‘লিবিয়ায় আহত ১১ বাংলাদেশি হাসপাতালে, তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক’

প্রশান্তি আন্তর্জাতিক ডেক্স॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, লিবিয়ার ঘটনায় আহত ১১ বাংলাদেশিকে দেশটির রাজধানী ত্রিপোলীর হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গত শুক্রবার (২৯ মে) দুুপুরে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন

ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, মানব পাচারকারীদের ঠেকানো না গেলে সলিল সমাধি কিংবা এমন মৃত্যুর মিছিল ঠেকানো যাবে না

পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, অনেক আগেই মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হলেও তা সঠিক উপায়ে কার্যকর হয়নি। কিছুদিন বন্ধ থাকলেও আবার শুরু হয়েছে।

আর তার কারণেই এবার এক সঙ্গে ২৬ প্রান গেলো বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, আহত ১১ জনের মধ্যে ৬ জন ভালোর দিকে আর বাকি ৫ জনের তিনজনের অবস্থা খুবই নাজুক। তাদের ত্রিপলির একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দিচ্ছে বাংলাদেশ দূতাবাস।

লিবিয়াতে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সরকার না থাকায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ ও সহযোগিতা পাওয়া কঠিন হচ্ছে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি।

এর আগে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, লিবিয়ায় ২৬ বাংলাদেশিকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া ১১ জন হাসপাতালে রয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন সুস্থ রয়েছেন। আহতদের খোঁজ খবর নিচ্ছি। আমাদের একজন বাংলাদেশি জানিয়েছেন পাচারকারীরা ত্রিপোলী থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে তাদের হত্যা করেছে।

প্রসঙ্গত,গত বৃহস্পতিবার (২৮ মে) রাত নয়টার দিকে লিবিয়ার মিজদা শহরে ২৬ বাংলাদেশিসহ মোট ৩০ জনকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে। হত্যার শিকার বাকিরা আফ্রিকান।

এদিকে, লিবিয়ায় বাংলাদেশি দূতাবাসের পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, লিবিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর মিজদাহ-তে কমপক্ষে ২৬ জন বাংলাদেশিকে লিবিয়ান মিলিশিয়া কর্তৃক গুলি করে হত্যার তথ্য পাওয়া গেছে। তাৎক্ষণিকভাবে দূতাবাস থেকে অনুসন্ধানে জানা যায়, লিবিয়ার মিলিশিয়া বাহিনী বাংলাদেশিদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালালে ২৬ জন বাংলাদেশি নিহত হন। এরমধ্যে প্রাণে বেঁচে যাওয়া এক বাংলাদেশির সাথে টেলিফোনে যোগাযোগে সক্ষম হয় দূতাবাস।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তিনি কোনো প্রকারে প্রাণে বেঁচে বর্তমানে একজন হৃদয়বান লিবিয়ানের আশ্রয়ে আত্মগোপন করে আছেন। তিনি দূতাবাসকে জানান যে, ১৫ দিন আগে বেনগাজী থেকে মরুভূমি পাড়ি দিয়ে কাজের সন্ধানে মানবপাচারকারীরা তাদেরকে লিবিয়ার ত্রিপোলী শহরে নিয়ে আসার পথে তিনিসহ মোট ৩৮ জন বাংলাদেশি মিজদাহ শহরে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশে দুষ্কৃতিকারীদের হাতে জিম্মি হন।

জিম্মি অবস্থায় তাদেরকে অত্যাচার, নির্যাতন করার এক পর্যায়ে অপহৃত ব্যক্তিরা মূল অপহরণকারী লিবিয়ান ব্যক্তিকে হত্যা করে এবং এর জেরে অন্যান্য দুষ্কৃতিকারীরা আকস্মিকভাবে তাদের উপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। এতে আনুমানিক ২৬ জন বাংলাদেশি নিহত হয়। যাদের মৃতদেহ মিজদাহ হাসপাতালে সংরক্ষিত রয়েছে। অবশিষ্ট বাংলাদেশিরা হাতে-পায়ে, বুকে-পিঠে গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

লিবিয়ায় নিহত ২৬ জনের লাশ দেশটির রাজধানীর একটি হাসপাতালে সংরক্ষিত রাখা হয়েছে বলে জানায় বাংলাদেশ দূতাবাস।

Leave a Reply

Your email address will not be published.