করোনায়ও কি শিক্ষা হয়নি

এই করোনা কালের যাত্রায় বৈশ্বিক যে নেতিবাচতকতা প্রত্যক্ষ করছি তা খুবই লজ্জ্বার ও ঘৃণার। মানুষ ও বিশ্ব যেখানে ভয়ার্ত ও একঘরে হয়ে জীবন বাঁচাতে মরিয়া সেখানেও দৃশ্যমান দ্বন্ধ এবং স্বার্থের লোভাতুর চোখ ও হাতগুলির থাবা অব্যাহত রয়েছে। কোথায় অর্থনৈতিক আবার কোথায় রাজনৈতিক, কেথাও কোথাও আবার জাগতিক, শ্বারিরীক ও মাংসিক চাহিদারও দৃশ্যমান। এই সকল দেখে সহজেই বলা যায় যে, করোনা কি আমাদেরকে সামান্যটুকু নৈতিক এবং ধর্মীয় শিক্ষায় জাগ্রত করতে পারেনি? হ্যা দৃশ্যমান বাস্তবাতায় মনে হচ্ছে তাই। তবে এর থেকে বেরিয়ে আসার উপায় এখই বের করতে হবে নতুবা এর থাবা কঠোর ও কঠিন হওয়ার সুযোগ রয়েছে।
উপমহাদেশের শক্তিধর দেশগুলোর শক্তির মহড়া না হয় স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল এখন করোনায় কেন? এমতিতেই করোনায় কাবু বিশ্ব এবং এর অধিবাসিরা —তারপরও বিফল শক্তির মহড়ার প্রয়োজন আছে? পারলে ঐ শক্তিগুলো একত্রিত করে করোনার বিরুদ্ধে সোচ্ছার ও দৃশ্যমান অভিযান পরিচালনা করুন নতুবা বোকার বোকামী আর করবেন না। মানুষ এখন প্রত্যক্ষ করেছে এবং দেখেছে আপনাদের অর্থ বিত্ত এবং অস্রসজ্জ্জার ক্ষমতা; যেখানে একটি অদৃশ্য এবং ক্ষুদ্র ভাইরাসে পরাজিত সেইখানে দৃশ্যমান এবং নিয়ন্ত্রণ ও সৃষ্টির সেরাজীব আশরাফুল মাখলুকাত যাদের সঙ্গে সৃষ্টির সৃষ্টিকর্তা খোদা তায়ালার সম্পর্ক রয়েছে সেই মানুষদের জীবন মান এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলা নয়। বরং এই মানবকুলের শান্তি ও নিশ্চয়তা এবং নিরাপত্তা জন্য একযোগে একমনে কাজে আগ্রহী হউন। নতুবা ঐসকল যুদ্ধ সাজ সরঞ্জাম এবং অর্থ বিত্ত কোন কাজে আসবে না মহান খোদার শিক্ষা ও দিক্ষায় মনোনিবেশ করুন। করোনাকে বিতারিত করার একমাত্র হাতিয়ার খোদার সান্নিধ্য এবং ক্ষমা ও ভালবাসা গ্রহণ করা আর সেই আশ্রয়ে থেকে খোদার চীরস্থায়ী রাজ্যের বাসীন্দা হওয়ার অভিপ্রায় বাস্তবায়ন করা।
চীন-ভারত থেকে শুরু করে সুদুর আমেরীকা পর্যন্ত যে নেতিবাচক বিষবাষ্প বিরাজমান রয়েছে তা দূর করতে হবে এবং এখন সময় ঐক্য ও স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তার নিশ্চয়তার জন্য একযোগে কাজ করতে হবে। তাই আর নয় বিভেদ, আর নয় লোভ, আর নয় উঁচু ও নিচু ভেদাভেদ বরং সকলেই সকলের পরিপূরক হয়ে এক ও অভিন্ন লক্ষে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। নতুবা আরো কোন বিপদ পৃথীবিকে ধ্বংস করে দেয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে সৃষ্টিকর্তার শেষ কাজটুকু সমাপ্ত করবেন। আর এই শেষ সমাপ্তির রেশ টানতে যা যা প্রয়োজন তাই–ই এখন দৃশ্যমান রয়েছে। বিশ্ববাসীকে