এই দুনিয়াতে আজ ও আগামীকে নিয়ে মানুষ ব্যস্ত। অতীত বা গতকে নিয়ে কেউ আর ভাবছে না। তবে সঠিকতা যাচাইয়ের পুর্বের সকল মাপকাঠিকে বৃদ্ধঙ্গুলী দেখিয়ে আজ ও আগামীকে যুক্ত করে এগিয়ে যাচ্ছে পৃথিবী। তবে এরই মাঝখানে যারা অতিত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎতের মধ্যে যোগসূত্র রেখে সমন্বয় সাধন করে এগোয় তারাই সফল। তবে সফলার পিছনে সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছা এবং অভিপ্রায় ও দিকদর্শনই মুখ্য বিষয়। তবে কয়জনে ভাবে এই বিষয়গুলো। বর্তমানে যা দৃশ্যমান তা দেখে এবং কিয়ামতের আলামত হিসেবে বিভিন্ন কিতাবে উল্লেখিত অংশের ব্যাখ্যা ও তরজমার মাধ্যমে এই কথায় উপনিত হওয়া যায় যে, কিয়ামত আসন্ন। তবে সময় এসেছে খুবই কাছে এবং সকল পুর্বেল্লোখিত বানী বা কথার পূর্ণতা ধীরে ধীরে পূর্ণ হচ্ছে যা দেখে কিতাবী গণ বা কিতাব বিশারদগণ অনুমান এবং অনুধাবন করে নিশ্চিতই বলতে পারে কিয়ামত আসন্ন।
বর্তমানে কি হচ্ছে? নিজের উন্নয়ন ও উন্নতির তরে ইমান, আমল, বিবেক এমনকি সৃষ্টিকর্তাকেও বিসর্জন দিয়ে প্রতিযোগীতায় মানুষ এগিয়ে যাচ্ছে। সৃষ্টিকর্তা যে বিষয় কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন সেই নিষেধাজ্ঞাগুলে বেশি বেশি অমান্য করে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছেন এবং কখনো কখনো মানুষ সফলকাম হয়েছেন আবার কখনো কখনো বিপদগ্রস্ত হয়েছেন। তবে সফলকামীরা ক্ষণস্থায়ী সফলতা ভোগ করতে বেশী সময় পাচ্ছেন না। তাও আবার বিবেচনায় এমনকি জীবন জীবিকার তাগিয়ে স্মরণে রাখছেন কয়জনে। নেতিবাচকতা বা অবৈধ অর্জন এবং এর কুফলতায় ভরপুর সমাজে মানুষে মানুষে কামড়া-কামড়ি করছে এমনকি সমাজে বিদ্ধেশ ও ফ্যাতনা বেশী সৃষ্টি হচ্ছে, রাষ্ট্রে বিভেদ সৃষ্টি হচ্ছে, হানা-হানি ও মারামারিতে কলুষিত হচ্ছে শান্তির বাণি। রাষ্ট্রে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দাড়িয়েছে, ধর্ম ধর্মের বিরুদ্ধে দাড়িয়েছে। ধর্মানুসারীরা পাগলপ্রায় হয়ে একজন আরেকজনকে বিভৎষভাবে মেরে ফেলেছে। এইসকল কেন হচ্ছে বলতে পারেন?
