১৯৭১ সালের সেই ১৪ই ডিসেম্বরের বিভৎস ইতিহাস আজও কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে জাতির বিবেক প্রসুত মস্তিস্কগুলোকে। যুগে যুগে এর ছোয়া অব্যাহত রয়েছে কিন্তু পরিবর্তন হয়েছে রকম ফেরে’র। আমরা সেদিনের হারানো অমূল্য রতœতুল্য বীর সেনানীদের স্মরন করি এবং বিভিন্ন খেতাবে ভ’ষিত করি এই বিশেষ দিনে। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাই না এমনকি ভাবতেও নারাজ আগামীর রতœদেরকে নিয়ে। বরং অগামীর রতœদেরকে বিভিন্নভাবে ক্ষেয় প্রতিপন্ন করি এমনকি বিভিন্ন বিভাজনে বিভাজিত করে প্রাপ্য সম্মান এবং অধিকার থেকে বঞ্চিত করি। এটাই যেন আমাদের স্বাধিকার আদায়ের উত্তরাধিকার রেওয়াজের একটি। তবে এটাও ভাবিনা যে বর্তমানের রতœগুলো আগামীর জন্য রতœ তৈরীতে বিশাল ভুমিকায় অবতীর্ণ এমনকি আগামীর করণীয় ঠিক করতে সামগ্রীক অবদানের প্রাথমিক পর্যায়ে। কিন্তু সেই ৭১এর হানাদার এবং এর দোসরদের কৃতকর্মের চলমান ধারাবাহিকতা এখনও বিরাজমান।
আমাদের বুদ্ধিজীবিরা ছিল, আছে এবং থাকবে। যুগে যুগে এর উদয় হবে এটাই স্বাভাবিক; কিন্তু এর রক্ষাকল্পে আমাদেরকেই এগিয়ে আসতে হবে। প্রাপ্য সম্মান দিয়ে এগিয়ে নিতে হবে আগামীর নতুন এক সুবর্ন ইতিহাসের জন্য। ইতিবাচক মনোভাবের মাধ্যমে বুদ্ধিজীবিদের স্বসম্মানে সম্মানীত করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। বুদ্দিজীবি বুদ্ধিজীবিই; এদের নেই কোন বিভাজনের বিভাজিত রূপ; এমনকি এদের নেই কোন বয়সের রকম ফের। তাই বয়স এমনকি বিভিন্ন বিভাজিত মানদন্ডগুলোকে ভেঙ্গে চুড়ে নতুন এক ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির বাস্তবায়ন এখনই প্রয়োজন। আর এটাই সম্ভব হবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশের উন্নয়নের শেষলগ্নে এসে স্থায়ীরূপ লাভের পূর্বে। আমাদের বিশ^াস ও আশা তিনি তাঁর তীক্ষ্ণ বুদ্ধি ও প্রসাসণিক প্রজ্ঞা এবং রাজনৈতিক দূরদর্শীতার শৃঙ্খলায়নের মাঝে আমাদের সেই ১৪ই ডিসেম্বরে হারানো ঐতিহ্য ও এর অগ্রগামী রূপরেখার বাস্তবায়ন পুনরুদ্ধার করে জাতিকে বুদ্ধিজীবি জাতিতে পরিণত করে সম্মানের আরেক স্তর অগ্রসর হয়ে ইতিহাসের পাতায় নিজের, দেশের, দলের আসন পাকাপোক্ত করবেন।
আজ বুদ্ধিজীবি দিবস ও এদেরকে স্মরণ করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার হারানো চেতনা ফিরে পাওয়া দিন। আর এই দিনেই জাতির কাছে এমনকি জাতির সম্মানীত বিভেকের কাছে আমাদের ক্ষুদ্রদের অতি উৎসাহি চাওয়া। আমরা নির্যাতন, দু;খ-কষ্ট ভুলে বাংলা ও বাংলার অগ্রগামীতাকে আরো এগিয়ে নিতে চাই। বর্তমানের ¯্রােতে আরো গতিতে এগিয়ে যেতে চাই। তাই সকল প্রতিবন্ধকতা, প্রতিকুলতা মোকাবেলায় একযোগে কাজ করতে চাই। তাই সকলকে সুযোগ বঞ্চিত না করে বরং সুযোগে সৎব্যবহার করে আগামীর কল্যাণ সুনিশ্চিত করুন। প্রতিবন্ধকতাসকল এখন দৃশ্যমান, প্রতিকুলতাসকল এখন প্রকাশিত, আর এদের সঙ্গে যারা জড়িত তারাও আজ প্রকাশিত ও দৃশ্যমান। তাই বুদ্ধিমানের বুদ্ধিদিপ্ত অঙ্গিকারের শপথে বলিয়ান হউক আমাদের আগামীর পথচলা এবং কাটিয়ে উঠুক সকল প্রতিকুলতা এবং প্রতিবন্ধকতা। বুদ্ধিমান বাধিল পাষানে ঘর এর মাহাত্ম উপলব্ধি করি এবং এই বিজয়ের মাসেই আমরা পূর্ণাঙ্গ শপথে বলিয়ান হই আগামীর আরেকটি সু-উচ্চ বিজয় সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে।
আসুন আমরা আমাদের পরস্পর বিরোধী মনোভাব এবং হিংসা – বিদ্ধেষ এমনকি পরনিন্দা অথবা নিজের স্বার্থপরতার দন্ধগুলোকে বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে এসে ভুলে যায়- ক্ষমায় পরিপূর্ণ হই এবং নতুন এক ক্ষমাশিল জাতি হিসেবে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ এমনকি দেখানো পথে এগিয়ে যায়। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ভুলগুলো শুধরিয়ে নিয়ে সামনে এগিয়ে যায়। বিজয়ের মাসেই আমাদের সকল বিভাজন এবং বিভেদ, হিংসা ও লোভ থেকে বের হয়ে আসি। আগামীর কল্যাণের তরে সামনের দিকে এগিয়ে যায়; আবার নব উদ্যমে বংলাদেশ সৃষ্টি করুক আরেকটি নতুন বিজয়ানন্দের নিষকলুষ ইতিহাস। রচিত হউক বাংলা ও বাঙ্গালীর অনাবিল ও নির্মলানন্দদায়ক এক উজ্জ্বল সম্মীলনের জাতীয়বোধ ও জাতীয় চেতনার। দুর হউক সকল অন্ধকারাচ্ছন্ন আমাবস্যা। সমুজ্জ্বল হউক আমাদের মানবীয় গুনাবলী এবং পরিস্কার হউক আমাদের বিভেক ও কলংক মাখা তিলকআটা স্থানগুলো। ঐক্যের বন্ধন ও সূদৃঢ় বৃত্তির উপর রচিত হউক আরেকটি ইতিহাস। দল, মত, পথের ভিন্নতা থেকে বের হয়ে এসে ঐক্যের নি:শর্ত বিনীসূতোর মালায় নিজেদেরকে আবদ্ধ করি। স্বার্থের দ্বন্ধ থেকে বের হয়ে এসে নি:স্বার্থের বিনিসূতোর মালায় নিজেদেরকে গেঁথে তুলি। এই হউক আমাদের অভিপ্রায়, আখাঙ্খা এবং প্রতিজ্ঞা।