এই দিনটি বা দিবসটি প্রতি বছরের ন্যায় এবারও এসেছে মানব সভ্যতার ভিতকে নাড়া দেয়ার জন্য। তবে এবারের আগমন একটু ভিন্ন প্রকৃতির ও ভিন্ন স্বাদের। এই দিবসটিকে কেন্দ্র করে আর শ্রমবিহীন থাকার প্রয়োজন ব্যতিরেখেই হাজির হয়েছে পৃথিবীর জাগ্রত বিবেকের সামনে। তবে সবই হয়েছে প্রকৃতির একটি নেতিবাচক উপহারসূলভ ভীতির কারণে। তবে মানুষ শ্রম দিবে বা কাজ করবে এটাই স্বাভাবিক। সৃষ্টিকর্তা নিজেও এই কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তাই তিনি বলেছেন যারা কাজ করে তারা বেতন পাবার যোগ্য। আর যারা কাজ করেনা তারা যেন না খেয়ে থাকুক। সৃষ্টিকর্তার এই কথাগুলো আজ থেকে প্রায় দুই হাজার পাঁচশত বছর আগেই আমাদের জন্য বলে রেখেছেন। যাতে আমরা জীবনে চলতে ও বুঝতে অথবা কাজ করতে সহজ হয় এমনকি জীবন পরিচালনার ক্ষেত্রে শতভাগ স্বচ্ছভাবে সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছানুযায়ী জীবন অতিবাহিত করতে পারি।
অপরদিকে সৃষ্টিকর্তা এও বলে রেখেছেন যে, যারা এখন মালিক তাদেরও একজন মালিক আছে ভেবে কর্মচারীর উপর যেন ন্যায় বিচার করেন। প্রাপ্য অধিকারটুকু পুরিপুরো বুঝিয়ে দেন। শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকোনোর আগেই যেন তাদের প্রাপ্য মুজুরী বুঝিয়ে দেন। এই আদেশগুলোই আমাদের সভ্যতার মানদন্ডকে খোদায়ী ইচ্ছার বহি:প্রকাশে সহায়তা করে। আর এই মানদন্ডেই পৃথিবী পরিচালিত হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে এর ভিন্নতাও পরিলক্ষিত হয়; তাই সৃষ্টিকর্তা সেই ভিন্নতাকে সঠিক অবস্থানে ফিরিয়ে আনতে এমনকি ন্যায় বিচারকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আমাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করেন এমনকি পৃথিবীর বা প্রকৃতির ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে রাখেন। তাঁর সর্বময় ক্ষমতার চীরস্থায়ীভাব বজায় রাখেন।
বর্তমানেও হচ্ছে তাই। তবে মানুষকে রক্ষায় সৃষ্টিকর্তা নিজেই যথেষ্ট এবং তার রহমত ও সুরক্ষায়-ই আমাদের সঙ্গি হয়ে আছে। আর আমরা এই সুররক্ষায় আমাদের জীবন আগামীর পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। এই শ্রমদিবসকে কেন্দ্র করে আমার সবাই সমান এই মর্মবানীকে প্রাধান্য দেই। মালিক ও শ্রমিকের মধ্যে কোন ভেদাভেদ নেই এই মুলমন্ত্রে উজ্জীবিত হই। উঁচু নীচু ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আমরা মানুষ এবং সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে নিজেদেরকে সুপ্রতিষ্ঠিত করি। সৃষ্টিকর্তার দৃষ্টিতে আমরা সবাই সমান এবং সবার জন্যই সৃষ্টিকর্তার ভালবাসা ও রহমত এবং ক্ষমা একই মাপকাঠিতে পর্যবসিত হচ্ছে এবং হবে। তাই আমরা কোন ভেদাভেদে নিজেদেরকে আর নষ্ট না করি। আমাদের গুনাবলীগুলোকে আর বিকশিত হতে বাধাগ্রস্ত না করি। বর্তমান বিশ্বে আলোড়নকারী করোনার শিক্ষায় আমরা নিজেরা নিজেদের হারানো ঐতিহ্য এবং জ্ঞান বুদ্ধিকে পুনরুদ্ধার করি। সৃষ্টিকর্তার অভীপ্রায় বাস্তবায়ন করে সামনের দিকে অগ্রসর হই।