মানবিকতা এবং পাষবিকতা একাকার হয়ে এখন নির্যাতিতার হাহাকারে পরিণত হয়ে বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। আর এই হল শেষ কালের কঠিন অবস্থার একটি আলামত মাত্র। সামনে আরো কঠিণ থেকে কঠিনতর অবস্থার সম্মুর্খীণ হতে হবে। তাই প্রস্তুত হওয়ার এখন সময়। নতুবা ইমান ও আমল থেকে বিচ্যুত হয়ে শয়তানের ফাঁদে পড়ে জাহান্নামের রূষানলে থাকা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না। সমাজে বা রাষ্ট্রে এমন কোন জায়গা নেই যেখানে ফ্যাসাদ এক মহামারী হিসেবে দেখা দেয়নি। সব জায়গায় এই ফ্যাসাদ ঘ্রাস করে বসে আছে। আমরা এই ফ্যাসাদযুক্ত সমাজে থেকেও নিজেদেরকে ফ্যাসাদের উর্ধে রেখে খোদার খোদায়ী বন্দেগীতে নিমজ্বিত থাকতে চাই। খোদার খোদায়ী বন্দেগীই পারে আমাদের সকল ফ্যাসাদ থেকে মুক্ত রাখতে; শান্তি ও স্থিতিশীলতায় পরিপূর্ণ রাখতে। রোগমুক্ত রেখে নিশ্চিন্ত আগামীর শুভ ধারায় বেহেস্তের দিকে এগিয়ে নিতে। আসুন আমরা সুস্থ্য ধারায় খোদার অভিপ্রায়ে এগিয়ে যায়। আমাদের আমিত্ব থেকে বের হয়ে এসে আগামীর তরে নিজেদেরকে বিলিয়ে দিতে প্রস্তুতি নিই যেন খোদা আমাদেরকে তার সমস্ত কাজে ব্যবহার করে পৃথিবীকে পরিপূর্ণতাই পূর্ণ করেন এবং খোদার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে শয়তান এবং এর আসক্তি মুক্ত করেন।
একটি জিনিস ঘটার পর আমরা সজাগ হই। আর ঘটার আগে সজাগ থেকে গুমিয়ে থাকি যেন ঐ অভিনাষি কর্মকান্ডগুলো নির্বিঘেœ চলতে পারে। তাই ঘটনার সঙ্গে জড়িতরাই যে শুধু দায়ি তা কিন্তু নয় বরং ঐ ঘটনার আশে-পাশের বা পরিবেশ বা সমাজের এমনকি রাষ্ট্রের দায় দায়িত্ব রয়েছে বলে প্রতিয়মান হয়। মানুষ সবসময়ই ভাল এবং আল্লাহর রূহ যতক্ষণ মানুষের মাঝে থাকে ততক্ষণ কোন খারাপ কাজ হয়ে পারে না কিন্তু যদি আমরা আল্লাহর রূহকে বসবাস করতে না দেয় তাহলে ঐ শুন্যস্থানে শয়তান বসবাস করে আমাদেরকে শয়তানীতে মত্ত রেখে সকল খারাপ বা পাপের কাজগুলো সম্পাদন করিয়ে থাকেন। তাই আমরা এখন সজাগ হওয়া উচিত। যাতে শয়তান আমাদেরকে শয়তানিতে নিমজ্জি¦ত রাখতে না পারেন।
শয়তান দ্বারা প্ররোচিত হয়ে কৃতকর্মগুলোকে আমরা খারাপ বলি কিন্তু মানুষটি খারাপ না বলি অথবা খোদার ছিফতে সৃষ্টি মানুষকে সম্মান করি এমনকি খোদাকে শ্রদ্ধা ও সম্মানে বিরাজমান রাখি। একটি খারাপিকে ঢাকতে বা শেষ করতে গিয়ে যে আরো খারাপিতে নিজেদেরকে নিয়োজিত না রাখি। খুনের বদলায় যেন খুনে মত্ত্ব না হই, চুরির বদলায় যেন চুরিতে মত্ত্ব না হয়। প্রতিশোধ পরায়ন না হওয়া এমনকি রাগান্বিত হয়ে নিজেকেও ঐ পাপের সঙ্গে এমনকি পাপির সঙ্গে সমান্তরালে না রাখার সমস্ত ব্যবস্থা জাগ্রত রাখি। যাতে আগ্নেগীরীর অগ্নোৎপাত অল্প সময়ে বরফে পরিণত হয়। যদি আমরা একে অপরের প্রতি রাগ, ক্রোধ, ঘৃণা, হিংসা-বিদ্ধেশ বন্ধ করতে পারি তাহলে আমাদের আগামী হবে নি:স্কলুষ। পৃথিবী হবে বেহেস্তের বাগান। মানুষ এই পৃথিবী থেকে বেহেস্তের স্বাদ আস্বাদন করে চিরসুখে বিদায় নিয়ে খোদার বন্দনে আবদ্ধ হতে পারবে। মধ্যপ্রাচ্যের ন্যায় ইন্ডিয়াও জ্বলছে তাই ঐ জ্বলাতে পানি ঢালতে শান্তিময় প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। উত্তেজিত হয়ে হিংসার ভরপুর হয়ে ঐ ধরণের কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। শান্তি দিয়ে, সততা দিয়ে, ধৈয্যদিয়ে, ভালবাসা দিয়ে, ক্ষমা দিয়ে পৃথিবীকে সাজিয়ে তুলতে হবে। নতুবা খোদাকে বা সৃষ্টিকর্তাকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করা সম্ভব হবে না। সৃষ্টিকর্তাকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ করার মাধ্যমেই অশান্ত পৃথিবীকে শান্ত করতে দীশা খুজে পাবে এবং পৃথিবী এবং এর অধিভুক্ত সবই শান্ত হবে। আর এই কাজের জন্য খোদা তায়ালা আমাদেরকে ডেকেছেন এবং প্রতিনিয়ন উপযুক্ত ও প্রয়োজনীয় যোগান দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
আমরা কাউকে ছোট করব না এবং উত্তক্ত করব না বরং সবাই বড় ভেবে নিজের সর্বশক্তিদিয়ে উপরে তুলে ধরব যাতে সকলে মিলেই এই পৃথিবী সুন্দর করতে পারি এবং নিরাপদে রাখতে পারি এই ধরণীতে বসবাসকারীদেরকে। ধর্ম-বর্ণ, গোত্র, পদ-পদবী, উঁচু-নীচু সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি এবং তাঁর দৃষ্টিতে সবাই সমান ও একে অন্যের পরিপূরক হিসেবে এই দুনিয়ার নিয়ামকরুপে ব্যবহারোপযোগী ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। কারো সম্পদ এবং অর্জনকে ম্লান করা নয় বরং বড় করে দেখাই হবে আমাকের আগামীর করণীয়। একটি সুন্দর আগামীর জন্য সকলের অবধানই সমান এই ভাবধারা এবং ভারসাম্যতা বজায় রাখতে হবে। কোন মানুষই ছোট নয়; কোন জাতিই ছোট নয়, কোন গোত্রই ছোট নয়, কোন ধর্মই ছোট নয়, কোন দেশই ছোট নয় বরং সবাই স্ব স্ব অবস্থান থেকে পৃথিবীর ভারসাম্যের জন্য ধারাবাহিকতা জন্য এমনকি উন্নয়ন, সম্প্রীতি, শান্তি ও স্থিতিশীলতা জন্য নিয়ামত হিসেবে কাজ করবে। উঁচু নীচু ভেদাভেদ, ধনী-গরীবের ব্যবধান গুচানোর সময় এখনই। নতুবা জলন্ত পৃথীবীর জ্বালাময়ী মনোভাবে ভাটা পড়বে না বরং এই অবস্থান উন্নয়নের জন্য আমাদেরকে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
কাউকে দোষারূপ নয়, কারো প্রতি বিদ্ধেষপূর্ণ মনোভাব নিয়ে নয়, কাউকে বহিস্কার করে নয় কাউকে ভয়কট করেও নয় বরং ভালবাসার আলিঙ্গঙ্গে জড়িয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সকল সমস্যা দূর করতে হবে। পরিবার, গোত্র, সমাজ, রাষ্ট্র এবং জাতিগত সমস্যা এমনকি ধর্মীয় উগ্রবাদীতাকে মোকাবেলার জন্য দরকার ধৈয্য, সহশিলতা, সহিষ্ণুতা,ক্ষমা, নি:শর্ত ভালবাসা এবং খোদায়ী স্বভাবের সকল চর্চা। তাই আসুন আজ ও আগামীকে আরো সুন্দর, আরো নান্দনিক, আরো কার্যকরীভাবে শান্তিপূর্ণ নিশ্চিত আগামীর স্থিতিশীল নিশ্চয়তার দিকে ধাবিত করি। সকল অমঙ্গলগুলোকে ভালবাসা এবং ক্ষমতা দিয়ে বিদুরিত করি। অন্যকে নিজের মত মহব্বত করি যাতে নিজ এবং অন্য এই দুইয়ের একীভূত ভাব ও চিন্তার বহিপ্রকাশে আগামী বিশ্ব হউক কলুষমুক্ত। জয় হউক আমাদের সকল উদারতার, মানবতার, নিতী ও আদর্শের, চিন্তা ও কাজের, ক্ষমা ও ভালবাসার। সৃষ্টিকর্তাতে পৃথিবী হউক এক ও ঐক্যের যোগ এবং মেলবন্ধন।
আজ যা দেখছি আগামীকাল তা আর দেখব না বরং প্রত্যাশা হউক শান্তি ও স্থিতিশীল সাম্যের সমাজ ব্যবস্থা। ন্যায় পরায়নতার সমতা এবং সততার আঙ্গিকে জীবনের চলমান ধারাবাহিকতার অব্যাহত যাত্র। কেউই আমরা পর নই সবাই আমরা সবার এই কথাটি প্রমানিত হউক আমাদের কাজে, চিন্তায় এবং এর বহিপ্রকাশে।