লকডাউন এর যথার্থতা

লকডাউন হচ্ছে ও হবে এবং হয়েছেও বটে কিন্তু এর যথার্থতা কতটুকু তার বিছার বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। আপদকালের বিপদ কাটাতে যে সকল পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তার সবই ভাল কিন্তু এই পদক্ষেপগুলো যথোপযুক্তভাবে ব্যবহার হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখার বিষয়টি অনুপস্থিত রয়েছে বলে দৃশ্যমান হচ্ছে। ধরা যাক একটি এলাকাকে লক ডাউন দেয়া হয়েছে এবং এই লক ডাউনে সবাই ঘরে আবদ্ধ থাকতে হবে। প্রয়োজনীয় যোগান স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে মিটানো হবে। কিন্তু সেই এলাকায় কতজন রোগী বা আক্রান্ত ব্যক্তি এমনকি কতজন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেছেন এইসকল হিসেবে নিকেশ জরুরী। লকডাউন শব্দটি নতুন কিন্ত এর ব্যাপ্তি বিশাল- এককথায় জেলখানায় বন্ধিদশার চেয়েছেও কঠিন।
লক ডাউন এর বিভিন্ন স্তরও দেখা যাচ্ছে, তবে স্তরে স্তরে সাজানো লকডাউন উপকারী এবং গ্রহণযোগ্যও বটে। যেমন রোগী এবং এলাকা ও বাড়ি এমনকি মৃত্যু এই সকল সংখ্যাধিক্যে লকডাউন এর বিভিন্ন রকম ফের হয়েছে এবং হবে। তবে সাধারণ জনগণের যেন কষ্ট লাঘব হয় এমনকি কর্মচাঞ্চল্যতা যেন অব্যাহত থাকে সেইদিকে দৃষ্টি দেয়া অতিব জরুরী। যেমন কোন এলাকায় মাত্র কয়েকজন্য রোগী এবং এরা সুস্থ্য এমনকি এদের কারো তেমন সিন্টম দেখা যায়নি; সেইক্ষেত্রে ঐ এলাকাকে লক ডাউন করা উচিত নয় বরং ঐ বাড়িটিকে বা বাড়িগুলিকেই লকডাউন দিলে যথেষ্ট। আর এতে করে জনগণ এর কষ্ট লাঘব হবে এমনকি কর্ম চাঞ্চল্যে কোন বিরুপ প্রভাব পড়বে না এমনকি সরকারেরও লকডাউনে করনীয় পালন করতে সহজ হবে।
দেখা গেলো একটি এলাকায় জনগণের তুলনায় অনেক আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এমনকি মৃত্যুর সংখ্যাও অধিক অথবা আক্রান্তের ধরনও জটিল। সেই ক্ষেত্রে ঐ পুরো এলাকাটিকে লক ডাউনের আওতায় আনা যেতে পারে। তবে লক ডাউনের আওতায় আনার আগে সকল হিসেব নিকেশ কষে সমস্ত দায়িত্ব নিয়েই লকডাউন করা উচিত। যেন ঐ এলাকার কোন মানুষ প্রয়োজনে এমনকি অপ্রয়োজনে বাহিরে এমনকি ভিতরেও প্রবেশ করতে বা যেতে না পারে। সকল কিছুই সরকার দ্বারা মনোনিত ব্যক্তিরাই করে যাবে। এতে করে লকডাউনের কার্যকারীতা ১০০ভাগ সফল হবে। কোথাও কোথাও দেখা যাচ্ছে লক ডাউন হচ্ছে কিন্তু লোকজন রীতিমত বের হয়ে আসছে / যাচ্ছে পাশাপাশি সাইকেল, হোন্ডাও হরহামেশা যাতায়ত করছে; তাহলে লক ডাউনের কি প্রয়োজন ছিল? এটা কি লোক দেখানো লকডাউন নাকি শুধু প্রাইভেটকার বা তিন বা চার চাকার গাড়ির জন্য এই লক ডাউন? একটু ভেবে দেখবেন এই ধরণের লাকডাউন কারা যায়গাগুলোকে। তবে কোথাও কোথাও মাত্র ৩/৪জন রোগী চিহ্নিত হয়েছে কিন্তু ঐ পাড়া বা মহল্লাকে লকডাউনে আবদ্ধ করে সকলকেই কষ্ট দিচ্ছে। এই বিষয়টি ভেবে দেখবেন কি?
