করোনার করুনায় এখন বিশ্ব

বিশ্ব এখন কাতরাচ্ছে করুনার আশায়। তবে করোনার করুনা পাব কিনা জানিনা তবে খোদার করুনা পাওয়ার নিশ্চয়তা ১০০শত ভাগ নিশ্চিত। আমরা করোনা থেকে বাঁচতে মরিয়া হয়ে ছুটে বেড়াচ্ছি এখান থেকে ওখানে। তবে খোদার করুণায় শতভাগ বেঁচে থাকার নিশ্চয়তা নিতে বা দিতে কেন জানি অনিহা বা অপারগতা প্রকাশিত হচ্ছে তাও বোধগম্য নহে। বিনামূল্যে খোদার দান সকলের জন্য উন্মক্ত তাই বিনামূল্যের দান গ্রহন করে বিশ্বাস ও নির্ভরতায় জীবন চললেই করোনামুক্ত থাকা যাবে। করোনা আতঙ্কের মধ্যে আমার শৈশবের একটি খেলার কথা মনে পড়ে; আশা করি সকলেই এই খেলাটি খেলেছেন বা এর সম্পর্কে জানেন- কানামাছি খেলা বা লুকোচুরি খেলা (কেউ কেউ একে আবার বলে থাকেন পলাপলি খেলা)। বিশ্ববাসী এখন এই পলাপলি খেলায় মেতেছেন শুধু করোনা থেকে বাঁচার আশায়। বলতে পারেন কত বাঁচবেন? অনাকাংখিত হলেও মৃত্যু অনিবার্য এবং একদিন মরতেই হবে। তবে কেন এত মরণের ভয়। ভয়কে জয় করার আশায় আমরা মৃত্যুকে ফাঁকি দিতে পারি না বরং মৃত্যুকে আলিঙ্গন করেই বেঁচে থাকার লড়াইয়ে অংশগ্রহন করতে হবে। অদৃশ্য করোণাকে বিতাড়িত করতে দৃশ্যমান ঐক্য এবং খোদা প্রদত্ত জ্ঞান ও বুদ্ধি বিবেচনার আলোকে সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্যে থেকেই আগামীর বিশ্বকে করোনামুক্ত করে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজমান রাখতে হবে।
একটি বিষয় এখন স্পষ্ট যে, অদৃশ্য করোনা সৃষ্টিকর্তার একক ক্ষমতা ও সৃষ্টিকে এককাতারে দাঁড় করিয়েছে। সৃষ্টির মধ্যে সৃষ্টিকর্তার এবাদতের যে বিভাজন তাও দুর করে এক সৃষ্টিকর্তার এবাদতের কাঠামোয় অগ্রসর হতে সহযোগীতা করে যাচ্ছে। কোন ঘরে সৃষ্টিকর্তা বন্দি হননি এমনকি কোন স্থানেও তিনি বসবাস করেননি বরং সৃষ্টিকর্তার ঘর হলো মানুষের অন্তর বা হৃদয় ও দেহে। তাই সৃষ্টিকর্তা বসবাস করেন তাঁরই সৃষ্টি; সৃষ্টির সেরাজীব আশরাফুল মাখলূকাতের অন্তরে। এই অন্তর এবং অর্ন্তযামী খোদা এখন সসগ্র বিশ্বকে বুঝাতে চাচ্ছেন যে, তিনি কোন ধর্মের মধ্যে আবদ্ধ নহেন বরং তিনি সর্বত্র এবং সর্বজ্ঞ বিরাজমান। যে যেভাবে খোদাকে ডাকেন এবং অনুসরণ করেন খোদা তায়ালা সেইভাবেই তাদের ডাক শুনেন ও প্রয়োজনীয় যোগান দেন। রোজা রাখুন, তৌবা করুন এবং স্বচ্ছ ও সুন্দর এমনকি পরিচ্ছন্ন জীবনে ফিরে আসুন; সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্যে থাকুন ও তাঁরই অভিপ্রায় বুঝে চলুন। সৃষ্টিকর্তার পবিত্রতায় পবিত্র হউন এবং পবিত্র জীবন নিয়ে পৃথিবীকে পবিত্র করার কাজে নিজেকে নিয়োজিত করুন। করোনা বিতারণের একমাত্র মত ও পথ হলো সৃষ্টিকর্তার আসক্তি এবং খোদায়ী জীবন যাপন।
