আন্তর্জাতিক ডেস্ক ॥ দক্ষিণ আমেরিকার আর্কানসাস এলাকার চেস্টিটি প্যাটারসন তার বাবাকে হারিয়েছেন ৪ বছর আগে। কিন্তু একদিনের জন্যও বাবাকে ভুলে থাকতে পারেননি তিনি। এ কারণে নিয়মিতই বাবার মোবাইলে মেসেজ করতেন তিনি। বাবার কাছ থেকে যে কোনো উত্তর আসবে না এটা জানলেও মেসেজ পাঠাতে তার ভুল হতো না কখনোই। কিন্তু চার বছর পর হঠাৎ করেই বাবার ফোন থেকে চেস্টিটির কাছে একটি মেসেজ আসে। তাতে চমকে ওঠেন চেস্টিটি। পরের দিন ছিল চেস্টিটির বাবার চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী। প্রতিদিনের মতো সেদিনও ২৩ বছরের চেস্টিটি তার বাবার পুরনো নাম্বারে মেসেজ করেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘ হ্যালো বাবা, আমি তোমার মেয়ে চেস্টিটি। আগামীকালের দিনটা আবারও আমার জন্য কঠিন এক দিন হতে যাচ্ছে।’ যে কথা কাউকে বলতে পারেননি, যে যন্ত্রণা কারও সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারেননি, সব যন্ত্রণার কথাই তিনি লিখতেন বাবাকে। যেদিন ক্যানসারের সঙ্গে দীর্ঘ লড়াইয়ের পর সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন চেস্টিটি সেদিন আরও দীর্ঘ হয়েছিল বাবার উদ্দেশে লেখা তার মনের কথা। এ কারণে ওই দিন মেসেজ লিখলেও চেস্টিটি তা থেকে ফিরতি কোনো উত্তর আশা করেননি। কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে এবার বাবার নাম্বার থেকে একটা উত্তর এল। কেউ একজন লিখেছেন, ‘ হ্যালো মিষ্টি মেয়ে, আমি তোমার বাবা নই। কিন্তু গত চার বছর ধরে আমি তোমার মেসেজ পাচ্ছি।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘প্রতিদিন সকালে আর রাতে আমি তোমার মেসেজের জন্য আগ্রহ ভরে অপেক্ষা করি। আমার নাম ব্রাড। ২০১৪ সালে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় আমি আমার মেয়েকে হারিয়েছে। তোমার মেসেজই আমাকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করেছে। যখনই তোমার মেসেজ পাই, মনে হয়, ঈশ্বরের কাছ থেকে এ মেসেজ এসেছে।’ ব্রাড আরও লেখেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে তোমার কথা আমি শুনছি, তোমার বেড়ে ওঠা দেখতে পাচ্ছি। অনেকবার ভেবেছি তোমার মেসেজের উত্তর দেবো। কিন্তু তোমাকে কষ্ট দিতে চাই নি।’ মেসেজে ব্রাড তার মৃত মেয়ের সঙ্গে তুলনা করে চ্যাস্টিটিকে ‘দেবদূত’ বলে উল্লেখ করেন। ব্রাডের মেসেজ পেয়ে চ্যাস্টিটি শোকে বিহ্বল হয়ে পড়েন। পরে তিনি নিজের ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে তাতে লেখেন, ‘ গত চার বছর ধরে আমি বাবাকে আমার জীবনের সবকিছু জানাতাম। কিন্তু আজকের মেসেজ পেয়ে আমার মনে হচ্ছে, বাবা ঠিক আছেন। বাবাকে এখন শান্তিতে ঘুমাতে দেওয়া উচিত।’ প্যাস্টিটির সেই পোস্ট হাজারো ফেসবুক ব্যবহারকারীর মন ছুঁয়ে গেছে। অপরিচিত দুই বাবা-মেয়ের কথোপকথন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় আবেগে ভেসেছেন নেটিজেনরা। সূত্র : মেইল অনলাইন
Share on Facebook
Follow on Facebook
Add to Google+
Connect on Linked in
Subscribe by Email
Print This Post