করোনা কালীন সময়ে করোনা মোকাবেলায় নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে, করোনাকে মোকাবেলা করার মতো কোন আবিস্কার বা পদ্ধতি এখনোও অনুপস্থিত। তবে সামাজিক দুরুত্বসহ স্বাস্থ্যবিধী মেনে নিয়ে মনের খোরাক সান্তনাকে পাওয়া ছারা আর কোনকিছু আছে বলে আমি মনে করি না। কারণ বিশ্বের কোন পদ্ধতিই যথার্থ যে নয় তা প্রমানিত হয়েছে। তবে মানুষের নিত্যপ্রয়োজনে নেয়া সরকারের পদক্ষেপগুলো কাজে লেগেছে। মানুষ দুর্যোগ মোকাবিলায় উপকৃত হয়েছে। আমাদের সমাজে, রাষ্ট্রে এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেই এই উপকারভোগীর সংখ্যা পর্যাপ্ত। তবে বাংলাদেশেও এর ব্যতিক্রম নয় এমনকি এই উপকারভোগীদের সঙ্গে রাঘব বোয়ালের সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। তবে মনে হচ্চে ঐ রাঘব বোয়ালরা মৃত্যৃভয়কে জয় করেছে অথবা করোনার সঙ্গে আপষ করে হিতাহিত জ্ঞানহীন বা কান্ডজ্ঞানহীন কাজ করেই চলেছে।
ভেবেছিলাম করোনায় মানুষের হিতাহীত জ্ঞান ফিরে আসবে বা মানুষ বেহুশ থেকে চেতনা ফিরে পেয়ে হুশ হবে এবং সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য লাভ করবে বা করার চেষ্টায় লিপ্ত থাকবে। কিন্তু এখনও তার স্বাক্ষর চোখে পড়ে নি। মানুষ যে ধর্মেরই হউক না কেন স্ব স্ব ধর্মের অনুসরণ করে সৃষ্টিকর্তাকে পাওয়া যায় কারণ সৃষ্টিকর্তা সকলেরই এবং তিনি কোন ধর্মে আবদ্ধ নন। তাঁর সৃষ্টির জন্য সকল সময় তিনি কাজ করে যাচ্ছেন এবং সৃষ্টিকে কল্যাণের তরে পৌছে দিতে কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত। মানুষ সৃষ্টিকর্তার প্রতিমূর্তীতে সৃষ্টি হয়েছে এবং সৃষ্টিকর্তা মানুষকে ব্যবহার করেই সৃষ্টির কল্যাণ সাধন করে থাকেন। বর্তমানে মানুষ নিজের চেষ্টায় ও জাগতিক প্রলোভনে পড়ে সৃষ্টিকর্তার প্রতিমুর্তীকে ভূলুন্ঠিত করে শয়তানের প্রতিমূর্তীতে বলীয়ান হয়ে করোনার ন্যায় কাজ করে যাচ্ছে- যা কখনো কখনো দৃশ্যমান হচ্ছে।
খুন, ধর্ষণ, গুম, অন্যের সম্পদ আত্মস্বাদ, সরকারী অনুদান আত্মসাৎ, ত্রান আত্মসাৎ, চুরী, ডাকাতী, জুলুম, মিথ্যা রাহাজানিসহ নানাহবিধ কর্মকান্ডই আজ আমাদের এই কঠিন সময়ের জন্য দায়ী। তারপরও আমাদের কোন হুশ নেই- বেহুশ হয়ে শয়তানের অদৃশ্য শক্তির মহড়ায় মেতে আছি। তবে যারা যারা এই ঘৃণ্যকর্মের সঙ্গে লিপ্ত এখনো রয়েছি তাদের জন্য বলছি দয়া করে ফিরে আসুন সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য লাভে নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখুন, তৌবা করে স্ব স্ব ধর্মের অমীয় বানীগুলো নিজের জীবনে পালন করার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করুন। অনেকেই বলে থাকেন পেটের দায়ে-ই এই ঘৃণ্য কর্মকরি। তাই পেটের দায়ে এই কথাটির যথার্থ ব্যবহার হচ্ছে না বলে প্রমানিত হয়েছে। একটি কথা আছে যে, আল্লাভক্তদের কাছে ”স্বভাবের কাছে অভাব পরাজিত হয়েছে”। আর যারা আল্লাহভক্ত নয় তাদের অভাবের কাছে স্বভাবের পরাজয় হয়েছে। তাই এখনও সুযোগ আছে ফিরে আসুন। পৃথিবীর এই ক্লান্তিলগ্নে বা শেষ সময়ে একমাত্র অবলম্বন হলো সৃষ্টিকর্তা এবং তাঁর সান্নিধ্য। তাই চিরস্থায়ী বন্দোবস্তে মনোযোগ দিয়ে ক্ষনস্থায়ী জীবনের ইতিবাচক ইতি টানতে চেষ্টা করুন।
লকডাউনে কার উপকার হচ্ছে একটু ভেবে দেখবেন? কারন সর্বোপরি ক্ষতিই হচ্ছে বলে বাস্তবে প্রতিয়মান। আমরা কেন এই অদৃশ্য করোনাকে ভয় পাচ্ছি? পৃথিবীতো অল্প দিনের এবং এই অল্পদিনেরও একটি শুরু এবং শেষ আছে- যার একটি নূন্যতম এবং সর্বোচ্চ মানদন্ড রয়েছে। তাই কেউ কি বলতে পারেন যে, লুকিয়ে বা পালিয়ে আমরা আমাদের জীবন রক্ষা করতে পারবো বা পেরেছি। আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি— বলতে পারবো না এবং অতিতে কেউ পারে নি এমনকি ভবিষ্যতেও কেউ পারবে না। তবে কেন এত ভয়? ্িকসের ভয়? সৃষ্টিকর্তাতো আমাদের ভালবাসেন এবং আমরাও তাকে ভালবাসি। তাই ভালবাসায় নেই কোন ভয়। আরেকটি বিষয় হলো যারা নিজেদেরকে গুটিয়ে রেখেছেন এবং লুকিয়ে আছেন তারা কি নিরাপদ? এমনও দেখা গেছে ঐ লোকানো ও নিরাপদে থাকা মানুষগুলোই সবার আগে করোনার ভয়ে বিদায় নিয়েছেন। তাই ভয় না পেয়ে সকলে মিলে করোনাকে বিতারনে সাহসী ভুমিকা রাখি। ভয়-ডরহীন মানুষদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আগামীর কল্যাণ ও সমৃদ্ধির জন্য একযোগে কাজ করি।
