ভজন শংকর আচার্য্য, কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি ॥কসবা উপজেলার মেহারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের পর এবার দরিদ্রদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের তালিকায় স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে উপজেলার বাদৈর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু জামাল খানের বিরুদ্ধে। নিজের পরিবারের লোকজনসহ প্রবাসী ও বিত্তবানদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। এ সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট গত ৪ জুন লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী।অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সারা দেশে ৫০ লাখ দরিদ্র ও অসহায় পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার হিসেবে আড়াই হাজার টাকা করে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। এই কর্মসূচীর আওতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ৯টি উপজেলায় ৭৫ হাজার দরিদ্র ও অসহায় পরিবারের তালিকা প্রণয়ন করা হয়। তার মধ্যে কসবা উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৭ হাজার ১৩৭ জনের তালিকা তৈরি করা হয়। উপজেলার বাদৈর ইউনিয়নে ৪০২ জনের তালিকা তৈরি করা হলেও এই তালিকায় চেয়ারম্যান
ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজ স্বজনসহ এলাকার প্রবাসী ও বিত্তবানদের নাম অন্তর্ভুক্ত করে জমা দেয়। তালিকায় ৭জন প্রবাসীর নাম ও ৮নং ওয়ার্ডের এক পরিবারের স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চেয়ারম্যানের বিত্তবান ভাগিনা আশিকুর ও তার স্ত্রী শিরিন আক্তারের নামও রয়েছে দরিদ্রদের তালিকায়। এমনকি বর্তমান মেম্বার রতন মিয়ার স্ত্রী খালেদা আকতারের নামও বাদ পড়েনি দরিদ্রদের তালিকা থেকে। এতে করে বাদ পড়ে প্রকৃত হতদরিদ্র ও করোনা আতংকে অসহায় কর্মহীন অধিকাংশ পরিবার। এ ঘটনায় এলাকার দরিদ্র অসহায় মানুষসহ সচেতন মহলে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। গত ৪ জুন এ সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলমের নিকট অভিযোগ জমা দেয় এলাকাবাসী। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাদৈর ইউপি চেয়ারম্যান আবু জামাল খান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহারের তালিকা তিনি তৈরি করেননি। ইউপি সদস্য ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ তৈরি করেছেন। এই তালিকায় তার কোনো স্বজনের নাম নেই এবং তালিকায় কোন বিত্তবান বা প্রবাসীর নামও নেই। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম জানান, বাদৈর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু জামাল খানের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার বাবদ দরিদ্রদের তালিকা তৈরিতে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য ১০জুন বুধবার উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তলব করা হয়েছে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।