প্রশান্তি ডেক্স ॥ সিঙ্গাপুর ফেরত এক ব্যক্তিকে নিয়ে করোনাভাইরাস আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে টাঙ্গাইলের বাসাইলে তার নিজ গ্রামে। এ কারণে স্থানীয় এলাকাবাসীও রয়েছে উদ্বেগের মধ্যে। সিঙ্গাপুর থেকে আসার পর এলাকাবাসীর তোপের মুখে তিনি রোববার দুপুরে বাসাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠান।টাঙ্গাইলের চিকিৎসকরা তার শরীরে করোনাভাইরাসের নমুনা পাননি। এরপরও প্রবাসীর সন্দেহের কারণে পরীক্ষা করতে তাকে ঢাকায় যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।ওই প্রবাসী ব্যক্তির নাম আব্বাস আলী (৪২)। তিনি বাসাইল উপজেলার দেউলী দক্ষিণপাড়া গ্রামের শামছুল হকের ছেলে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি তিনি সিঙ্গাপুর থেকে নিজ বাড়িতে আসেন।
কাশিল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মির্জা রাজিক জানান, আব্বাস বাড়িতে এসে তার স্ত্রীকে দেশের বাইরে করোনাভাইরাস সম্পর্কে অবহিত করে। এরপর তার স্ত্রী আতংকিত হয়ে বাড়ি ছেড়ে তার বাবার বাড়ি চলে যায়। এরপর থেকেই এলাকাবাসীর মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে।পরে রোববার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনা করে আব্বাসকে অ্যাম্বুলেন্সে করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শফিকুল ইসলাম সজিব জানান, এলাকাবাসীর সন্দেহের কারণে আব্বাস আলী প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। পরে সেখান থেকে তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। তার মধ্যে করোনাভাইরাসের কোনো নমুনা জ্বর বা ঠান্ডাও নেই। তবুও তাকে ঢাকায় রেফার করা হয়।টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘তার শরীরে করোনাভাইরাসের কোনো নমুনা পাওয়া যায়নি। তার শরীরে জ্বর বা ঠান্ডা লাগার লক্ষণ নেই। এরপরও যেহেতু তিনি বিদেশ থেকে এসেছেন এবং লোকজন তাকে সন্দেহ করছে, তাই তাকে ঢাকায় গিয়ে পরীক্ষা করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।’টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. ওয়াহিদুজ্জামান জানান, সিঙ্গাপুর থেকে আব্বাস আলী যখন বাংলাদেশে আসেন, তখন তার শরীরে কোনো করোনাভাইরাসের লক্ষণ পাওয়া যায়নি। এমনকি বিমানবন্দরের স্ক্যানারেও কোনো প্রকাশ জ্বরের লক্ষণ পাওয়া যায়নি। এলাকাবাসীর উদ্বেগের কারণে এ সমস্যা হয়েছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।সিঙ্গাপুরফেরত ওই প্রবাসী বলেন, ‘আমি গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ছুটিতে আসি। বিমানবন্দরেও করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করা হয়েছে। সেখানে আমার করোনাভাইরাসে আক্রান্তের কোনো নমুনা পাওয়া যায়নি। কিন্তু বাড়ি আসার পর এলাকার লোকজন আমাকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে সন্দেহ করছে। আমার কাছেও কেউ আসছে না। আমি নিরুপায় হয়ে চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে এসেছি।’