মালয়েশিয়ায় তাবলীগ জামাত থেকে ছড়াচ্ছে করোনা

প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স॥ মালয়েশিয়ায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের একটা বড় অংশই সেখানকার একটি ধর্মীয় জমায়েতে অংশ নিয়েছিলেন। গত মাসের ২৭ তারিখ থেকে চলতি মাসের এক তারিখ পর্যন্ত চার দিনব্যাপী ওই অনুষ্ঠান হয়েছিল। বার্তা সংস্থা এএফপিকে এমন তথ্য জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সেখানে স্থানীয় মুসল্লি থেকে শুরু থেকে বাংলাদেশ, ব্রুনেই, ফিলিপিন্স, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। ওই জমায়েতের পর পরই মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের কয়েকজন নাগরিক করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক নূর হিশাম আবদুল্লাহ সংবাদমাধ্যম এএফপিকে জানান, তাদের দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৪২৮ জনের মধ্যে ২৪৩ জন শ্রী পেটালিং মসজিদে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন। এমন অবস্থায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন আশঙ্কা ড্রকাশ করে বলেন, মালয়েশিয়া বড় ধরণের সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছে। এজন্য তিনি সবাইকে জনসমাবেশ এড়িয়ে চলার আহ্বান জানান। এদিকে, করোনাভাইরাস থেকে সতর্ক থাকতে মালয়েশিযার পার্লিসে জুমার নামাজ স্থগিত ঘোষণা করার পাশাপাশি ধর্মীয় মাহফিলের ক্ষেত্রেও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। মালয়েশিয়ার ওই সমাবেশে প্রায় ২০ হাজার মানুষের জমায়েত হয়। এর মধ্যে ৫০০ জনই ছিলেন বিদেশি নাগরিক।বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় বিভিন্ন মুসলিম দেশে ধর্মীয় জমায়েত থেকে শুরু করে সব ধরণের জনসমাবেশের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বাংলাদেশেও স্কুল কলেজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কিন্তু ধর্মীয় জমায়েতকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন না তাবলীগ জামাতের সদস্যরা।
বাংলাদেশ তাবলীগ জামাতের জ্যেষ্ঠ সদস্য মাহফুজুর রহমান বিবিসি বাংলাকে বলেন, ধর্মীয় সমাবেশ এড়িয়ে চলার মতো কোন পরিস্থিতি বাংলাদেশে সৃষ্টি হয়নি। তিনি বলেন, যেসব দেশে এটি বেশি ছড়িয়েছে- যেমন চীন, ইটালি, দক্ষিণ কোরিয়া- তাদের পরিস্থিতি উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো। মালয়েশিয়ার মতো আমাদের দেশে এই ভাইরাস সেভাবে ছড়ায়নি। তাই এখানে জমায়েতে তেমন কোন ঝুঁকি আমি দেখছি না। এতে ভয় করার কিছু নেই। মাহফুজুর রহমানের মতে, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি এর ভৌগলিক অবস্থানের ওপর নিভর করে। গত শুক্রবার থেকে পাকিস্তানে তিন দিনব্যাপী একই ধরণের ধর্মীয় সমাবেশ হয়। যাতে অংশ নেন কয়েক লাখ মুসল্লি। সেই জমায়েতের উদাহরণ টেনে মাহফুজুর রহমান বলেন, লাহোরের সমাবেশে লাখ লাখ মানুষ সমবেত হযয়েছে। তাদের মধ্যে ৮০টি দেশের অন্তত ৫০০০ জন বিদেশি নাগরিক ছিল । কই, ওখানে তো কোন সমস্যা হয়নি। তবে দেশের বাইরে বিভিন্ন জমায়েতে অংশ গ্রহণের বিষয়টি যার যার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের বিষয় বলে তিনি জানিয়েছেন ।
এ ব্যাপারে তিনি বলেন, সরকার খুব প্রযয়োজন ছাড়া বিদেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সতর্কতা দিয়েছেন। সরকার তো আমাদের ভালোর জন্যই এই সতর্কতা দিয়েছেন। কেউ যদি যেতে চায় সেটা তার ব্যক্তিগত বিষয়। খবর. বিবিসি বাংলা।

Leave a Reply

Your email address will not be published.