প্রশান্তি ডেক্স॥ ‘যত কেজি খুশি পেঁয়াজ নিয়ে যান। দামে কম, ভিড়ভাট্টা নেই। এমন সুযোগ আর পাবেন না।’ (গত শুক্রবার) দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর মতিঝিলে বলাকা ভাস্কর্যের সামনে টিসিবির একটি পেঁয়াজভর্তি ট্রাক থেকে সুমন মিয়া নামে এক যুবক পথচারীদের উদ্দেশ্যে এ কথা বলছিলেন। মিশর থেকে আমদানি প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৪৫ টাকায় বিক্রি করার জন্য ওই ট্রাকের ওপরে ও নিচে চারজন কর্মচারী সঙ্গে নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন তিনি। কিন্তু পেঁয়াজ কেনার জন্য ক্রেতা ছিল মাত্র ৫ থেকে ৭ জন। তারা লাইন ছাড়াই ট্রাকের সামনে থেকে যত কেজি ইচ্ছা তত কেজি পেঁয়াজ নিয়ে যাচ্ছিলেন। মাত্র কয়েকদিন আগেও রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পেঁয়াজ স্বল্পমূল্যে কেনার জন্য বিশাল লাইন থাকত। একজন ব্যক্তির কাছে দুই কেজির বেশি পেঁয়াজ বিক্রি করা হত না। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় বিপুলসংখ্যক মানুষকে ঘণ্টা দুয়েক লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে। আবার শেষ হয়ে যাওয়ায় অনেককে খালি হাতে বাড়ি ফিরতে হয়। গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেয়ায় সারাদেশে পেঁয়াজের মারাত্মক সংকটে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ২৫০ টাকা পর্যন্ত দাম ওঠে। এ অবস্থা গত সপ্তাহ পর্যন্ত বিরাজ করছিল। কিন্তু গত দুই তিন-দিন যাবত বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ শুরু হওয়ায় এর হাহাকার তুলনামূলকভাবে কমেছে। এখন ট্রাকভর্তি পেঁয়াজ থাকলেও ক্রেতা না থাকাটা অনেকটা অবিশ্বাস করার মতো ব্যাপার।
টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রেতা সুমন মিডা জানান, আঢ়াই টন পেঁয়াজ নিয়ে দুপুর ১২টা থেকে ওই স্থানে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ২০ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়নি। তিনি বলেন, ‘গত সপ্তাহ পর্যন্ত সরকারিভাবে বিক্রির জন্য প্রতিদিন মাত্র এক টন দেয়া হত। কিন্তু এখন প্রতিদিন ট্রাক অনুযায়ী সর্বোচ্চ চার টন পেঁয়াজ দেয়া হচ্ছে। আগে প্রতিজনকে দুই কেজি করে দেয়া হলেও গত দু-দিন ধরে ৪ কেজি করে দেয়া হচ্ছে। আজ ক্রেতা কম। তাই ক্রেতা যত খুশি তত কেজি কিনে নিয়ে যাচ্ছে।’