দুই পাতা পড়েই মনে করে আমি কেন মাঠে যাব : প্রধানমন্ত্রী

প্রশান্তি ডেক্স ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বুধবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কৃষক লীগের দশম জাতীয় সম্মেলনে বক্তব্য দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমাদের একটা সমস্যা আছে। একটু পড়াশোনা করলেই অনেকে জমিতে যেতে চায় না, মাঠে যেতে চায় না। দুই পাতা পড়েই মনে করে আমি কেন যাব? আমার মনে হয় ওই চিন্তা থেকে দূরে থাকা দরকার।’ গত বুধবার রাজধানীর সোহরায়ার্দী উদ্যানে কৃষক লীগের দশম জাতীয় সম্মেলনে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা ছেলের বাবা কৃষি কাজ করে পড়ালেখা শিখিয়েছে। ছেলে-মেয়ে অবশ্যই তার মাঠে যাওয়া উচিত। যাবে না কেন, দুই পাতা পড়েই মনে করে আমি কেন যাব? আমার মনে হয় ওই চিন্তা থেকে দূরে থাকা দরকার। যে কারণে এবার ধান কাটার সময় আমাদের ছাত্রলীগকে বলেছিলাম, তোমরা এখন মাঠে চলে যাও, সবাই ধান কাটো, কৃষকদের সাথে হাত লাগাও। লজ্জার কিছু না, নিজের কাজ নিজে করা লজ্জার কিছু না। নিজের ফসল নিজে উৎপাদন করব, নিজে খাব, তাহলে লজ্জার কি আছে। কোনো কাজে লজ্জার কিছু নাই। আমি বলেছি, প্রয়োজনে আমি যাব। এই জায়গাটাতে আমাদের কৃষক লীগের ভূমিকা থাকার দরকার ছিল। এবং আমি মনে করি এটা স্কুলজীবন থেকে অভ্যাস করা দরকার। ছোট বাগান করা, জমি চাষ করা বা সেখানে ফসল উৎপাদন নিজের ফসল নিজের ঘরে তোলা। এটা একটা গর্বের বিষয়। সবাইকে সেভাবে দেখতে হবে, মর্যাদা দিতে হবে। সেই মর্যাদা না দিলে পেটে ভাত বা খাবার আসবে কোথা থেকে সে কথাটা চিন্তা করতে হবে। নিজেদের জমিতে ফসল ফলানো সবচেয়ে গর্বের। লেখাপড়া জানতে মাঠে যাবে না সেই চিন্তা থাকা উচিত নয়। এই বিষয়ে কৃষক লীগের ভুমিকা থাকা উচিত।’ প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘কৃষকের টাকা যাতে বিফলে না যায় সেজন্য কৃষক ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খুলতে পারে সেই ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আজকে ১ কোটি ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৪৮টি ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে। তারা নিজেরা নিজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে পারে। সেখানে তাদের টাকা আমরা সরাসরি পাঠিয়ে দেই। সেখানে গিয়ে তারা তাদের প্রয়োজন মতো টাকা তুলে খরচ করে, আর যখন করে না তখন কিছু টাকা জমাও হয়ে যায়। এভাবে তাদের অর্থের পরিমাণ প্রায় ২৮২ কোটি টাকা যা সম্পূর্ণ কৃষকের। ’আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা জানেন একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প নিয়েছিলাম। সেটার নাম আমি পরিবর্তন করে আমার বাড়ি আমার খামার করেছি। কারণ একটি বাড়ি করলে সবাই খোঁজাখুঁজি করে। তাই আমি বললাম যার যার বাড়ি তার তার খামারে পরিণত করা। অর্থাৎ বেকার বসে থাকবে কেন? মেয়েরাই বা বসে থাকবে কেন? তারাও কাজ করবে। যে যেভাবে উৎপাদন করতে চায় আমরা সেই সুযোগ করে দেব, এক ফোটা জমি অনাবাদি জমি রাখতে চাই না।’প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গত ১১ বছরে আমরা কৃষি খাতে ৬৫ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছি। ২০০৮-০৯ বাজেটে কৃষিতে বরাদ্দ ছিলে ৬ হাজার ৯২৪ কোটি টাকা। সেই সঙ্গে আমরা ১৯-২০ সালে ১৪ হাজার ৫৩ কোটি কোটি টাকার বাজেট দিয়েছে। আমরা কৃষিতে প্রণোদনাসহ দিয়েছি ১ হাজার ২৭ কোটি টাকা। এর মাধ্যমে ৭৯ লাখ কৃষক উপকৃত হচ্ছে। প্রায় তিন কোটি কৃষককে কৃষি উপকরণ দিচ্ছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published.