তাই এবারের লক ডাউন নিয়ে কাজ করতে গেলে ঐসকল দিকগুলো বিবেচনায় নেয়া দরকার। অপ্রয়োজনে লক ডাউন দিয়ে মানুষের কষ্ট বাড়ানোর কোন প্রয়োজনীয়তা নেই বলে আমি মনে করি। শুধু কি তাই বরং উন্নয়ন গতি এবং অর্থনীতির চাকার সচলতার জন্য অপ্রয়োজনীয় লকডাউন প্রত্যাহার আবশ্যক। সকল কিছু বিবেচনা করে বা পর্যালোচনা করে দেখা যায় আমাদের দেশে বা জনসংখ্যার দৃশ্যমান আক্রমন এবং এর ক্ষতিকর প্রভাব অন্যান্য রোগগুলোরই মতই। তাই এই করোনা নিয়ে আতঙ্কিত বা ভীত হওয়ার কোন কারণ নেই। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় বাংলাদেশের মানুষ যথেষ্ট শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে এবং ছিল ও ভবিষ্যতে থাকবে। তাই করোনা নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে দেশোন্নয়নের গতিময়তায় বাধাগ্রস্ত করা উচিত হবে না। বরং আতংক দূর করে সকলের জন্য স্বাস্থ্য সেবার পুর্বাবস্থা ফিরিয়ে আনতে কাজ করতে হবে এবং সকলের জন্য স্বাস্থ্য সেবা উন্মক্ত করে সকল হাসপাতালে দৃশ্যমান ব্যবস্থা করে করোনা বাধাকে কাটিয়ে উঠতে পারলেই জাতি হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে নের্তৃত্ব নিজেদের কবজায় আনতে পারব। আসুন আমরা করোনাপূর্ভ পরিস্থিতিতে ফিরে যায় এবং করোনা সরঞ্জামে হাসপাতালগুলোকা সাজাই আর নিবিঘেœ চিকিৎসা পেতে সাহায্য করি। তাহলেই আমাদের মুক্তি এবং জনতার শক্তি একসুত্রে গেঁথে উঠে বিশ্বকে পথ দেখাতে পারবে।
এবারে আসল কথা বলতে চাই— আসুন করোনাকে দূর করে খোদার ইচ্ছাকে দৃশ্যমানতায় পরিপূর্ণতা দিই। গ্যারান্টি দিচ্ছি বাংলাদেশ করোনামুক্ত এবং এই দেশের মানুষ করোনায় আক্রান্ত হবে কিন্তু কোন প্রকার ক্ষতির সম্মুখিন হবে না যদি তারা সাহস রেখে সৃষ্টিকর্তার উপর ঈমান ও বিশ্বাস নিয়ে চলে। গ্যারান্টি দিচ্ছি এবং নিশ্চয়তা দিচ্ছি করোনা ভীতির কাজে পরিজিত না হয়ে জয় করি খোদার শক্তিতে, জ্ঞানে এবং তার দেয়া বাক্যের কার্যকারীতা দ্বারা। আসুন মোনাজাত করি এবং খোদার ক্ষমতায় এই করোনাকে দূর করি। মানুষের কথায় কান না দিয়ে খোদার কথায় কান, মন ও প্রাণ দিয়ে বিশ্বাস ও নির্ভরতা নিয়ে পথ চলি। বাংলাদেশ উন্নয়ন, অগ্রগতির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখি। সরকারের সমালোচনা নয় বরং যার যার অবস্থান থেকে সরকারকে সহায়তা করি এবং দেশের মানুষের মনের ভীতি দূর করে করোনামুক্ত বাংলাদেশ তথা বিশ্বকে সৃষ্টির অভয়ারণ্য হিসেবে গড়ে তুলি। জয় হউক সৃষ্টিকর্তার অমীয় বানীর এবং নিশ্চিত হউক আমাদের আগামীর গন্তব্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published.