করোনা নিয়ে যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে তার নিরসনকল্পে অগ্রসর হওয়ার সময় এখনই। নতুবা করোনাতঙ্কে এর বিস্তার লাভ নিরভে ও নিভৃত্তে এগুতে থাকবে। বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ জনগণের সঙ্গে আলাপচারিতায় বের হয়ে আসে ঐসকল বিভ্রান্তি ও নেতিবাচক ভিতিকর ভেতরের কথা। কারণ করুনায় আক্রান্ত ব্যক্তি বা তার পরিবার; সরকার এবং জনগণের কাছে লুকায়ে করোনাকে বৃদ্ধিপেতে সাহায্য করে যাচ্ছে। কারণ তাদের মধ্যে এমন একটি ভিতির সঞ্চার হয়েছে যে, যদি সরকার বা প্রশাসন জানতে পারে যে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তাহলে তাদেরকে এক ঘরে করে ফেলবে এমনকি যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদেরকে ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলবে; আর যারা এখনও আক্রান্ত হননি বা শরীরে করোনার বীজ বহন করে চলছেন তাদেরকে বন্দি করে রেখে মেরে ফেলবে। এই মিথ্যা তথ্যের আলোকেই এখন করোনা সক্রমন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে গ্রামে-গঞ্জের মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেও কাউকে জানাতে চাইছে না এমনকি অন্য রোগের নাম বলে করোনাকে বয়োবৃদ্ধি পেতে সাহায্য করছে এবং নিজের ও দশের এমনকি দেশের ক্ষতির কাজে লিপ্ত রয়েছে। তাই এই মিথ্য ও ভুল কথাগুলো বা চিন্তা থেকে সাধারণ মানুষকে বের করে সত্যের সামনে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা আশু প্রয়োজন। আর যদি সত্যকে সামনে এনে জনগণকে বুঝাতে অক্ষম হয় তাহলে লুকানো লুকোচুরি খেলার চ্ছলে বাংলাদেশ ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে বৈকি?। মিথ্যা আতঙ্কের কারণেই মানুষ দিশেহারা হয়ে লুকুচ্ছে বা করোণাকে নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
এবার আসা যাক করোণার বিনাশে খোদায়ী জ্ঞান ব্যবহারের সিমাবদ্ধতায় এখন বিশ্ব। কেন আমরা খোদায়ী জ্ঞান ব্যবহার করে করোনাকে থামাতে পারছি না? কারণ একটাই ; আর তা হলো সাহসের অভাব বা করোনা ভীতিতে জ্ঞান ব্যবহারের সিমাবদ্ধতায় আবদ্ধ হয়ে লক্ষ্যে পৌঁছতে পিছপা হওয়া। তবে সাধরণ জ্ঞানে বা গভেষনাহীন ভাবে এমনকি একবারে অজ্ঞ ধারণার মাঝখানেও বলা যায় যে, সাধারণ সাবান বা সাবানের ফেনায় এমনকি এলকোহলে যদি করোনাকে থামানো যায় অথবা করোনার জীবানুকে ধ্বংস করা যায় তাহলে কেন এলকোহল বা সাবান তৈরীতে ব্যবহৃত উপাদান ব্যবহার করে করোনা আক্রান্ত রোগীগে সুস্থ্য করা যায় না? অথবা ঐসকল উপাদান ব্যবহার করে করোনার বিতারণ করা যায় না? একটু ভেবে দেখবেন কি? সাবানের ফেনা বা এলকোহল দিয়ে মানুষের ভিতরের অংশকে কিভাবে ওয়াস করে করোণা উপশম করা যায়? একজন বিষপান করা রোগীকে যদি পেট বা পাকস্থলি অথবা ভিতরের অংশ ওয়াশ করে সুস্থ্য করা যায় বা বিশের বিষাক্ততা বের করে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো যায় তাহলে করোনা থেকে কেন নয়? আমি ডাক্তার ও লেখাপড়া জানা কোন জ্ঞানী মানুষ নয় বরং একজন অতি সাধারণ জ্ঞান পিপাসু আশাবাদি মানুষ। আর এইসকল হলো আমার ক্ষুদ্র চিন্তার একটি সরল প্রশ্ন মাত্র। আশা করি এইসকল প্রশ্নের আলোকেই অথবা জ্ঞানী ও বিজ্ঞজনের নতুন নতুন প্রশ্ন এবং এর উত্তরণের মাধ্যমে আমরা করোনাকে বিতারিত করতে পারি। কারণ খোদা আমাদের ব্যবহার করেই বিশ্বকে করোনামুক্ত করবেন এবং তাঁর চিরস্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশিলতা বিরাজমান রাখবেন।