স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদরাসা, কল-কারখানা, অফিস-আদালত সবই খুলে দিয়ে স্বাধীন জীবন যাপন করতে সকল বাধা বিপত্তির উর্ধে উঠে একহয়ে কাজ করি এবং দেশের অগ্রগতিকে তরান্বিত করে নিজের উন্নয়ন ও উন্নতি সাধিত করি। লক ডাউন শব্দটি ব্যবহার করে বোকার স্বর্গে আর নয়। বর্তমানের নেয়া পদক্ষেপগুলো এলাকা বা জুন নয় বরং আক্রান্ত বাড়িভিত্তিক কোন ব্যবস্থা নেয়ার প্রয়োজন হয়ে থাকলে তাই করুন। অথবা অবাধে বিচরণের সুযোগ করে দিয়ে জনগনের নিরাপত্তা জনগণের হাতে ছেড়ে দিন। সরকারী- বেসরকারী হাসপাতালগুলোতে রোগী সেবার নিশ্চয়তাটুকু সচল রাখুন। তাহলেই সমস্যা দুর হবে এবং মানুষ পাবে দিশা ও পৃথিবী দেখবে আশা। আসুন আমরা কথায় নয় কাজে নেমে পড়ি। কথা এবং কাজের যোগসুত্র সমন্বয়ের সঙ্গে গেঁথে তুলি। হিংসা বিবেদ ভুলে, লোভ লালসার উদ্ধে উঠে জীবন সায়ান্নে আগামীর জন্য কাজ করি।
নতুন সমাজ, স্বপ্ন, উন্নয়ন এবং অগ্রগতির জন্য প্রস্তুত হয়। হারানো সংস্কৃতি, কৃষ্টি, কালচার, মূল্যবোধকে পুনস্থাপনের কাজে নেমে পড়ি। এখনই সময় নতুবা সামনে আরো বড় কোন বিপর্যয় আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। মানবতা এবং মানবিকতা ও সাম্যের দিকনির্দেশনা পারিবারিক ঐতিহ্যসহ নানান দিকে মনোনিবেশ করি। পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধনকে পুনরুদ্ধার করে সামনে এগিয়ে চলি। মোট কথা গত তিন-চার মাসের অদৃশ্য শক্তির অদৃশ্য থাবার ভয়ে যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নেয়ার সকল ও সফল পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজে নেমে পড়ি। ভয়হীন কর্মপরিবেশ ফিরিয়ে নিয়ে আসি এবং মানুষে মানুষে ভিবেদ ও সামাজিক দুরুত্ব গুচিয়ে পুর্বের ন্যায় সকল ইতিবাচক কাজগুলো সচল করি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাহসী পদক্ষেপে সড়িক হই এবং সরকার ও প্রশাসনের যোগসূত্রে নিজেকে সম্পৃক্ত করি যাতে নতুন কোন অদৃশ্য শক্তির করাল থাবা প্রতিহত করতে পারি।
এখনও সময় আছে চিহ্নিত করার- কারা কারা দেশের উন্নয়নের অন্তরায়, কোন কোন ব্যবসায়ীরা, কোন কোন আইন এমনকি কোন কোন পন্য চিহ্নিত করে সঠিক পদক্ষেপে এগিয়ে যাই। সময় এসেছে পৃথিবীকে শান্তি ও স্থিতিশীলতায়, নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তায় স্থীতিশীল করার। আর এই কাজে আসুন-না আমরাই শুরুটা করে শেষটায় সকলকে যুক্ত করি। পৃথীবি খুজছেন একজন অভিবাভক, একজন নির্দেশক, একজন পথদর্শক, একজন সেবক। আসুন-না আমরাই হয় ঐ শুন্যস্থানের অধিকারী। আর নয় সমালোচনা, আর নয় মজা বা ফান, আর নয় ঘৃণা, আর নয় বিদ্রুপ ও ঠাট্টা এখন সময় ভালবাসার, ক্ষমার এবং ঐক্যের, সাম্যের ও ভাতৃত্বের, নি:স্বর্ত ভালবাসার বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার। সর্বোপরি বলতে চাই খোদার কালাম যা সমস্ত নবীদের কিতাব দাড়িয়ে আছে-“তোমরা তোমাদের প্রতিবেশীকে নিজের মত মহব্বত করো; তোমাদের সমস্ত মন, সমস্ত প্রাণদিয়ে আমাকে ভালবাস।” হ্যা আমরা তাই করার অঙ্গিকারে আবদ্ধ হই এবং নিজে করে অন্যকে করতে উদ্ধুদ্দ করি। খোদার কালামের আরেকটি আয়াত উদ্ধৃতি করে শেষ করতে চাই “তোমরা যেরকম ব্যবহার পেতে আশা করো তুমি ঠিক সেইরকম ব্যবহার আগে করো”