প্রশান্তি ডেক্স ॥ কয়েক দিন আগেও যে শিশুর কেউ ছিল না, সে এখন মায়ের কোলে হাসছে-খেলছে। সন্তানকে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা-আবেগাপ্লত মা। পরম মমতায় বুকে টেনে নিয়েছেন সন্তানকে। কথা দিয়েছেন সন্তানের সুন্দর ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়ার। তবে জন্মদাত্রী মা নয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে জন্মের পর মায়ের ফেলে যাওয়া সেই শিশুটিকে নিঃসন্তান এক দম্পতির হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। গত রোববার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শিশুটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে ওই দম্পতির হাতে তুলে দেয়া হয়। তবে ওই দম্পতি তাদের নাম প্রকাশ না করার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ জানিয়েছেন। গত ১৩ অক্টোবর রাত ১১টার দিকে কে বা কারা অজ্ঞাত এক গর্ভবতী নারীকে জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে রেখে যায়। পরে তাকে দেখে হাসপাতালের এক কর্মচারী গাইনি বিভাগে ভর্তি করান। রাত তিনটার দিকে ওই নারী এক ছেলে সন্তান প্রসব করেন। পরদিন ১৪ অক্টোবর ভোরে কাউকে কিছু না বলেই শিশুটিকে ফেলে হাসপাতাল থেকে চলে যান ওই নারী। পরে হাসপাতালের সেবিকারাই শিশুটিকে মাতৃস্নেহে পরিচর্যা করতে থাকে। পরবর্তীতে বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও সমাজসেবা অধিদফতর কর্তৃপক্ষকে অবগত করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালে মায়ের ফেলে রেখে যাওয়া শিশুর খবর গণমাধ্যমে আসার পর অনেকেই শিশুটিকে দত্তক নেয়ার জন্য আবেদন করেন। অবশেষে প্রকৃত বাবা-মায়ের সন্ধান পেলে শিশুটিকে ফিরিয়ে দেয়ার শর্তে গত রোববার সন্ধ্যায় এক পুলিশ কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর হাতে দত্তক হিসেবে শিশুটিকে তুলে দেন জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খান। এ সময় জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক মাসুদুল হাসান তাপস ও জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শওকত হোসেন উপস্থিত ছিলেন। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক হায়াত উদ-দৌলা খান সাংবাদিকদের বলেন, শিশুটিকে দত্তক নেয়ার জন্য চারজন দম্পতি আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। শিশু কল্যাণ বোর্ড কমিটির বৈঠক করে একজন দম্পতিকে নির্বাচন করে শিশুটিকে হস্তান্তর করেছি। বিদ্যমান সকল আইন অনুসরণপূর্বক অঙ্গীকারনামা তারা দিয়েছে। আমরা ব্যক্তিগত গোপনীয়তার স্বার্থে দম্পতির নাম প্রকাশ করছি না।
Share on Facebook
Follow on Facebook
Add to Google+
Connect on Linked in
Subscribe by Email
Print This Post