৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে ডাক্তারের কোয়ার্টার থেকে যুবতীকে উদ্ধার

প্রশান্তি ডেক্স ॥ দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন এক যুবতী (৩০)। গত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় দিনাজপুর কোতোয়ালি থানায় নিজে বাদী হয়ে তিনি এ মামলা করেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দিনাজপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (তদন্ত) বজলুর রশিদ। অভিযুক্ত চিকিৎসকের নাম ডা. নরদেব রায়। তিনি দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এ্যানেসথেসিস্ট চিকিৎসক। তিনি পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার প্রেমবাজার এলাকার মনোরঞ্জন রায়ের ছেলে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, দিনাজপুরের বিরল উপজেলার কাশিডাঙ্গা এলাকার ওই যুবতী (৩০) দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা অবস্থায় দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নরদেব রায়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। দীর্ঘ দুই বছরে প্রেমের সম্পকের কারণে ওই চিকিৎসক একাধিকবার বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে হাসপাতালের আবাসিক কোয়ার্টারে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। ওই যুবতী এজাহারে উল্লেখ করেছেন, বিয়ের করার কথা বললে আজকাল করতে করতে কালক্ষেপণ করতে থাকেন ডাক্তার নরদেব। সর্বশেষ গত রোববার (১০ মে) ওই যুবতীকে ডা. নরদেব রায় মোবাইল ফোনে কল করে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজের আবাসিক এলাকার একটি কোয়ার্টারের ৪র্থ তলায় আসতে বলে। সরকারি কোয়ার্টারে দুপুর ২টার সময় তিনি ডা. নরদেব রায়ের কাছে যান। সেখানে গিয়ে কিছুটা সময় কাটানোর পর ডা. নরদেব রায়কে বিয়ের কথা বললে তিনি বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে বিয়ে করতে অনিহা প্রকাশ করেন। এক পর্যায়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে কোয়ার্টারের রুম থেকে তাকে বের করে দিতে চাইলে তিনি আর বের হননি। পরে ডা. নরদেব রায় তাকে কিলঘুষি মেরে কোয়ার্টার থেকে বের করে দেয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় ওই যুবতী ঘর থেকে বের হতে না চাইলে তিনি নিজেই ঘরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান। ওইদিন (গত রোববার) রাত ১২টার দিকে কোনো উপায় না পেয়ে তিনি ৯৯৯ কল করে পুলিশের সহযোগিতা চায়। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে রাতেই তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ধর্ষণের বিষয়টি জানার জন্য ডা. নরদেব রায়কে ফোন করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। ওই চিকিৎসকের বড় ভাই পঞ্জগড় মহিলা কলেজের প্রভাষক জয়দেব বর্মন বলেন, এটা একটা সাজানো ফাঁদ। আমার ভাই একটা চক্রান্তের মধ্যে পড়েছে। ধর্ষণের বিষয়টি ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। ওই মেয়ের সঙ্গে আমার ভাইয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। এ বিষয়ে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (তদন্ত) বজলুর রশিদ জানান, একজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা হয়েছে। বর্তমানে তিনি পলাতক আছেন। মেয়েটিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জানতে চাইলে দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. নির্মল চন্দ্র দাস বলেন, মামলার বিষয়টি জেনেছি। তবে পুলিশ অথবা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের কাছে লিখিতভাবে কিছু জানতে চায় তাহলে আমরা জানাব।

Leave a Reply

Your email address will not be published.