আমাদের সরকার এবং সরকার প্রধান মরণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জনগণের সুরক্ষায়। তবে এটা তাদের দায়িত্ব এবং এই দায়িত্ব তারা পেয়েছে স্বয়ং খোদার কাছ থেকে। তাই তাদের স্বীয় জ্ঞানে এবং বিজ্ঞজনের পরামর্শের মাধ্যমে জনগণকে রক্ষায় যে সকল পদক্ষেপ নিয়েছেন তার শতভাগ পালন করাই এখন জনগণের কর্তব্য বা ফরজে আইন হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি সরকার এও প্রকাশ করেছেন যে, আগামীর বিশ্বব্রাক্ষান্ডে সচল অর্থনীতিকে বেগবান করতে যুগান্তকারী যেসকল পদক্ষেপ নিয়েছেন তা কার্যকরে শতভাগ সততা এবং আন্তরিকতা এমনকি এর বাস্তবায়নে প্রক্রিয়াগত নজরদারি অব্যাহত রাখা এখন সময়ের দাবী। সরকারকে সাধুবাদ জানাই যে, দুরদর্শী চিন্তা এবং কর্মের সমন্বয়ের জন্য। যা অতিব জরুরী ছিল এবং তাই সাহসিকতার সঙ্গে প্রকাশ করেছেন। সীমিত সামর্থের মধ্যেও উচ্চভিলাসী স্বপ্নের বাস্তবায়ন দেখতে প্রকাশিত সকল পদক্ষেপকে বাস্তবায়নে সহযোগীতা করাই হলো দেশের আপামর জনসাধারণের নৈতিক দায়িত্ব। এই দায়িত্ব পালনে অবহেলার কোন অবকাশ নেই। আমরা স্ব স্ব অবস্থান থেকে এই দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার অঙ্গিকারে আবদ্ধ হই। সরকার এবং দেশ ও জনগণকে বিজিত করে গৌরবের অংশীদার হই। বিশ্বকে নতুন করে তাক লাগিয়ে নতুন ইতিহাসের জন্মদাতা হিসেবে স্বীকৃতি অর্জনে প্রস্তুত হই।
বিখ্যাস সেই গানের কলিগুলো আজ আবার স্মরণ করিয়ে দিতে চাই- মানুষ মানুষের জন্য; জীবন জীবনের জন্য। তাই মানুষ হতে মানুষের বিচ্ছিন্নতা কাম্য নয়। জীবন হতে জীবনের বিচ্ছিন্নতা কাম্য নয়। সুতরাং মানুষ মানুষের প্রয়োজনে; জীবন জীবনের প্রয়োজনে কাজ করতে হবেই। এগিয়ে যেতে হবে মানুষ এবং জীবনকে একসঙ্গে নিয়ে। তাই সাধুবান জানাই ডাক্তার, পুলিশ, আর্মী, র‌্যাব, সংবাদকর্মী, সাহায্যকারীগণ এবং সরকারকে। তাদের অনুকরণে মানুষ মানুষের জন্য; জীবন জীবনের জন্য এক অনন্য দৃষ্টান্ত বহন করে এগুচ্ছে। আসুন আমরাও তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে আমাদের স্ব স্ব দায়িত্বগুলো খোদায়ী জ্ঞানে এবং খোদার অভিপ্রায়ে ব্যবহার করি। পৃথিবী এখন শেষ সীমার কাছাকাছি আর এই সময়ে ঈসার আগমনের ঝংকার ও হুংকার ধ্বনীত হচ্ছে- আর ঈসার সঙ্গে হাত মিলানো মানুষ সরাসরি বেহেস্তে যাওয়ার সুযোগও হাতছাড়া হচ্ছে। তাই হাত মিলানোতে ভয় নেই বরং মৃত্যুকে জয় করার ১০০ভাগ আশা আছে। সেই আশায় এখন বুক বেধে এগুয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published.