প্রশান্তি ডেক্স ॥ মহামারি করোনা সন্দেহে শ্বাসকষ্ট নিয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যুর পরে হাসপাতালের প্রশাসনিক কার্যালয়ের কাছে পড়ে থাকলেও তাকে ছুঁয়ে দেখেনি প্রতিষ্ঠানটির চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।সদ্য কোভিড হাসপাতাল হিসেবে কাজ শুরু করা কলকাতা মেডিকেল কলেজের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার (১৪ মে) প্রতিষ্ঠানটির চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। জানা গেছে, বৃদ্ধ আদৌ করোনায় মারা গিয়েছেন কিনা, সেটা না-জেনেই সংক্রমণের আশঙ্কায় তাকে ছুঁয়ে দেখেনি কেউ। করোনা সংক্রমণের প্রথম দিকে এমন ঘটনায় দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বৃদ্ধের ছেলে বলেন, কলকাতা মেডিকেল যেহেতু কোভিড হাসপাতাল, তাই কেউ করোনায় আক্রান্ত হলেও তো পরিসেবা পাওয়ার কথা। সেখানে কেন সংক্রমণের আশঙ্কায় কেউ রোগীকে ছুঁয়ে দেখবেন না? এমন কেনো হচ্ছে। আনন্দবাজার পত্রিকা জানিয়েছেন, ডায়রিয়া এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা হওয়ায় এ দিন বৃদ্ধকে প্রথমে বেলেঘাটা আইডি-তে নিয়ে যান ছেলে। সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয় কলকাতা মেডিকেলে। ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টা দিকে বৃদ্ধকে নিয়ে প্রথমে সুপার স্পেশ্যালিটি ব্লকের (এসএসবি) ফিভার ক্লিনিকে যান ছেলে। সেখান থেকে রোগীকে জরুরি বিভাগে ভতির টিকিট করার জন্য বলা হয়। সেই পর্ব মিটিয়ে ‘সিভিয়র অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস’ (সারি) থাকা রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট গ্রিন বিল্ডিংয়ে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যান বৃদ্ধ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এসএসবি ব্লক থেকে জরুরি বিভাগে বৃদ্ধকে কোলে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন ছেলে। আবার জরুরি বিভাগ থেকে গ্রিন বিল্ডিংয়ের পথেও ওই ভাবে যাচ্ছিলেন। গ্রিন বিল্ডিংয়ে যাওয়ার পথে প্রশাসনিক কার্যালয় এবং ইডেন বিল্ডিংয়ের মাঝের রাস্তায় বৃদ্ধকে নামিয়ে ছেলে যখন জিরোচ্ছিলেন, সেই সময়েই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। পরে ইডেন বিল্ডিং লাগোয়া ফুটপাতে প্রায় ঘণ্টাখানেক পড়ে ছিল বৃদ্ধের দেহ। হাসপাতালের একাধিক কর্মী এলেও কেউই মরদেহের কাছে যাওয়ার সাহস করেননি। তাদের অভিযোগ, মৃতদেহ প্যাকিং করার লোক পাওয়া যাচ্ছে না। চিকিৎসাধীন রোগীদের খাবার দেওয়া, তাদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে পরিজনেদের অবহিত করা, এ সব প্রশ্নে পরিজনেদের অভিযোগের তালিকা দীর্ঘতর হচ্ছে। ইন্ডিয়ান পাবলিক হেল্থ অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য শাখার সম্পাদক ও চিকিৎসক সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, করোনা-ভীতি কাটাতে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের বার বার প্রশিক্ষণ জরুরি। আমরা একে বলি ট্রেনিং অ্যান্ড রিট্রেনিং। এম আর বাঙুরেও এই সমস্যা ছিল। প্রশিক্ষণে জোর না-দিলে সমস্যা মিটবে না। ওই মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ তথা সুপার ইন্দ্রনীল বিশ্বাস বলেন, রোগীর চাপে মুহূর্তে সব শয্যা ভর্তি হয়ে যাচ্ছে। কোভিড হাসপাতালের ভূমিকায় অভিজ্ঞতা নতুন। তাই পরিসেবা স্বাভাবিক হতে একটু সময় লাগছে। সূত্র: আনন্দবাজার।
Share on Facebook
Follow on Facebook
Add to Google+
Connect on Linked in
Subscribe by Email
Print This Post