতন হয়ে সজাগ ভুমিকা পালনে কার্যকর করে তুলতে হবে। সময় এসেছে ভাবার; চিলে কান নিয়েছে তাই কানে হাত না দিয়ে চিলের পিছনে ছোটা বন্ধ করতে হবে। চিলে কান নিয়েছে ভাল কথা তাই আগে কানে হাত দিয়ে দেখি যদি যথাস্থানে কান না থাকে তাহলে চিলের পিছনে ছুটে গিয়ে কান উদ্ধার করি। সুতরাং কানের খুজ না করে যেন আর চিলের পেছনে না ছুটি এই শুভবুদ্ধির উদয় ঘটিয়ে কার্য্যে পরিণত করতে হবে। তাই প্রতিটি বিষয় যাচাই বাছাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ জরুরী। গ্রামের একটি পুরোনো কথার পুনরাবৃত্তি করতে চাই “ঠেকলে তিন মাথার কাছে যেয়ো”। তার অর্থ হলো তোমার স্বাভাবিক বুদ্ধিতে যদি সমাধান না পাও তাহলে মুরুব্বিদের কাছে অথবা তোমার চেয়ে ভাল জানাশুনা একজন মানুষের পরামর্শ নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপে অগ্রসর হউ। নিজে থেকে তড়িৎ কোনকিছু করতে যেয়ো না। তাড়াতাড়ি এবং জটিল কাজে একক চিন্তায় ঝাপিয়ে পড়ো না। বরং সময় নিয়ে ধীরে ধীরে অনেকের সহযোগীতা নিয়ে কাজে অগ্রসর হইউ। সাফল্য নিশ্চিত জেনে অগ্রসর হউ। নিজের বিবেক কে প্রতিনিয়ন জিঙ্গাসা করো এবং বার বার প্রশ্ন করে যে কাজটি করতে যাচ্ছো তা করা কি উচিত? সেই কাজটি দিয়ে কি সামগ্রীক কল্যাণ সাধন হবে, সেই কাজটির ফলে কি সৃষ্টিকর্তার গৌরব হবে নাকি উল্টো সবকিছুই প্রতিয়মান হবে। সাত-পাচ ভেবে অগ্রসর হউ এবং জাতিয় কল্যাণ সাধন করো। আগামীর তরে ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করো এবং দৃষ্টান্তকারী হিসেবে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠীত করো।
সামনে সুযোগ আসছে আমাদের দলকে ঢেলে সাজানোর এবং এই সাজানো থেকেই জাতি আরো উন্নয়নের স্বচ্চ দিশা পাবে। দলের পাশাপাশি অঙ্গসংগঠনগুলোর স্বচ্ছতা এবং রাজনীতির নীতি ও আদর্শ দৃশ্যমান রাখার কারিঘরদের ভুমিকা স্বচ্চায়নে দৃশ্যমান রেখে চলমান প্রক্রিয়াকে আরো সুউচ্চ চুড়ায় প্রতিষ্ঠীত করাই হউক আগামীর করনীয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অভিভাবক হিসেবে যে দায়িত্ব নিয়েছেন তার পরিপূর্ণতা পাক দলের সকল স্তরে এবং দেশের সকল পর্যায়ে। নীতি এবং আদর্শ এখন দিশেহারা হয়েছে বলেই দৃশ্যমান নেতিবাচক সংবাদ শুনতে ও দেখতে হচ্ছে; তাই নীতি ও আদর্শ পুনরুদ্ধারকরণে সকলে একযোগে কাজ করার সময় এখনই। আর তা শুরু করতে হবে পরিবার থেকে। পরিবার, সমাজ, দেশ একযোগে এই চর্চায় মনোনিবেশ করলেই দূর হবে এই অপবাদের সংস্কৃতি। পিতার দ্বারা সন্তান খুন, মায়ের দ্বারা সন্তান ফেলে রাখা, অবৈধ সকল পর্যায়, অন্যায়ের সকল স্তর এবং অনৈতিকতার সকল ক্ষেত্র, অনায্যের সকল পর্যায়গুলি বিতারিত হবে ন্যায়, নীতি, আদর্শ এবং সমতা ও সাম্যের জয়জয়াকার কায়েম হবে আমাদের দৈনন্দিন, প্রাত্যহিক এবং রাষ্ট্রিয় সকল কর্মকান্ডে। যার দৃশ্যায়ন বিরাজমান থাকবে সকল স্তরে ও সকল ক্ষেত্রে। আমরা এই দৃশ্য দেখতে চাই, অবলোকন করতে চাই এবং মানুষের কল্যানের তরে তা সবৈব ব্যবহার করতে চাই। আসুন সমাজের নানা অনাচার ও বিশৃঙ্খলা এবং অন্যায্যগুলো দুরীকরণের সরকারের পাশাপাশি নিজের ভুমিকা পরিস্কার করি এবং সকলের সঙ্গে নিজেকেও একজন গর্বীত স্বচ্ছ নি:স্বার্থ উন্নয়নকামী হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করি।