প্রশান্তি ডেক্স ॥ মেট্রোরেল, বিদ্যুৎ লাইন, স্যুয়ারেজ লাইন ওয়াসার পানির লাইনসহ বিভিন্ন সংস্কারে চলছে এসব খোঁড়াখুঁড়ি উন্নয়ন কাজের জন্য এলাকার বেশির ভাগ রাস্তায় চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। ছবিটি রোববার রাজধানীর বাড্ডা এলাকা থেকে তোলা রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলিতে চলছে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। উন্নয়ন কাজের জন্য এলাকার বেশির ভাগ রাস্তায় চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। কোথাও মেট্রোরেল, কোথাও বিদ্যুৎ লাইন, স্যুয়ারেজ লাইন আবার কোথাও ওয়াসার পানির লাইন সংস্কারে চলছে এসব খোঁড়াখুঁড়ি। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) আওতাধীন বেশির ভাগ এলাকায় ড্রেনেজ সিস্টেম উন্নতির লক্ষ্যে অলিগলির রাস্তা খুঁড়ে বড় করার কাজ চলছে। দীর্ঘদিন ধরে এসব কাজ চলায় ভোগান্তিতে পড়েছেন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। রাজধানীর বাড্ডা এলাকার বাসিন্দা হাবিবুর রহমান পলাশ বলেন, বাড্ডায় প্রায় প্রতিটি গলির রাস্তা খুঁড়েছে সিটি কর্পোরেশন। দীর্ঘ দিন ধরে এসব কাজ চলায় খুবই ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। চলাচলের জন্য ব্যক্তিগত গাড়ি আছে, কিন্তু প্রায় তিন মাসের বেশি সময় ধরে গাড়ি বের করতে পারেন না। বাচ্চাকে স্কুলে নিয়ে যেতে হয় হেঁটে। সড়ক কেটে বড় পাইপ লাইন বসানোর কাজ চলার কারণে রিকশাও যেতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা উন্নয়ন অবশ্যই চাই, কিন্তু তাই বলে মাসের পর মাস ধরে যদি কাজ চলে তাহলে কীভাবে ভালো থাকি। এসব কাজের জন্য প্রতিদিন বায়ু দূষণের শিকার হতে হচ্ছে। এছাড়া চলাচলে ভোগান্তি তো রয়েছেই। আমরা এর সমাধান চাই। সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানিয়ে বলতে চাই দ্রম্নত এসব কাজ শেষ করে জনগণের ভোগান্তি দূর করুন।’ এ বিষয়ে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম জানান, ১০২৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নসহ নর্দমা ও ফুটপাত নির্মাণ প্রকল্প চলমান রয়েছে, যা ডিসেম্বর নাগাদ শেষ হওয়ার কথা। এসব প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ২০৬ কিলোমিটার রাস্তা, ২৮৮ কিলোমিটার নর্দমা ও ১৪৪ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণ ও উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন হয়েছে এবং আরও ২০.৪২ কিলোমিটার রাস্তা, ৩০ কিলোমিটার নর্দমা ও ৬৩.৪৬ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণ ও উন্নয়নের কাজ চলমান আছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে যানবাহন চলাচল সহজ এবং জলাবদ্ধতা হ্রাস পাবে।’ রাজধানীর নিকেতনের বাসিন্দা সাজ্জাদুল ইসলাম বলেন, ‘ড্রেনেজ সিস্টেম এবং সড়ক উন্নয়নে একালার বিভিন্ন সড়ক খোঁড়া হয়েছে, যা চলাচলের অনুপযোগী অবস্থায় আছে দীর্ঘদিন ধরে, কিন্তু কাজ শেষ হচ্ছে না। এতে আমরা পড়েছি ভোগান্তিতে, রিকশাতে চলাচল করা যায় না। উন্নয়ন কাজ করুক, আপত্তি নেই কিন্তু কাজ যদি দীর্ঘ দিন ধরে চলে তাহলে ভোগান্তির মাত্রা বেড়ে যায়।’ রাজধানীর মধ্য বাড্ডার সব রাস্তায় প্রায় তিন মাস ধরে চলছে ড্রেনেজ সিস্টেম উন্নতির কাজ। প্রথমে এসব রাস্তায় বড় ড্রেন নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর এখন চলছে ঢালাইয়ের কাজ, এরপর করা হবে সড়ক উন্নয়ের কাজ। এখানকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের সমন্বয়ক মোজাম্মেল হক বলেন, জনগণের ভোগান্তি লাঘবে সিটি কর্পোরেশন থেকে এসব কাজ করা হচ্ছে। জলাবদ্ধতা নিরসনে আগে ছোট ড্রেন ছিল কিন্তু এখন যে কাজ চলছে সেট বড় ড্রেন নির্মাণে, এরপর রাস্তা ঢালাই করা হবে। ভালোভাবে কাজ শেষ করতে একটু সময় বেশি লাগছে। এতে এলাকাবাসীর কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে ঠিকই কিন্তু বর্ষা মৌসুমে যখন জলাবদ্ধতা হবে না তখনই মানুষ এর সুফল ভোগ করবেন। এদিকে সড়ক, ড্রেন অথবা ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে যত্রতত্র নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রেখে পরিবেশ, বায়ু দূষণকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে ডিএনসিসি। বিগত কয়েক দিনে রাজধানীর নিকেতন, বনশ্রী, আগারগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঠিকাদরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও মালিককে জরিমানা করার অভিযান অব্যাহত রেখেছে ডিএনসিসি।