প্রশান্তি ডেক্স॥ বায়ুদূষণের প্রভাবে সড়কে অস্বস্তিতে হাঁটছেন পথচারীরার্ ঢাকা ও আশপাশের এলাকার বায়ুদূষণ কমাতে অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে সরকার। সচিবালয়ে গত মঙ্গলবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ সংক্রান্ত কমিটির দ্বিতীয় সভায় এই নীতিমালার খসড়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকার বায়ুদূষণ কমাতে অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়নের জন্য পরিবেশ সচিবের নেতৃত্বে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি করতে গত ২৬ নভেম্বর নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাস্তা, বিভিন্ন ইউটিলিটি সার্ভিস ও ভবন নির্মাণ, পুনর্র্নিমাণ ও মেরামত কার্যক্রম চলাকালে অস্থায়ী বেষ্টনী দিয়ে নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখার বিষয়টি নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়। ‘দ্রম্নততম সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত এবং নির্মাণ চলাকালে দিনে দুইবার পানি ছিটানোর বিষয়টিও নীতিমালায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে সভায় নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।’ ট্রাক বা লরিতে উন্মুক্ত অবস্থায় বালু, মাটি, সিমেন্টসহ অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী পরিবহণের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়েও একটি প্রস্তাব আসে সভায়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘রাস্তার পাশে পৌরবর্জ্য সংরক্ষণ ও পোড়ানো কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার ব্যবস্থা নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত হবে মর্মে সভায় জানানো হয়। ইটভাটাসহ পরিবেশ দূষণকারী ধোঁয়া নিঃসরণকারী যানবাহনগুলো বন্ধে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার কথাও নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।’ বর্ষা মৌসুম শেষে বাতাসে ধুলার পরিমাণ বাড়তে থাকে বলে শীত মৌসুমে এমনিতেই ঢাকার বাতাসের মান থাকে খারাপ। মেট্রোরেলসহ কয়েকটি বড় অবকাঠামো প্রকল্পের কাজ চলায় গত কয়েক বছর ধরে শীত মওসুমে ঢাকার বাতাসের মানের মারাত্মক অবনতি হয়েছে। এর প্রত্যক্ষ ফল হিসেবে বেড়ে গেছে নাক-চোখ ও শ্বাসতন্ত্রের অসুখ। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুরাই দূষণের কারণে ভুগছে বেশি। এই অবস্থায় এক রিট মামলার সম্পূরক আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ২৬ নভেম্বর বায়ুদূষণ কমাতে অভিন্ন নীতিমালা করার আদেশ দেয়। দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিআরটিএ ও ডেসকোর প্রতিনিধিকে নিয়ে কমিটি করে এক মাসের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয় আদালতের আদেশে। এর ধারাবাহিকতায় কমিটি যে খসড়া নীতিমালা তৈরি করেছে, তার ওপর বিস্তারিত পর্যালোচনা শেষে সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও দপ্তরের সুপারিশ নিয়ে ‘জরুরি ভিত্তিতে’ চূড়ান্ত করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয় সভায়। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ) আলমগীর মুহম্মদ মনসুরউল আলম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. ইমদাদুল হক, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ কে এম রফিক আহাম্মদ ছাড়াও কমিটির অন্য সদস্যরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।