গাইবান্ধা প্রতিনিধি সোহাগ॥ গাইবান্ধায় সাবেক এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন (ইনসেটে) হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাবেক এমপি আব্দুল কাদের খানকে গত বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করে পুলিশ -স্টার মেইল বহুল আলোচিত গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন হত্যা মামলায় জাতীয় পার্টির (জাপা) সাবেক এমপি কর্নেল (অব.) আব্দুল কাদের খানসহ সাত আসামির মৃত্যুদন্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক দিলীপ কুমার ভৌমিক। এ মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন- সাবেক এমপি আব্দুল কাদের খানের পিএস শামছুজ্জোহা, গাড়ি চালক আব্দুল হান্নান মিয়া, ভাতিজা মেহেদি হাসান, শাহীন আলম, রানা ও পলাতক আসামি চন্দন কুমার রায়। আর অভিযুক্তদের মধ্যে আসামি কসাই সুবল কারাগারে অসুস্থ অবস্থায় মারা যান। এর আগে জেলা কারাগার থেকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে ছয় আসামিকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। তাদের উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন বিচারক। এ রায়ে এমপি লিটনের স্বজনরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। এমপি লিটনের স্ত্রী সৈয়দ খুরশিদ জাহান স্মৃতি ও লিটনের ছোটবোন ফাহমিদা কাকুলী বুলবুল বলেন, ‘এই রায়ে আমরা খুশি। রায় দ্রম্নত কার্যকর করার জন্য সরকারের প্রতি আবেদন জানাচ্ছি।’ এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, ‘তিনি এবং বাদীসহ প্রয়াত এমপি লিটনের পরিবারের সদস্যরা এই রায়ে সন্তুষ্ট হয়েছেন।’ আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমরা এ রায়ে সন্তুষ্ট নই। এমপি লিটনকে যেভাবে ষড়যন্ত্র করে হত্যা করা হয়েছে, ঠিক তেমনিভাবে আসামি কাদের খানকে এ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। কেননা হত্যাকান্ডের সময় কাদের খান দেশের বাইরে ছিলেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব।’ সুন্দরগঞ্জ থানার এসআই জসিম জানান, যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি এড়াতে সাবেক দুই সাংসদের বাড়িতে সকাল ৯টা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এছাড়া উপজেলার সর্বত্র শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জের বামনডাঙ্গার মাস্টারপাড়ার নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন। তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি অজ্ঞাত পাঁচ-ছয় জনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করে লিটনের ছোটবোন ফাহমিদা কাকলী বুলবুল। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ কর্নেল (অব.) আব্দুল কাদের খানসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রম্নয়ারি বগুড়ার বাসা থেকে কাদের খানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল আলোচিত এ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে তা শেষ হয় ৩১ অক্টোবর। এ মামলায় বিজ্ঞ আদালতে বাদী, নিহতের স্ত্রী ও তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৫৯ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন।
Share on Facebook
Follow on Facebook
Add to Google+
Connect on Linked in
Subscribe by Email
Print This Post