করোনা মোকাবেলায় সরকারের নতুন নির্দেশনা জারি

প্রশান্তি ডেক্স॥ করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে সন্ধ্যা ৬টার পর ঘরের বাইরে বের হওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। এই নির্দেশ অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গত শুক্রবার চলমান সাধারণ ছুটি ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানোর প্রজ্ঞাপনে এ কথা জানানো হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এই ছুটি সাধারণ ছুটির মতো বিবেচিত হবে না উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপনে কয়েকটি শর্ত দিয়ে সেগুলো কঠোরভাবে মেনে চলতে বলা হয়েছে। এতে বলা হয়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রশমনে জনগণকে অবশ্যই ঘরে অবস্থান করতে হবে। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হতে অনুরোধ করা হয়েছে। সন্ধ্যা ছয়টার পর কেউ বাড়ির বাইরে বের হতে পারবেন না। এই নির্দেশ অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় চলাচল কঠোরভাবে সীমিত থাকবে। আর বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে কমরত সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করতে হবে। আদেশে বলা হয়েছে, জরুরি পরিসেবার (বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট ইত্যাদি) ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা প্রযোজ্য হবে না। কৃষিপণ্য, সার, কীটনাশক, জ্বালানি, সংবাদপত্র, খাদ্য, শিল্প পণ্য, চিকিৎসা সরঞ্জামাদি, জরুরি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন এবং কাঁচা বাজার, খাবার, ওষুধের দোকান ও হাসপাতাল এ ছুটির আওতার বাইরে থাকবে।জরুরি প্রয়োজনে অফিস খোলা রাখা যাবে জানিয়ে ছুটির আদেশে বলা হয়েছে, প্রয়োজনে ঔষধশিল্প, উৎপাদন ও রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানা চালু রাখতে পারবে। মানুষের জীবন জীবিকার স্বার্থে রিকশা-ভ্যানসহ যানবাহন, রেল, বাস সার্ভিস পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে। জনগণের প্রয়োজন বিবেচনায় ছুটিকালীন বাংলাদেশ ব্যাংক সীমিত আকারে ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষাপটে সরকার প্রথম দফায় ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সব অফিস আদালত বন্ধ রেখে সারা দেশে সব ধরনের যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। সেই সঙ্গে সবাইকে যার যার বাড়িতে থাকার নির্দেশ দেওয়ায় বিশ্বের আরও অনেক দেশের মত বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষও ঘরবন্দি দশার মধ্যে পড়ে, যাকে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বর্ণনা করা হচ্ছে ‘লকডাউন’ হিসেবে। সরকারি ভাষায় সেই ‘ছুটির’ মেয়াদ এরপর বাড়িয়ে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। পরে তৃতীয় দফায় সেই ছুটি ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এর আগে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার ১৭ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ১ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়। অফিস-আদালত বন্ধ ঘোষণার পর সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটির মেয়াদ ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই ছুটি আরও দীর্ঘায়িত হচ্ছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published.