ঘটনা এবং রটনার উৎস

ইদানিং আমাদের সমাজে বহু ঘটনা ঘটছে এবং রটনা রটছে যা আমাদের দৃষ্টিগোচর হচ্ছে এবং দৃষ্টিসীমার বাইরেও শোনা যাচ্ছে আর মিডিয়ার কল্যাণে ভেসে আসছে মানব চক্ষুর সম্মুখপানে। মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত (সৃষ্টির সেরা জীব)। আর সেরা জীবটাকের খজম করতে হচ্ছে অথবা খজম করে নিচ্ছে ঐ সকল ঘটানো ঘটনা এবং রটানো রটনা। তবে এর থেকে বের হওয়া অতি জরুরী এবং যুগের দাবি অনুযায়ী প্রয়োজনও বটে। আমরা ঐ ঘটনার মুলোৎপাটনে কখনো কাজ করি আবার কখনো কাজ করি না তাই ঐ ঘটনা এবং রটনা এখন চীরঞ্জীব হিসেবে মানুষের উপর খর্বকারে দন্ডায়মান রয়েছে। তাই ঐ খর্বকে নি:শেষ করার জন্য কিছু একটা করা আমাদের প্রত্যেকেরই নৈতিক এবং ঈমানী দায়িত্ব। তারচেয়েও বড় কথা হলো আমাদের আগামী প্রজন্মকে একটি সুখি-সম্বৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ স্থিতিশীল নিশ্চয়তার নির্ভার সমাজ ব্যবস্থা উপহার দেয়াই আমাদের এখনকার কর্তব্য। ছেলে-মেয়ের বাবা-মা, চাচা-চাচি, দাদা, খালা-খালু, মামা-মামি, নানা-নানি, দাদি, ভাই-বোন হিসেবে এখনই আমাদের এই নিশ্চিত ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা কল্পে কাজ করে যেতে হবে।
ইদানিং কিছু কিছু বিষয় নিয়ে ভাবতে গেলেই গ্যা শিউরে উঠে। এইতো গত কয়েকদিনে নিরাপদ যাত্রা এবং নিরাপদ বাহনের নাম ট্রেন। এই ট্রেন দুর্ঘটনার হিরিকে মানুষ এখন আতঙ্কগ্রস্ত। এই আতঙ্কগ্রস্থতা কি কাকতালীয় নাকি পরিকল্পিত। তাই দীর্ঘদিনের নিরাপদের নিরাপত্তা বিধানকারী ট্রেনের এই বিপর্যয় কি কারণে হচ্ছে তা কি খতিয়ে দেখছেন বা দেখার দায়িত্বপ্রাপ্তরাই বা কতটুকু যোগ্যতা রাখেন এই অঘটনের ঘটানো ঘটনার অন্তরালের খবর বের করে জাতির সামনে প্রকাশ করতে। জাতি জানতে চাই এবং নিশ্চিত হতে চায় এই ঘটনাগুলোর মূলে কি রয়েছে এবং আগামীর নিশ্চয়তা বিধানে দায়িত্বপ্রাপ্তরা কি কি পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং সরকার কি কি দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। আর সেই অনুযায়ী কাজ হচ্ছে এবং সেই কাজের দেখভাল করার মত দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গও রয়েছেন?
দুর্ঘটনা নিয়ে অনেকেই নেতিবাচক এবং দম বন্ধ হওয়ার মত কথাও বলে বেড়ান। কিন্তু ভেবে দেখেছেন এর বিকল্প কি হতে পারে। নাকি স্তম্বীত জাতিকে ঘরকোনো করে ধ্বংসের স্তুপে নিমজ্জ্বিত করাই আপনাদের ঐ ধরনের বক্তব্য। তবে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন এবং তাঁর ঐ সাহসি বক্তব্যকে স্বাগত জানাই এবং আমরা একটু যুক্ত করতে চাই যাতে দ্রুতলয়ে ঐ অনুসন্ধান এবং নিশ্চয়তার পুর্নবাসন করা হয় আর তদারকির ব্যবস্থাটা জোরদার করা হয়। বাস-ট্রাক দুর্ঘটনার স্বীকারে যেভাবে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল এবং হচ্ছে সেইভাবে যেন ট্রেনের ক্ষেত্রেও করা হয়। আর দীর্ঘদীনের পুরোনো যন্ত্রাংশকে নতুনে পরিণত করার রীতি ও রেওয়াজে গতিশীলতা আনয়ন এবং নিরপেক্ষ তদারকির ব্যবস্থা চালূ করা জরুরী। ডিজিটাল যুগের ডিজিটাল পদক্ষেপগুলোকেও প্রাধান্য দিয়ে পুরোনো অভ্যাস থেকে বের হয়ে আসার ব্যবস্থা করতে হবে।
