রাজধানীতে জশনে জুলুস ও মিলাদুন্নবী মাহফিল অনুষ্ঠিত

প্রশান্তি ডেক্স ॥ হযরত মুহম্মদ (সা.) এর শুভাগমন উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও রাজধানীতে বিশাল জশনে জুলুস ও মিলাদুন্নবী (সা.) মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। আঞ্জুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের আয়োজনে আল্লামা তাহের শাহের নেতৃত্বে গত বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে অবস্থিত কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া আলিয়া (কামিল) মাদরাসা প্রাঙ্গণ হতে এ জুলুস বের করা হয়। ধর্মীয় র্যালিটি মোহাম্মদপুরের শাজাহান রোড, ইকবাল রোড, আসাদ এভিনিউ, নুরজাহান রোড, তাজমহল রোড, শিয়া মসজিদ, শ্যামলী, খিলজী রোড, বাবর রোড হয়ে আবার মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। আঞ্জুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জুলুসে ঢাকা মহানগরী থেকে হাজার হাজার আশেকে রাসূল অংশ নেন। এ সময় তাদের মুখে ছিল নারায়ে তকবির, আল্লাহু আকবার, নারায়ে রেসালত- ইয়া রাসূলুল্লাহ (সা.) শ্লোগান। ভাবগম্ভীর পরিবেশে এ জশনে জুলুস অনুষ্ঠিত হয়। পরে কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া আলিয়া (কামিল) মাদ্রাসা ময়দানে আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্-এর সভাপতিত্বে পবিত্র রবিউল আওয়াল মাসে রাহমাতুল্লিল আলামিন হযরত মুহম্মদ (সা.) এর শুভাগমন নিয়ে সারগর্ব আলোচনা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মাহফিলে প্রধান মেহমান ছিলেন আল্লামা আলহাজ সৈয়্যদ মুহাম্মদ কাশেম শাহ, আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ হামেদ শাহ্। এ সময় আল্লামা সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ বলেন, আমরা বিশ্বাস করি রাসুলেপাক (সা.) আমাদের জন্য আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নেয়ামত। সুতরাং ১২ রবিউল আউয়াল হুজুর করিম (সা.) এর শুভাগমনের দিন হিসেবে সারা জাহানের জন্য ঈদ তথা খুশির দিন। এদিন ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে খুশি উদযাপনে ইসলামে কোনো বাধা নেই বরং শরীয়ত সম্মত। এদিন খুশি উদযাপন করা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের এক উত্তম উছিলা। উপাধ্যক্ষ মুফতি মাওলানা আবুল কাশেম মোহাম্মদ ফজলুল হক ও হাফেজ মাওলানা মুনিরুজ্জামানের সঞ্চলানায় জশনে জুলুসও ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী (সা.) এর ফজিলত তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন জামেয়া-আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার প্রধান মুহাদ্দিস আল্লামা ওবায়দুল হক নঈমী, কাদেরিয়া তৈয়্যেবিয়া আলিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ কাজী আব্দুল আলিম রিজভী, আল্লামা জসিম উদ্দিন আল-আজহারী, মুফতী মাহমুদুলহাসান প্রমুখ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আঞ্জুমানের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট আলহাজ মুহাম্মদ মহসিন, সেক্রেটারি জেনারেল আলহাজ মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান আলহাজ সুফী মিজানুর রহমান, আঞ্জুমানের অ্যাডিশনাল সেক্রেটারি আলহাজ মোহাম্মদ শামসুদ্দিন, জয়েন্ট সেক্রেটারি আলহাজ মো. সিরাজুল হক, ঢাকা আঞ্জুমানের চেয়ারম্যান, আলহাজ মো. শহীদ উল্লাহ, সি. ভাইস চেয়ারম্যান আলহাজ মো. ফজলুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মাদ্রাসার গভর্নিংবডির সভাপতি আলাহাজ মো. নুরুল ইসলাম রতন, আঞ্জুমানের ঢাকা নেতা মো. সিরাজুল হক, মিজানুর রহমান, আব্দুল মালেক বুলবুল, শোয়েবুজ্জামান চৌধুরী তুহিন, শাহ্ হোসেন ইকবাল, হাজী নুরুল আমিনসহ ঢাকা আঞ্জুমান ও গাউসিয়া কমিটির নেতৃবৃন্দ। বক্তারা বলেন, অন্ধকারাচ্ছন্ন মানবজাতিকে মুক্তি দিতে মাহে রবিউল আওয়াল মাসের ১২ তারিখে মহান আল্লাহ পাক প্রিয়হাবীব হুজুর করিম (সা.)-কে এ পৃথিবীতে প্রেরণ করেন। অসংখ্য দরুদ ও সালাম প্রিয় নবীজিরশানে। যার সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ পাক বলেন, আপনাকে সৃষ্টি না করলে কিছুই সৃষ্টি করতাম না (আল হাদিস)। আমি আপনাকে সমগ্র সৃষ্টির জন্য রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছি। হে মাহবুব আপনি বলুন, আল্লাহর রহমত ও করুনাপ্রাপ্তির কারণে বান্দারা যেন খুশি উদযাপন করে। এটা তাদেরসকল সঞ্চিত এবাদত হতেও উত্তম। মাহফিলে আলোচনা শেষে খতমে গাউসিয়া শরীফ ও মিলাদ শরীফ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশসহ মুসলিম উম্মাহর সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করেন আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ হামেদ শাহ্। উল্লেখ্য, পবিত্র রবিউল আউয়াল মাসে হুজুরে করিম (সা.) এর এ ধরায় শুভাগমনকে স্মরণ করে আঞ্জুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়াসুন্নিয়া ট্রাস্ট প্রতি বছর ৯ রবিউল আউয়াল ঢাকা মহানগরীতে এবং ১২ রবিউল আউয়াল চট্টগ্রাম বন্দর নগরীতে যথাযোগ্য মর্যাদায় জশনে জুলুসে ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী (সা.) কর্মসূচি পালন করে আসছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.