করোনা নিয়ে এখন কারো মাথাব্যাথ্যা নেই বরং মাথাব্যাথা হচ্ছো কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য এবং আগামীর দিনগুজার নিয়ে। কি খাবে, কিভাবে পরিবারের যোগান দিবে, যাদের চাকরি চলে গেছে তাদের আবার কোথায় চাকুরী হবে এই ভেবে; যাদের চাকুরী এখনও আছে তাদের আর কতদিন চাকুরী টিকে থাকবে। সামনের দিনগুলিতে যে সংকট ঘণীভূত হয়ে আসছে তা কিভাবে উৎরাবে। এই ভেবেই মানুষ দিশেহারা।
তবে আশার কথা হলো বাংলাদেশের মানুষ করোনার চেয়েও আরো মরণঘাতি প্রতিকুলতার সঙ্গে সংগ্রাম করে বড় হয়েছে এবং প্রতিনিয়তই রোগ জিবানুর সঙ্গে যুদ্ধ করে জীবন সংগ্রামে জয়ী হয়ে পৃথীবি জয়ের নেশায় মত্ত রয়েছে। তবে করোনা আমাদের দেশের মানুষকে তেমন ক্ষতি করতে পারবে না বরং করোনার যে ভীতি ছড়ানো হচ্ছে তার কারণে মানুষের মৃত্যু অবধারিত হচ্ছে। এই রোগের তীব্রতা থেকে এই দেশের মানুষ নিজেদেরকে নিজ নিজ চেষ্টায় রক্ষা করেছে এবং যারা এই পর্যন্ত মৃত্যুর খাতায় নাম লিখিয়েছে তাদের মৃত্যুর জন্য দায়ী অপপ্রচার এবং ভীতি ছড়ানো। কেউ মারা গেছে অন্যান্য রোগের উপসর্গের কারণে; আবার কেউ মৃত্যুবরণ করেছেন করোনা ভীতির কারণে। তবে কেউ কেউ আবার করোনা ভীতির কারণে হার্ট এ্যাটার্কেও মৃত্যুবরণ করেছেন। যে যেভাবেই মৃত্যুবরণ করুন না কেন এই দায় কিন্তু গিয়ে ঠেকেছে করোনা নামক অদৃশ্য ভাইরাসটির উপর। তবে আমাদের দেশে এই ভাইরাসটি ভয়াল রূপলাভ করতে পারেনি। কারণ আমাদের দেশের মানুষ ঐ করোনার চেয়েও আরো শক্তিশালী। তাই এই ভাইরাসটি নিজে বাঁচার জন্য এদেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরী করেছে মাত্র। আক্রান্ত এবং মৃত্যুর তালিকা দেখে এমনকি মৃত্যুর পেছনের কারণ বিশ্লেষণ করেই তা সহজে অনুমান করা যায়। তবে বিভিন্ন জরিপের ফল বা বিশ্বব্যাংকের গভেষনার ফল এমনকি বিবিসি এর জরিপের ফলেও এমনই ধরণের আভাস মিলেছে।
এই করোনায় যারা এখনও নিজেদেরকে শুদ্ধ করেননি বরং নোংরা কাজে এমনকি দুনিয়াবী লোভ লালসায় জড়িয়ে রয়েছে তাদের জন্য বলার আর কিছু নেই। কারণ তারা বলা, শোণা এমনকি উপলব্দি ও অনুভব করার অনেক উদ্ধে উঠে গেছেন। তাদের মৃত্যুভয় এমনকি পরকালের হিসেব নিকেশ সবকিছুই শেষ হয়ে গিয়েছে। তবে যারা এখনও ঐসকল কাজকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে যাচ্ছেন এবং স্বচ্ছ ও সুন্দর জীবন-যাপন করে আগামীর কল্যানের তরে এগিয়ে যাচ্ছেন তাদের সকলের জন্য বিধাতার বিধান উপযুক্তভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তাই দেশ, সরকার এবং জনগণ একযোগে আগামীর কল্যাণের তরে এগিয়ে যাচ্ছে। সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে ন্যায়ের পৃথিবী সাজাতে যারা ব্যস্ত রয়েছে তাদের মঙ্গল কামনায় মানব সভ্যতা ও সৃষ্টিকর্তা স্বয়ং আশির্বাদ করে যাচ্ছেন।
সময় এসেছে করোনা সংস্কৃতিকে বিসর্জন দেয়ার; সোস্যাল মিডিয়ার সতর্কতামূলক প্রচারণার বাইরে কোন ভীতিসঞ্চারমূলক প্রচারণা বন্ধের। করোনাকে নিয়ে মাতামাতি না করে বরং আগামীর বিশ্বকে কিভাবে ইতিবাচকভাবে সহযোগীতা করা যায় সেইদিকে লক্ষ্য দেয়া জরুরী। করোনার কারণে যে ক্ষতির সম্মুক্ষিন হয়েছি সেই ক্ষতি পুষিয়ে চলমান উন্নয়নের গতিপ্রবাহ অব্যাহত রাখার প্রয়াসে যুগোপযোগী পদক্ষেপ নেয়ার এখনি সময়। কথায় নয় কাজে নিবেদিত হওয়ার; বিবেদ নয় বরং ঐক্যের সম্মিলনের যোগসূত্র সমৃদ্দিকরণে এগিয়ে যাওয়ার সময় এখন। দোষ ত্রুটি ও খোদ ধরা নয় বরং সহযোগীতা করার সময় এখন। তাই সকলে আমরা সকলের তরে এই স্লোগানকে সামনে রেখে বৈশ্বিক দূর্যোগ মোকাবিলায় দৃঢ় মনোবলে প্রস্তুত হওয়ার সময় এখন।
ত্রাণ এবং সাহায্য এই দুইয়ের সংমিশ্রণে যে ফারাক এখনও রয়েছে সেগুলো মোকাবেলা করে নতুন এক অভিন্ন দৃষ্টান্ত স্থাপনের সময় এখন। স্বচ্ছ এবং নিরপেক্ষ ও খোতবিহীন কাজ কেউই করতে পারে না এমনকি পারবে না তবে যত কম খোত ও অস্বচ্ছতা দেখা যাবে ততই মঙ্গল সাধিত হবে। স্বয়ং খোদা ছাড়া আর কেউই নিখুত কাজ করতে পারেন না এটা প্রমানীত সত্য। তবে খোদার ন্যায় স্বচ্ছতা ও ন্যায়পরায়নতা এমনকি নিখুত কাজের বাস্তবায়নের জন্য অব্যাহত চেষ্টাই আমাদেরকে সফলতার নতূন দিগন্তে পৌঁছতে সাহায্য করবে। সমালোচনা নয় বরং সহযোগীতায় নিজেদেরকে নিয়োজিত করি। আগামীর জন্য যে কল্যাণ ও মঙ্গলবার্তা অপেক্ষা করছে সেই দিকে নিজেদেরকে মনোনিবেশ করিয়ে বাস্তবের সঙ্গে সম্পৃক্ত করে কথা কাজ ও চিন্তার সমন্বয় ঘটিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাই। সফলতা আমাদের আসবেই।
লকডাউন প্রত্যাহার করে স্ব স্ব কর্মে ফিরে গিয়ে সামাজিক দুরত্বের বলয়কে আরো দৃঢ় করে পরিবার, সমাজ তথা দেশ গঠতে তৎপর হই। স্কুল কলেজ অফিস আদালত এবং স্ব স্ব ধর্মীয় উপাসনালয়ে; সবখানেই সামাজিক দুরত্বের স্বায়ী ব্যবহার অভ্যাসে পরিণত করি। করোনাকে ভয় নয় বরং বিতারণে একে অন্যকে সহযোগীতা করি। এই রোগটিও অন্য আট-দশটি রোগেরই মত তবে এটি দ্রুত বিস্তার লাভকারী; যাকে বলা যায় ছোয়াছে রোগ। তাই এই রোগের দ্রুত বিস্তার রোধে সকলেই সকলের দায়িত্বটুকু যথোপযুক্তভাবে পালন করি। করোনা রোগীকে ঘৃণা এবং ভয়ের উপকরণে পরিণত না করি বরং একে অন্য আট দশটা রোগীরই মত মনে করে সেবা যতœ করি যাতে মানুষের মধ্যে যে ভীতির সঞ্চার হয়েছে তা দূরভীত হয় এমনকি শেষ প্রস্থানে সকলের উপস্থিতি সুনিশ্চিত হয়। ঘৃণা এমনকি ভয়ের কারণে প্রীয়জনকে গোপনে বা হেন তেনভাবে বিদায় বা দাফন কাফন করা না হয়। যে যাই বলুক আমরা ঐ সংস্কৃতির উদ্ধে উঠে বিশ্বকে তাক লগিয়ে দিতে চাই করোনা জয়ের ইতিহাস দিয়ে। করোনা সংস্কৃতির নেতিবাচকতাকে ইতিবাচকতা দিয়ে হারানো সংস্কৃতি এবং সভ্যতাকে ফিরিয়ে এনে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর আরেকটি উপমা হয়ে থাকতে চাই। তাই চেতনায় ফিরে আসুক মানবতা, সভ্যতা, সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় আবেগ অনুভুতি ও সকল নিয়ম-কানুন। ভয়কে জয় করার সকল সাহসি ও দৃঢ় মনোবল। এই হউক করোনা সংস্কৃতির উদ্ধে উঠে বিশ্ব জাগানো বীরের জাতি হিসেবে বাঙ্গালী জাতির পরিচয়।