একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নেবেন না বুয়েট শিক্ষার্থীরা

প্রশান্তি ডেক্স ॥ বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যার সুষ্ঠু বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গত মঙ্গলবার বিকেলে বুয়েট শহিদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে যত দিন ত্রাসের রাজনীতি বন্ধ না হচ্ছে,র্ যাগিংয়ের নামে ক্যাম্পাসে চলা অশুদ্ধ সংস্কৃতির অবসান না হচ্ছে, ততদিন একাডেমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। আবরার হত্যার বিচারসহ ১০ দফা দাবির পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিতে অটল তারা। গত মঙ্গলবার বিকেলে বুয়েট শহিদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘোষণা দেন নিহত বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যার সুষ্ঠু বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ১৬ অক্টোবর মাঠের আন্দোলনে ইতি টানলেও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করছেন তারা। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, আবরার হত্যার ১০ দিন পর বুয়েট প্রাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হলেও তদন্তে তেমন অগ্রগতি নেই। তাদের ১০ দফা দাবির মাত্র দুটির এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ বান্তবায়ন করা হয়েছে। আবরার হত্যা মামলার তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর মামলাটি দ্রম্নত বিচার ট্রাইব্যুনালে হস্তান্তরের দাবি শিক্ষার্থীদের। আবরারের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও মামলার খরচ দিতে প্রশাসন আশ্বাস দিলেও এখনো পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে থাকা বুয়েট ছাত্রী অন্তরা মাধুরী তিথি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘জানি, আমরা কিছুদিন পিছিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমরা তো অপেক্ষা করতে পারি না যে, আমাদের মধ্য থেকে আরেকটা আবরার আসুক। আমাদের সঙ্গেও ব্যাপারটা হতে পারে। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে বৃহত্তর স্বার্থে আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব। প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছে, আমরা একাডেমিক অসহযোগে আছি।’ আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা বুয়েট ছাত্র মাহমুদুর রহমান সায়েম বলেন, ‘বুয়েট থেকে পাস করার পর সবাই কোথাও না কোথাও যাবে। কিন্তু তিন সপ্তাহ আগে আবরার কবরে চলে গেছে, ও আর কোথাও যাবে না। তাই যত দিন পর্যন্ত আবরার হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচার না হচ্ছে, আমরা ক্লাসে ফিরে যেতে পারি না। আমরা হয়তো কয়েক মাস বা কয়েক বছর পর চলে যাব, কিন্তু নতুন যারা আসবে, তাদের জন্য একটা সুষ্ঠু-সুন্দর ক্যাম্পাস রেখে যাওয়ার দায়িত্ব আমাদের ওপরও বর্তায়। বুয়েটে প্রশাসন কার্যক্রম চলছে, চলুক। কিন্তু যত দিন না আমরা বিশ্বাস করতে পারছি যে, বুয়েটে সুষ্ঠু-সুন্দর পরিবেশ ফিরে এসেছে এবং মামলার অভিযোগপত্রে নাম আসাদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হচ্ছে, তত দিন আমাদের একাডেমিক অসহযোগ চলবে।’ ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে শাখা ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী। পরে শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে ১১ অক্টোবর বুয়েট ক্যাম্পাসে সাংগঠনিক ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন উপাচার্য সাইফুল ইসলাম। বুয়েট শিক্ষক সমিতির নেতারা উপাচার্যকে প্রশাসন পরিচালনায় ‘অক্ষম’ আখ্যা দিয়ে তার পদত্যাগ চাইলেও শিক্ষার্থীরা উপাচার্যেও পদত্যাগের দাবি তুলেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.