ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার কাইমপুর ইউনিয়নের মন্দবাগ গ্রামে নিখোঁজের একদিন পর জান্নাত আক্তার (১০) নামের এক শিশুর লাশ গতকাল সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ির পাশে একটি বাঁশ বাগানের ঝোপ থেকে উদ্ধার করেছেন পুলিশ। পরিবারের দাবী ওই শিশুটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ শেষে খুন করে বাশঁঝাড়ের ঝোপের ভিতর ফেলে যায় ধর্ষক। তার শরীরে বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে । এ ঘটনায় তার পরিবারে চলছে আহাজারি। থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে। জান্নাত আক্তার মন্দবাগ গ্রামের রফিক মিয়ার মেয়ে। সে স্থানীয় মন্দবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী। রফিক মিয়ার এক মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে জান্নাত তাদের প্রথম সন্তান। পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, জান্নাত আক্তার গত রোববার বিকাল ৪টার পর থেকে তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। রাতে বিভিন্ন জায়গায় তাকে খুঁজা হয়। তাকে খুঁজতে মেয়েটার বাবা কুমিল্লাসহ আশে-পাশে আতœীয় স্বজনের বাড়িতে ঘুরছে। তার সাথে মোবাইল না থাকায় যোগাযোগ করা যাচ্ছেনা বলে জানায় জান্নাতের পরিবার। সারারাত খোজার পর না জান্নাতের মা বার বার মুর্ছা যাচ্ছিলেন। গতকাল সোমবার সকাল ৮টার দিকে শিশু জান্নাতের মা পুতুল আক্তার তাদের বাড়ির উত্তর-পশ্চিম দিকে কয়েকশ গজ দুরে একটি বাশঁঝাড়ের ঝোপের ভিতর খুঁজতে থাকেন। এ সময় মেয়েটিকে রক্তাক্ত দেহ মৃত অবস্থা দেখতে পায়। মেয়েকে দেখতে পেয়ে মা পুতুল আক্তার জড়িয়ে ধরে চিৎকার শুরু করেন। তার চিৎকারে বাড়ির লোকজন ছুটে গিয়ে দেখতে পায় জান্নাতের রক্তাক্ত মরদেহ। জান্নাতের মা এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। খবর পেয়ে কসবা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আবদুল করিম, কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লোকমান হোসেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে নিহতের লাশ উদ্ধার করে কসবা থানায় নিয়ে আসেন। ময়না তদন্ত করতে সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন পুলিশ। মেয়েটির মা পুতুল আক্তার বলেন, দুপুরে পুকুরে গোসল করে বাড়ির বাইরে যায় মহল্লার এক মৃতকে দেখতে । কিন্তু বিকাল ৪টার পর থেকে তাকে কোথাও খুঁেজ পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক জায়গায় খুঁজাখুঁজি করেছি। তিনি বলেন, তার স্বামীও কুমিল্লাসহ আশে-পাশের বাড়িতে খোঁজতে গিয়েছে। সকালে বাড়ির পাশেই বাঁশ ঝাড়ে একটি ঝোপ আছে। সেখানে খুঁজতে খুঁজতে এক পর্যায়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার পড়নের কাপড় ছিন্নভিন্ন ছিলো। গলায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লোকমান হোসেন বলেন, ধারণা করা হচ্ছে শিশুটিকে ধর্ষণ শেষে খুন করে বাশঁঝাড়ের ঝোপের ভিতর ফেলে যায়। তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।
কসবা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আবদুল করিম বলেন, একটি নিস্পাপ শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। তিনি বলেন, শিশুটিকে হত্যার আলামত রয়েছে। ময়নাতদন্ত করতে লাশটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হয়ে যাবে।