মানুষের নৈতিক এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের বিপর্যয়ে আজ আমরা পিয়াজ বানিজ্যে ধরাশায়ী। কিন্তু এই পিয়াজ বানিজ্যের নৈপথ্যে যারা রয়েছে তাদেরকে বের করা এবং উপযুক্ত বিধানে সন্নিবেশিত করা খুবই কঠিন বলে মনে হয় না। আমাদের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এতই চৌকষ ও তৎপর যে তারা ইচ্ছা করলেই অতি অল্প সময়ে এর সমাধান এবং সুরাহা করতে পারে। তবে এক্ষেত্রে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ অতিব জরুরী। কারন উনি ছাড়াতো গরীবের কেউ নেই। আর গরিব মারার জন্যইতো গদ্দিনীশিন হয়ে আছেন মহাজন আর অঘোষিত রাজা-বাদশারা। তবে তাদের হাবভাবে ঠিকই প্রকাশ করে বুঝিয়ে দেন তারা রাজা এবং বাদশা ও মহাজন। ছোটমুখে বড় কথা সাজে না তারপরও বলব মাননীয় বানিজ্যমন্ত্রী মহোদয় আপনি জেগে উঠুন এবং গবীরের কাতারে এসে উপলব্দি করে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিন। দলকে জনকল্যানমুখী ভুমিকায় রাখতে সচেষ্ট হউন। যদি জ্ঞানে ও ক্ষমতায় এবং বিচক্ষণতায় না পারেন তাহলে প্রধানমন্ত্রীর স্মরণাপন্ন হউন এবং বাংলার জনগণকে সম্পৃক্ত করুন তাহলেই এই ক্ষুদ্র সমস্যাটি দ্রুত সমাধান হবে এবং জাতিয়ভাবে আপনি সম্মানের ও ভালবাসার সর্বোচ্চ স্থানে আসীন হবেন। নতুবা নিন্দুকদের বানিবিদ্ধ হয়ে জর্জারিত হবেন আর আমাদের দলকে বদনামের রোষানলে নিমজ্জ্বিত করবেন। তাই সময় থাকতেই জনবান্ধব এবং কল্যানকামী গরীব হউন। পিয়াজ নামক মিছে খেলার হাত থেকে গবীর ও সৎ মানুষদেরকে রেহাই দিন। নতুবা সময় এবং জনগণই এর প্রতিশোধ নিয়ে নেবে। সুতরাং আমার প্রতিশোধ পরায়নতা থেকে মুক্তি চাই।
আজ গর্বকরে আরেকটি কথা বলতে বা ২০বছর পর দ্বিতীয়বার লিখতে আনন্দ পাচ্ছি; কারন আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার বিশ বছর আগের সেই কথাটির পুনরাবৃত্ত্বি করে বলেছেন ক্ষুদৃঋৃন গরীব বা দারিদ্রতা লালন করে লাঘব করে না। তাই ঋনদাতারা গরীবের সমস্ত আয়-উপার্জন নিয়ে ধনিতে পরিণত হয়, হয়েছে এবং হবে আবার কেউ কেউ বিশ^ সম্মান ছিনিয়ে এনেছে বটে তবে গরীবের বা দেশের কল্যাণের তরে নয় বরং বিদেশের কল্যাণের তবে। তাই এই ক্ষুদ্র ঋণ বা ঋণ নাম মরদ ফাদের হাত থেকে দেশ ও জনগণকে মুক্তি দিতে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। আর এই কাজটি করতে হবে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিজ উদ্যোগে। তিনি ছাড়া এই জাতির বা গরিবের কোন মুক্তি নেই। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আমাদের আকুল আবেদন এই ক্ষুদ্রঋণ তথা ব্যাংক ঋণও সহজ এবং সুদের হার এক সংখ্যায় নামিয়ে আমার ব্যবস্থা করুন। নতুবা আপনার আগামী এবং প্রজন্মের লক্ষকোটি সন্তান নিষ্পেষিত হবে। তাই আপনার হাত দিয়েই এই জাতির অর্থনৈতিক মুক্তি, স্থিতিশীলতা এবং শান্তি ও নিশ্চয়তা আর সম্বৃদ্ধি ও উন্নতির উচ্চাসন সাধিত হউক।