এখন নতুন করে ভাবতে হবে এবং সাজাতে হবে নতুন এক অহিংস এবং সাম্যের সমান্তরাল পৃথিবী। যেখানে কোন ভেদাভেদ নেই, হিংসা বিবেদ নেই শুধু মানুষে মানুষে একে অন্যের পরিপূরক হয়ে পথচলা; মোট কথা পৃথিবী থেকে নেতিবাচকতা ও পাপটুকু সরিয়ে দেয়ার সময় এখনই। আর এর জন্য যা যা প্রয়োজন তাই করতে সৃষ্টিকর্তাকে আদেশ ও নির্দেশ দিয়ে সবাইকে জাগ্রত হতে আহবান জানাচ্ছে। তাই আর নয় ভোদাভেদ সকল ভেদাভেদের উদ্ধে উঠে হাতে হাত, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঐক্যের ভিত্তিতে সামনে এগিয়ে চলুন। বৈশ্বিক নেতা-নেত্রি এবং সাধারণ জনগনের সমন্বয় আরো সুবিস্তৃত ও সুবিশাল করে এর সুফল ও সফলতা ভোগ করুন।
সংসদে পাস হওয়া বাজেট নিয়ে নানান মত ও পথ এবং বক্তব্য পরিলক্ষিত হচ্ছে তা এইসময়ে কাম্য নয় বরং বাজেট বাস্তবায়নে এক্যের কোন বিকল্প নেই। বাজেট নিয়ে সমালোচনা নয় বরং এর সফল বাস্তবায়নে সকলেই একযোগে যার যার অবস্থান থেকে কাজে নেমে পড়ুন। মানবতা ও ন্যায়পরায়নতাকে জাগ্রত করুন; বিবেক ও বোধকে সৃষ্টিকর্তার অভিপ্রায়ে সাজিয়ে তুলুন। মানুষের কল্যাণে কাজ করুন। সুযোগ যার যতটুকু রয়েছে ততটুকুর সর্বোচ্চ ব্যবহার করে সামনে এগিয়ে যান। অরাজকতা এবং অনৈতিকতা যা হয়েছে তার জন্য খোদার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন এবং নিজেদের স্ব স্ব কৃতকর্মের জন্য মাফ চেয়ে অন্যদের জন্য ইতিবাচক কিছু করুন। তাহলেই বিশ্বথেকে করোনার ছোবল এবং পাপ স্বভাবের সকল নেতিবাচকতা দূরীভুত হবে। আল্লাহ যাদেরকে সুযোগ দিয়েছেন এমনকি দায়িত্ব দিয়েছেন তাদের সকলকেই মিনতি করে করজোরে আহবান জানাই; আসুন আমরা খোদার সান্নিধ্যে বসবাস করি, খোদার পবিত্রতাই পবিত্র হই এবং খোদার সঙ্গে জীবন – যাপন করে খোদার ইচ্ছা পৃথিবীতে বাস্তবায়ীত করি। নতুন এবং সুন্দর এক পাপমুক্ত পৃথিবী ঘরি যেন আগামীর সকল কিছুই খোদায়ী রাজ্যের বাসিন্দাদের কল্যাণের তরে হয়। যারা সমালোচনা করছেন এবং নেতিবাচক দৃষ্টান্তের কাজে নিজেদেরকে জড়িয়েছেন তাদেরকে বলি ভাই এই করোনাযুগে এসে আর বিভেদ নয় বরং ঐক্যের যে কোন বিকল্প নেই তা আর বলে বোঝানোরও প্রয়োজন নেই। এমনিতেই করোনা মানুষকে ঐক্যের বেড়াজালে আবদ্ধ করে নতুন এক সভ্য সংস্কৃতির মাঝে দাঁড় করিয়েছেন। আপনি ফিরে আসুন এবং ঐক্যের সুদৃঢ় ভুমিকায় নিজেকে জড়িতে করে গর্বিত হউন। দল-মত ও পথের উদ্ধে উঠে এখন দেশ, জাতি ও মানব কল্যাণে নিয়োজিত হই। গলাবাজি ও চাপাবাজির দিন শেষ বরং এখন জীবন বাজি রেখে নিজেদেরকে মানব কল্যানে ব্যায় করে অন্তত বেহেস্তের নিশ্চয়তাটুকু লাভ করুন। অনেক দেখেছেন-অর্থ বিত্ত ও ক্ষমতা কোনটাই এখন আর কাজে লাগছে না বরং কাজে লাগছে একটাই আর সেটা হলো সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য ও ভালবাসা এবং ক্ষমা। তাই স্ব স্ব ধর্মের আমলে অমীয় ও অভিন্ন বানীগুলোকে একত্রিত করে নিজ জীবনে প্রয়োগ করে শেষ দিনের খোরকটুকু সঞ্চয় করে সম্বৃদ্ধ হউন।
