প্রশান্তি ডেক্স ॥ রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, মনে রাখতে হবে জনগণের কষ্টার্জিত করের টাকায়ই দেশের উন্নয়ন হয়। তাই জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি জনগণের সুখ-দুঃখে সেনাবাহিনীকে পাশে দাঁড়াতে হবে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ গত মঙ্গলবার যশোর সেনানিবাসে অবস্থিত সিগন্যাল ট্রেনিং সেন্টার অ্যান্ড স্কুলে অনুষ্ঠিত সিগন্যাল কোরের ৬ষ্ঠ কোর পুনর্মিলনী কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেন। পাশে অন্যদের মধ্যে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ -আইএসপিআ জনগণের কষ্টার্জিত করের টাকায় দেশের উন্নয়ন হয় স্মরণ করিয়ে দিয়ে সেনাবাহিনীকে জনগণের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। তিনি বলেছেন, ‘গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় জনগণই সকল ক্ষমতার মালিক। রাষ্ট্র ও সরকারের সকল কর্মকান্ড পরিচালিত হয় জনগণের কল্যাণে। তাই আপনাদের দায়িত্ব পালনকালে জনস্বার্থ ও জনকল্যাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে।’ গত মঙ্গলবার যশোরে সেনাবাহিনীর সিগন্যাল কোরের ষষ্ঠ কোর পুনর্মিলনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে আবদুল হামিদ এসব কথা বলেন। যশোর সেনানিবাসের শহীদ ক্যাপ্টেন আব্দুল হামিদ প্যারেড গ্রাউন্ডে এই কুচকাওয়াজে রাষ্ট্রপতি সালাম গ্রহণ করেন। এর আগে খোলা জিপে চড়ে সামরিক পোশাক পরিহিত আবদুল হামিদ প্যারেড পরিদর্শন করেন। সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক আবদুল হামিদ বলেন, “মনে রাখতে হবে জনগণের কষ্টার্জিত করের টাকায়ই দেশের উন্নয়ন এবং রাষ্ট্রের যাবতীয় ব্যয়ভার মেটানো হয়। তাই জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি জনগণের সুখ-দুঃখে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। আমি আশা করি, দায়িত্ব পালনকালে আপনারা শুদ্ধাচার কৌশল যথাযথভাবে প্রতিপালন করবেন। নিজেদের দায়িত্ব সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে পালন করবেন। সরকার প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ খাতকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে উল্লেœখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ অভিজাত স্যাটেলাইট ক্লাবের সদস্য হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। বিদেশি স্যাটেলাইটের নির্ভরতা পরিহার করে ইতোমধ্যে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’ বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমে অত্যন্ত কার্যকরভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, যার সুফল দেশবাসী উপভোগ করছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে স্যাটেলাইট হাব-স্টেশন স্থাপন করে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়নে কাজ করছে, এটি পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে সেনাবাহিনীর সামগ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে একটি অনন্য মাত্রা যোগ হবে। সেনাবাহিনীর উন্নয়নে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন, ‘সেনাবাহিনীর সার্বিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি সারাদেশে দুটি সিগন্যাল ব্যাটালিয়ন, বরিশাল, সিলেট ও রামুতে তিনটি স্ট্যাটিক সিগন্যাল কোম্পানি ও চারটি ব্রিগেড সিগন্যাল কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।’ যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তির আধুনিকায়নের লক্ষ্যে ফোর্সেস গোল-২০৩০ এর আওতার সেনাবাহিনীতে সাইবার ওয়ারফেয়ার গ্রম্নপ, ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার ইউনিট, স্যাটকম ইউনিট এবং স্ট্রাটেজিক ট্রান্সমিশন ইউনিট ইত্যাদি অন্তর্ভুক্তির পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে, যা সামগ্রিকভাবে সেনাবাহিনীর সমরশক্তি ও যোগাযোগ সক্ষমতা আরো সুসংহত করবে। সেনাবাহিনীর অপারেশনাল যোগাযোগ ব্যবস্থার এই সামগ্রিক উন্নয়নকে আপনারা যথাযথ ব্যবহার করে রাষ্ট্রের প্র তিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করতে সচেষ্ট হবেন বলে আমি আশা করি। সিগন্যাল কোরের সদস্যদের উদ্দেশে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার তালিকা প্রণয়ন প্রকল্পে সিগন্যাল কোরের সদস্যরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। গৃহহীনদের জন্য আশ্রয়ন প্রকল্পসহ বিভিন্ন উন্নয়ন ও সেবামূলক কর্মকান্ডে সেনাবাহিনীর অংশ হিসেবে সিগন্যাল কোরের সদস্যদের অবদান প্রশংসনীয়।’ এর আগে রাষ্ট্রপতি প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছলে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ তাকে স্বাগত জানান। এসময় সিগন্যাল কোরের কর্নেল কমান্ডেন্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল শেখ মামুন খালেদসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে রাষ্ট্রপতি কোর পুনর্মিলনী উপলক্ষে আয়োজিত প্রীতিভোজে অংশ নেন। গত সোমবার বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে যশোর পৌঁছান রাষ্ট্রপতি। এ সফরে তার স্ত্রী রাশিদা খানমও সঙ্গে রয়েছেন।
Share on Facebook
Follow on Facebook
Add to Google+
Connect on Linked in
Subscribe by Email
Print This Post