প্রশান্তি ডেক্স॥ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ সাংবাদিকদের সবসময় শ্রদ্ধার চোখে দেখে। কারণ ভাষার জন্য গণতান্ত্রিক ও স্বাধীনতার লড়াইয়ে তাদের ভূমিকা ছিল অভূতপূর্ব। অনেক সাংবাদিক বলছেন আমাদের কি সাংবাদিকতা ছেড়ে দিতে হবে! তারা ভাবছেন যারা সাংবাদিক হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ার চেষ্টা করছি আমরা তারা মনে হয় ভুল করেছি। কারণ এখানে নিরাপত্তা নেই। আর্থিক নিরাপত্তা নেই। সর্বোপরি লেখা ছাপা হবার পর মামলা হবে না, গুম হয়ে যেতে হবে না তার নিশ্চয়তা নেই। তিনি বলেন, সাংবাদিক নেতাদের দু-একজন বিত্তের দিক থেকে অনেক ওপরে উঠে গেছেন। এ পেশায় চাটুকারিতা এমন পর্যায়ে গিয়েছে যে, পেশাদার চাটুকাররাও লজ্জা পায়। গত শুক্রবার (১৩ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স হলে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছেন যে নেত্রী তাকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে। কারণ তিনি মুক্ত হলে সরকার অগণতান্ত্রিক কাজগুলো করতে পারবে না। তিনি বলেন, যে দলটি ৭২ ও ৭৫ সালে ক্ষমতায় থাকাকালে সবগুলো পত্রিকা বন্ধ করে সরকারের নিয়ন্ত্রণে মাত্র চারটি পত্রিকা রেখেছিল। আজকেও সেই দলটি ক্ষমতায় এসে ভিন্নভাবে সংবাদপত্র নিয়ন্ত্রণ ও সাংবাদিকদের নির্যাতন করছে। মির্জা ফখরুল বলেন, ডিইউজের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন যখন হচ্ছে তখন সাংবাদিকতা সম্ভবত সবার চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হচ্ছে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো রাষ্ট্রের কাঠামো ও সরকারের চারিত্রিক বৈশিষ্ট। এছাড়া প্রযুক্তির কারণেও চ্যালেঞ্জ নিতে হচ্ছে। পত্রিকায় যারা কাজ করছেন তারা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছেন। কারণ পরের দিন সকালে যখন তাদের সংবাদটি ছাপা হয় তার আগেই মোবাইল বা অনলাইনে সেই খবরগুলো পাওয়া যাচ্ছে। তিনি বলেন, এখন দেশে গণতন্ত্র নেই। একনায়কতন্ত্র ফ্যাসিবাদ দেশকে দখল করে আছে। আমরা যদি ভারতবষের দিকে তাকাই যেখানে বলা হতো গণতান্ত্রিক প্রাক্টিস আছে। সেখানেও দেখা যাচ্ছে সাংবাদিকদের গ্রেফতার করা হচ্ছে, চ্যানেল বন্ধ করা হচ্ছে, কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, গত এক দশকে গোটা পৃথিবীতে কর্তৃত্ববাদী সরকার এসেছে। এর ফলে গণতান্ত্রিক পরিবেশ আমরা হারিয়ে ফেলেছি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের দেশে গণতন্ত্রকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সারাজীবন গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন। তার মতো ত্যাগ কেউ করেনি।
ফখরুল বলেন, সময় এসেছে নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো বিভেদ ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দেশের জন্য, দেশের জনগণের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, স্বাধীনতা রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে হবে। সভা পরিচালনা করেন ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক এরফানুল হক নাহিদ। ডিইউজের একাংশের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, জামায়াত নেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, এম আব্দুল্লাহ, এম এ আজিজ, কামাল উদ্দিন সবুজ, আব্দুস শহীদ, আবদুল হাই শিকদার, সৈয়দ আবদাল আহমদ, শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।