প্রশান্তি ডেক্স ॥ টিকটক ভিডিও বানাচ্ছে শিশুরা বয়স বড়জোর তের-চৌদ্দ বছর। স্ট্যান্ডের ওপর রাখা ক্যামেরায় চোখ তার। শিশুটির সামনে দাঁড়ানো সমবয়সী আরও দুই শিশু। ক্যামেরার লেন্সে চোখ রাখা শিশুটি এক হাতে মোবাইল ফোনের বাটন চাপতেই গান বাজতে লাগল। কয়েক সেকেন্ড গান বেজে বন্ধ হতেই শিশুটি অ্যাকশন বলে চিৎকার করে উঠল। তার সামনে দাঁড়ানো শিশু দুটির একজন আরেকজনের জামার কলার ধরে ডায়ালগ বলতে বলতে সামনের দিকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে নিয়ে গেল। শিশুরা একাধিকবার পরিধেয় পোশাক ও স্থান পরিবর্তন করে ক্যামেরায় নানা দৃশ্য ধারণ করতে লাগল। দৃশ্য ধারণের সময় ভুল হওয়ায় দৃশ্যধারণের দায়িত্বরত শিশুটি অভিনেতা শিশুদের গালাগালও করল। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পুরান ঢাকার ৭-৮ জন শিশুকে ক্যামেরা, মোবাইল ও পোশাকাদি নিয়ে এভাবেই নানা অঙ্গভঙ্গিতে দৃশ্যধারণ করতে দেখা যায়। কৌতূহলবশত শিশুদের পরিচয় ও তারা কী করছে জানতে চাইলে শিশুরা জানায়, তাদের বাসা পুরান ঢাকার লালবাগের খাজে দেওয়ান এলাকায়। কেউ অষ্টম আবার কেউবা নবম-দশম শ্রেণিতে পড়ে। তারা ইউটিউব চ্যানেল খোলার প্রস্তুতি হিসেবে বিভিন্ন চলচ্চিত্রের মজাদার ডায়ালগের দৃশ্য ধারণ করে টিকটক ও লাইকি ভিডিও তৈরি করছে। পাঁচ-সাতজনের গ্রম্নপ নিয়মিত আড্ডায় বসে কীভাবে মজাদার টিকটক ভিডিও তৈরি করা যায়, তা নিয়ে তাদের পরিকল্পনা হয়। অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া তুহিন জানায়, আপাতত নিজেদের আনন্দের জন্য শুটিং করলেও ভবিষ্যতে ফেসবুকে ও ইউটিউবের মাধ্যমে টাকা রোজগারের উদ্দেশ্য রয়েছে। এগুলো করতে গিয়ে পড়াশোনার ক্ষতি হয় কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তুহিন হেসে বলছিল, পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকেই তো এগুলো করি। অনেক অভিভাবকের অভিযোগ, পুরান ঢাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য শিশু টিকটক ও লাইকি ভিডিও তৈরি করে জনপ্রিয় হওয়ার ‘বদভ্যাসে’ ঝুঁকে পড়ছে। তাদের কেউ মোবাইলে আবার কেউবা ক্যামেরায় বিভিন্ন ছায়াছবির নায়ক ও ভিলেনদের দৃশ্য ধারণ করে ইউটিউব কিংবা ফেসবুকে ছাড়ছে। এগুলো করতে গিয়ে তাদের অনেকেই পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছে।