ভালবাসা প্রকাশের সময় এখন

করোনা যুগের সুচনা থেকেই ভালবাসা প্রকাশের সুযোগ অব্যাহত রয়েছে। তবে কেউ কেউ ভালবাসা প্রকাশে এগিয়ে এসেছে আবার কেউ কেউ লুকিয়ে বেড়াচ্ছে। তবে যারাই ভালবাসা প্রকাশে এগিয়ে এসেছেন এবং ক্ষমা ও ভালবাসার সংমিশ্রনে কাজ করে যাচ্ছেন তাদের জন্য সৃষ্টিকর্তার ক্ষমা এবং ভালবাসা পর্যাপ্ত পরিমাণে অব্যাহত রয়েছে। রমজান মাসেও ক্ষমা এবং ভালবাসা পাওয়ার উপযুক্ত সময়; যা খোদার কাছে মুসলিম জাহানের মানুষ পেয়ে যাচ্ছেন। তবে কারা কারা পেয়েছেন তার হিসেব মিলানোই জটিল। খোদার ভালবাসা ও ক্ষমা পাওয়ার জন্য দরকার তৌবা করে বা ভুল স্বিকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করা, অন্যদের ক্ষমা করা এবং ভালবাসা প্রকাশ করা। করোনা যুগে যারা ঘৃণা এবং ক্রোধ নিয়ে এমনকি অহংকার নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তাদের জন্য খোদার ভালবাসা এবং ক্ষমা পাওয়ার আশা একেবারেই কম; তবে খোদা ইচ্ছা করলে পেতেও পারেন। তবে যে যত বেশী ভালবাসা প্রকাশ করবে এবং ক্ষমা প্রদর্শণ করবে তত বেশী খোদার ভালবাসা পাওয়া যাবে।
বিস্ময়ের বিষয় হলো করোনা যুদ্ধে ভালবাসা প্রকাশের ক্ষেত্রে বিরম্বনার স্বীকারই বেশী হচ্ছে। নিজের প্রাণ বাঁচানোর আশার ক্ষমা ও ভালবাসা প্রকাশের ক্ষেত্রে বিস্তর ফারাক বা দূরত্ব তৈরী হচ্চে। ঘৃণার পাল্লা ভারী হচ্ছে। ভয় ও ভীতির মধ্যে এক অস্তিরতা বিরাজ করে যাচ্ছে। আস্থাহীন অবস্থার দৃশ্যমানতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। ডর- ভয়হীনতার পরিবর্তে ভীতিকর পরিস্থিতির মধ্যদিয়ে সমাজ, সংসার, দেশ ও জাতি এগিয়ে যাচ্ছে। শয়তানের আক্রমনের স্বীকারে পরিণত হচ্ছে ভয়ের রাজ্য। আর ঐ আক্রমণ থেকে বেঁচে থাকার আশায় মানুষ এখন মৃত্যুর কাছ থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে এবং নিজেদেরকে স্বার্থপরতায় আবদ্ধ করে লুকিয়ে আছে। তবে যারা এখনও ভয়হীনতার উদ্ধে উঠে মানব সেবায় নিয়োজিত এমনকি ক্ষমা ও ভালবাসায় পরিপূর্ণ তাদের জন্য খোদার আশির্বাদ উপর্যুপুরীভাবে অর্বাহত রয়েছে।
সরকারের নেয়া পদক্ষেপগুলো একে একে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন আমাদের দেশের সেবার কাজে নিয়োজিত মানুষগুলো। তবে ঐ সেবায় সেবিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। তবে মানুষকে সন্তুষ্ট করার মত সাধ্য কারো নেই এবং সেই তুলনায় সরকারেরও নেই। তারপরও নূন্যতম চাহিদার যোগানে কাজ করে যাওয়া মানুষগুলোকে অভিনন্দন ও সাধুবাদ জানাই। আমি বিশ্বাস করি খোদার সৃষ্টি মানুষ আমরা আর আমাদের যোগানদাতা খোদার যোগানেও কখনো কখনো আমরা অতৃপ্ত বা অসন্তুষ্ট থাকি। তাই এই অসন্তুষ্টির জন্য কোন দু:খবোধ নয় বরং সরকারের নেয়া পদক্ষেপগুলো সঠিকভাবে মানুষের কল্যাণে ব্যবহারের কাজে নিরলসভাবে পরিশ্রম করাই এখন জরুরী। কে কি বলল বা লোকে কি বলবে তা না ভেবে নিজের মনের সন্তুষ্টিই এখন সঠিক পথ বলে বিবেচিত। সরকারকে ধন্যবাদ জানাই, কারণ সাধ্যের চেয়েও বেশী যুগোপযোগী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে জনগণ ও বাংলার কল্যাণে এবং টিকে থাকার সংগ্রামে জয়ী হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে মানুষ। আর এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণাই হলো আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ভয় ও ডরহীনতার উদ্ধে উঠে সার্বজনিন কল্যাণের তরে কাজ করে যাচ্ছেন এবং সফলও হচ্ছেন।
ঔষধ প্রশাসন এবং গভেষক ও বিশ্লেষকগণ বর্তমানে রোগ জিবানুর পৌরানীক চিকিৎসার কাছে কি মাথা নত করে আবার ফিরে যাচ্ছে মানব সভ্যতা? তা আমার প্রশ্ন কিন্তু এই প্রশ্নের যথেষ্ট ব্যাখ্যা ও উপযুক্ত জবাব এখন এই করোনা-ই কিন্তু দিয়ে যাচ্ছে। করোনায় ঔষধের ভালবাসা এখনও প্রকাশিত হয়নি এবং ঔষধের উপর মানুষের আস্থা স্থাপনের কোন লক্ষণও দেখা যায়নি। তবে এযাবৎ পর্যন্ত যারা আক্রান্ত হয়েছেন এবং সুস্থ্য হয়েছেন তাদের উপলব্ধি এবং সুস্থ্যতার মানদন্ডের আলোকেই বলা যায় পৌরানিক রিএকশন বিহীন সৃষ্টিকর্তা প্রদত্ত ব্যবস্থায় আবার ফিরে যাওয়ার উপক্রম মাত্র। গাছ গাছালির সংমিশ্রনে তৈরী ঔষধই একমাত্র করোনা থেকে বেঁচে থাকার অবলম্বনে পরিণত হয়েছে। আর যারা প্রকৃতির উপর নির্ভর করে গাছ-গাছালির সংমিশ্রণে ওষধ সেবন করে যাচ্ছেন তারা ঠিকই সুস্থ্য রয়েছেন এবং অসুস্থ্যরা সুস্থ্য হয়েছেন। তাই পৌরানিক ঐ ইউনানী ও আযূরবেদীক বা হারবাল যে নামেই ডাকিনা কেন সেই ঔষধই এখন বাংলার মানুষের এমনকি বিশ্ববিবেকের মানদন্ডে একমাত্র অবলম্বন হিসেবে বিবেচিত। তবে মানুষের তৈরী রিএকশন যুক্ত ঔষধের উপকারীতা এবং অপকারীতার বাহাদুরীর বাহাছ এখন অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু কোন কাজেই মানুষের জীবন রক্ষা করতে পারেনি। তাই একটি কথা মনে পড়ে আজ যা আলেকজান্ডার গ্রেট তার শেষ ইচ্ছায় বলেছিলেন। ১।“তার মৃতদেহ বহন করে কবরে নিয়ে যাবে ডাক্তারদ্বয় এবং মাটিতেও শুয়াবেন তারা।” তিনি কারণ হিসেবে ব্যক্ষা করেছেন যে, ডাক্তারদের কোন ক্ষমতা নেই জীবন রক্ষার কাজে তাই ডাক্তার-রা মৃতদেহটি বহন করে কবরে নিয়ে যাচ্ছেন। জীবন রক্ষা, দেয়া-নেয়ার একমাত্র মালিক আল্লাহ। ২।“তিনি বলেছেন কবরে লাশ নেয়ার সময় যেন রাস্তায় তার অর্জিত সোনা-দানা ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেয়া হয়”। এখানেও কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন যে, সমস্ত কিছুই জীবদ্দশাই অজীত করেছেন কিন্তু কোন কিছুই তার কাজে আসেনি। তাই ঐসকল জিনি এইভাবেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকবে। ৩। “তৃতীয় ইচ্ছেটিও ছিল বুঝার মতন- মৃত দেহটি যখন কবরস্থানে নেয়া হবে তখন যেন তার দুই হাত বাধন থেকে খুলে দিয়ে নেয়া হয়”। এখানেও তিনি বুঝাতে চেয়েছেন যে, তিনি জন্মেছিলেন খালি হাতে; এখন মৃত্যুকালেও তিনি খালি হাতেই ফিরে যাচ্ছেন। কোন কিছুই নিতে পারেননি। তাই তার দুটি খালি হাত খুলে মানুষকে দেখিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের সমাজের এই সময় একটু ভাবা উচিত প্রত্যেকে প্রত্যেকের জীবন নিয়ে।
করোনা ভয়ে পালিয়ে বেড়ানো থেকে, সম্পদের পাহার স্তুপীকৃত করা থেকে এমনকি ক্ষমতার সর্বোচ্চ আসন থেকে অথবা সাধারণ জীবন-যাপন থেকে একটু ভাবুনতো আলেক জান্ডার গ্রেট তার শেষ ইচ্ছায় কি বলেছেন? কেন বলেছেন এবং কাদের জন্য বলেছেন? আর আমরা আমাদের বর্তমান, অতীত এবং ভবিষ্যতের জন্য কি করছি? ক্ষমা- ভালবাসা না অন্যকিছু! তাই আসুন এই উপযুক্ত সময় ক্ষমা এবং ভালবাসা প্রদর্শনে প্রতিযোগীতা দিয়ে এগিয়ে যায় এবং প্রত্যেকেই ১ম হতে চেষ্টা করি; যেন আল্লাহ আমাদেরকে পর্যাপ্ত পরিমানে ক্ষমা এবং ভালবাসা প্রদর্শন করেন। খোদার কালামের উদৃত্তি দিয়ে শেষ করতে চাই–“তোমরা তোমাদের প্রতিবেশীকে নিজের মত মহব্বত কর”। গরীব, বিধবা ও এতিমের হক বঞ্চিত করো না বা ঠকিয়ো না। এই সময়ে বা পৃথিবীর অস্থির সময়ে করোনায় ভিত না হয়ে বরং করোনাকে বিতারিত করতে খোদার শক্তি ও সাহস নিয়ে এগিয়ে যেতে প্রস্তুত হই। ক্ষমা ও ভালবাসায় নিজেদেরকে সাজিয়ে তুলি এবং রহমত বর্ষনের কাজে নিজেদের হাতকে, হৃদয়কে এবং মুখকে ব্যবহার করি। জয় হবে মানব সভ্যতার, ক্ষমা এবং ভালবাসার এই বিশ্বাস নিয়ে হাজির হব আগামি সম্পাদকীয়তে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.