ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় চারগাছ এন আই ভূইয়া ডিগ্রী কলেজে এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ১৪৪ ধারার বিধিমালা লঙ্ঘন করে কলেজে ক্লাস নেয়ার অভিযোগ উঠেছে কলেজ অধ্যক্ষ মো.মফিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র কলেজ শিক্ষক ও ছাত্রদের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে। বিতর্ক তৈরি হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে এসএসসি পরিক্ষা কেন্দ্রের ১৪৪ ধারা নির্ধারীত সীমানায় কলেজের ছাত্র-শিক্ষক উপস্থিতিতে এসএসসি পরীক্ষার পরিবেশের প্রশাসনিক বিধিমালা না মানার কারনে।
জানা যায়, গতকাল উপজেলার চারগাছ এন আই ভ’ইয়া ডিগ্রী কলেজে এসএসসি পরীক্ষা চলছিলো। কলেজের সবকটি ভবন পরীক্ষা কেন্দ্রের ১৪৪ ধারা সীমানার অভ্যন্তরে। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে এই সীমানার অভ্যন্তরে পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট লোকজন ব্যাতিত বহিরাগত লোকজন সহ পরীক্ষার পরিবেশের বিঘœ ঘটে এ জাতিয় কর্মকান্ড করা যাবেনা এমন নিয়ম থাকলেও তা লঙ্ঘন করেছেন চারগাছ এন আই ভ’ইয়া ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মো.মফিজুল ইসলাম। ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এসএসসি পরীক্ষা চললেও ১০, ১৩ এবং ১৬ ফেব্রুয়ারি কলেজের পাঠদান চলবে মর্মে নোটিশ করে জানিয়ে দেন সকল শিক্ষকদের। তারই প্রেক্ষিতে ১৩ ফেব্রুয়ারি কলেজ খোলা হয় পাঠদানের উদ্দেশ্যে। এতে ছাত্র এবং কলেজ শিক্ষকদের উপস্থিতিতে এক ভিন্ন পরিবেশ তৈরি হয় এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের ১৪৪ ধারার বলবৎকৃত সীমানায়। চারগাছ এনআই ভ’ইয়া ডিগ্রী কলেজ এবং উচ্চ বিদ্যালয় একই ভবনে। ভবনের অর্ধেক উচ্চ বিদ্যালয় এবং অপর অর্ধেক কলেজ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বতমানে পাশেই নবনির্মিত আরেকটি ভবন রয়েছে। উচ্চ বিদ্যালয় এবং কলেজের ভবন মিলিয়েই এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়েই কলেজ অধ্যক্ষ এসএসসি পরীক্ষার হলের উপর তলায় কলেজ শিক্ষকদের নিয়ে জমায়েত হতে থাকেন। এমতাবস্তায় কেন্দ্র কতৃপক্ষ কলেজ শিক্ষকদের ভেতরে রেখেই গেটে তালা লাগিয়ে দেয়। পরবর্তিতে কলেজ শিক্ষকরা তালা খুলে দেয়ার কথা বললে কেন্দ্র কতৃপক্ষ তালা খুলে না দেয়ায় কলেজের শিক্ষার্থীরা এ বিষয়টিকে নিয়ে হট্রগোল করার চেষ্টা করে। নিয়ম ভংগ করে কলেজ খোলায় কলেজ শিক্ষদের মাঝেও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। জনমনে প্রশ্ন এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন কিভাবে একই ভেন্যুতে এসএসসি পরীক্ষার পাশাপাশি কলেজে পাঠদানের নোটিশ দিলেন অধ্যক্ষ মফিজুল ইসলাম।
এ বিষয়ে চারগাছ এনআই ভ’ইয়া ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ মো.মফিজুর রহমান বলেন : এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের ১৪৪ ধারা এলাকায় কলেজে পাঠদানের উদ্দেশ্যে শিক্ষক এবং ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি পরীক্ষা কেন্দ্রের আইনের লঙ্ঘন বটে। তিনি বলেন কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়েই পাঠদানের জন্য খোলা হয়েছে কলেজ।
কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি বিশিষ্ট শিল্পপতি ও শিক্ষানুরাগী মতিউর রহমান’র মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম বলেন: পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ১৪৪ ধারা সীমা লঙ্ঘন করে কলেজ খোলা যাবেনা। তাহলে পরীক্ষায় বিঘœসহ বলবৎকৃত আইনের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করা হবে। তবে বৃহস্পতিবার সকালের চারগাছ কলেজের হট্রগোলের বিষয়টি তাঁকে কেউ অবহিত করেননি। কলেজ অধ্যক্ষ গেট এবং দরজা বন্ধ করে নবনির্মিত ভবনে পাঠ দানের কথা তাঁকে জানিয়েছিলো। তিনি বলেছিলেন এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের কোন প্রকার বিঘœ হলে পাঠদান করা যাবেনা।