যারা এখনও খুন, ঘোষ এবং ধর্ষণে জরিয়ে আছেন আর অর্থনৈতিক ও জাগতিক লোভকে আপন করে নিচ্ছেন তাদেরকে বলি ভাই আর কত এবং এইসব করে কি পার পাচ্ছেন? প্রকারান্তরে কোন না কোন সময় এই পৃথিবীতেই ধৃত হচ্ছেন এমনকি অর্জিত সকল অর্জনগুলি এক নিমিষেই ধুলায় মিশে যাচ্ছে? তাই ভাবুন এবং এই পথ থেকে ফিরে আসার সকল ব্যবস্থাই উন্মুক্ত এবং সৃষ্টিকর্তা আপনাকে ক্ষমা করার জন্য অধির অগ্রহে অপেক্ষা করছেন ও ডাকছেন। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে ফিরে আসুন এবং সৃষ্টিকর্তার বর্তমান ইচ্ছায় মনোনিবেশ করুন। যাতে করে আগামীর বিশ্ব হয় পাপমুক্ত এবং নিষ্কলুষ। বিনয়ের সঙ্গে বলছি দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রেও অন্যকে উক্তত্ব বা নেতিবাচক কাজে প্ররোচিত করবেন না। নিজের ক্ষমতা জাহিরে কাজ করবেন না কারন আপনি জানেন না আপনার সামনে কি অপেক্ষা করছে। তাই সংশোধন হয়ে সেবার কাজে নিজেকে পুরোপুরি মনোনিবেশ করুন।
পরিশোষে বলতে চাই সিটি কর্পোরেশনগুলো তাদের সেবার মান বৃদ্ধিকল্পে যা যা করনীয় তাই করুক। কিন্তু জনগণের উপর নতুন করে কোন অর্থনৈতিক চাপ বৃদ্ধি না করে। বরং পুর্বের ব্যবস্থান স্বচ্ছতা আনয়ন করে। এমনিতেই অনেক করের বোঝা বইয়ে যেতে সিটির বাসিন্দারা হিমশিম খাচ্ছে আর যদি নতুন করে করের বোঝা বা অর্থনৈতিক কোন বোঝা চাপানো হয় তাহলে হিতে বিপরিত হবে এবং জনবিমুখ কর্পোরেশনে পরিণত হতে বেশী সময় লাগবে না। তাই জনগণের দুর্ভোগ লাগবে সকল পদক্ষেপ নিতে হবে এই বিবেচনাবোধটুকু জাগ্রত রাখুন। কারো ব্যবসা বা চমকপ্রদ আইডিয়া প্রয়োগে কর্পোরেশন এবং এর দায়ীত্বপ্রাপ্তরা নিজেদের স্বচ্ছ ভাবমুর্তিকে জলাঞ্জলী দিবেন না। আপনাদের উপর সিটির বাসিন্দাদের অনেক আশা ও আকাঙ্খা তাই সেইগুলো পুরনে কাজ করুন এবং আমৃত্যু সেবার করার দায়িত্বটুকু নিতে প্রস্তুত হউন। করোনার শিক্ষায় শিক্ষীত হউন এবং এর সকল নেতিবাচকতাকে পরিহার করে ইতিবাচতকাকে গ্রহন করে সামনে এগিয়ে যান। করোনায় ভয়ের কোন কারন নেই বরং করোনাকে পৃথিবী থেকে বিতারিত করার সকল উপাদানে সজ্জ্বিত বাঙালী প্রস্তুত হয়ে বিশ্ববাসীকে সাহস যোগাতে কাজ করুন এবং বিশ্বকে নতুন করে ভুমিকায় উপনিত করুন। এই সুযোগ মহান খোদা আমাদেরকে দিয়েছেন এবং এখনই সময় তা বিশ্বকে দেয়ায় ও সম্মানের যোগ্য স্থানে আমাদেরকে দেশ ও জাতিকে অধিষ্ঠিত করার।

Leave a Reply

Your email address will not be published.