দুর্নীতির আরেকটি রূপ হলো ঘুষ বানিজ্য। তবে এই বানিজ্যে বাংলাদেশ দক্ষতারসাথে এগিয়ে রয়েছে। আর এই এগিয়ে যাওয়াতেই অসম্মানের সম্মান অর্জন করেছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। তাই এই ঘুষ বানিজ্যের লাগাম টেনে ধরা এখন সময়ের দাবি। এই ঘুণ বাণিজ্য কোথায় কোথায় হচ্ছে আর কাদের মাধ্যমে বিদেশী মিডিয়ায় প্রচারিত ও প্রকাশিত হচ্ছে তাও দিবালোকের মত স্বচ্ছ। আমাদের দেশে ব্যবসা বানিজ্যে এবং সেবা সংস্থার মাধ্যমে কাজ করেছে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যক্তিবর্গ। এই ব্যক্তিরাই যখন কোন কাজে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সম্মুখীন হন ঠিক তখনই ঐ দক্ষতানির্ভর চাতুরতামুখী কর্মকর্তা অথবা কর্মচারী দ্বারা ঘুষ লেনদেন হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে আবার বাংলাদেশী অফীস কর্মীর লালসার দ্বারা সরকারী অফিসের নামে মিথ্যা ঘুষ উত্তোলিত হয়ে বদনাম বা দুর্নাম সাধিত হয়। তবে ঐ অফিসগুলো চিহ্নিত যেমন, ভিসা অফিস, এন জিও ব্যুরো, ভিসা ভ্যারিফিকেশন, নিরাপত্তা ছাড়পত্র, আরজেএসসি সহ আরো অনেক যা সরকারের দৃষ্টিগোচরেও রয়েছে। তবে ভিসা অফিস, ভিসা ভ্যারিফিকেশন এবং এন এস আই এর দ্বারা নিরাপত্তা ছাড়পত্রের সহজীকরণ করা হলে এমনকি কোম্পানী রেজিষ্ট্রেশন, এনজিও অনুমতি এবং প্রয়োজনীয় সাপোর্টগুলো সহজিকরণ করলে ঐ অসম্মানের সম্মান আর অর্জিত হবে না। তবে এর সঙ্গে আরেকটি বিষয় যুক্ত করতে হচ্ছে যে, এনবিআর এর ট্যাক্স এবং ভ্যাট অফিসগুলোকে স্বচ্ছ এবং জবাবদিহীতায় আনয়ন করতে পারলে দেশের সমৃদ্দি যেমন হবে ঠিক তেমনি অসম্মানের সম্মান অর্জন লাঘব হবে। মানুষ ট্যাক্স দেয় কিন্তু ট্যাক্স দিতে গিয়ে যে বিড়ম্বনায় পড়ে তা প্রকাশ করা খুবই কষ্টকর এবং লজ্জ্বাসকর। তাই ভোক্তভোগী ১০০ভাগ মানুষই জানেন এই কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরা কত নিলর্জ্জ্ব। তবে সবাই নয় কতিপয় মুল্যবোধহীনদের জন্য আজ আমরা কলুষিত। ঘুষ না পেলে ইচ্ছাকৃত হয়রানীর স্বীকারে পরিণত করে আর ঘুষ পাওয়ার জন্য সত্যকে অসত্য রূপদান করে বার বার সাক্ষত কামনা করে এবং দেখা করেছেন অথবা খুশী করেছেন এই দুটি বাক্যের ব্যবহারে অতিষ্ট করে ছাড়েন।
মানুষ দোষখে যেতেও এত কষ্ট হবে না যা ঐ এনবিআর নামক স্থানে হয়। ঐ স্থানকে নড়ক যন্ত্রণার স্থান বললেও কম হবে। ঠিক একই অবস্থা এনজিও ব্যুরো এবং জয়েনষ্টোকে। তাই ঐ জায়গাগুলোকে স্বচ্ছ করে ব্যবহারোপযোগী করুন। আরেকটি জায়গায় যাওয়া যায় তা আমাদের বৈদেশিক ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের বিএমএটিতে। এই জায়গাটিও যদি স্বচ্ছতার আদলে ব্যবহার করা যায় এমনকি জনকল্যানে সেবায় পরিণত হয় তাহলে বাংলাদেশকে কেউ ধাবায়ে রাখতে পারবে না। বরং সময়ের আগেই বাংলাদেশ পৃথিবীর নের্তৃত্ব দিবে। আসুন আমরা সবাই সজাগ হই এবং সকল অসামঞ্জস্যতা এবং নৈরাজ্যকে পরিস্কার এবং স্বচ্চতায় পর্যবসীত করি। কেউ আঘাত পেলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে মার্জনা করবেন এবং আমরা বাস্তব অভিজ্ঞতাটি আপনারও রয়েছে তাই অসম্মানের সম্মান আর অর্জন করতে চাই না বরং স্বসম্মানের সম্মান অর্জন করতে সচেষ্ট্য হই। আসুন আমরা সকলেই ঘটনা এবং রটনার মূলে গিয়ে কুঠারাঘাত করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published.